লিখেছেন মার্ক ট্রেইনার – ২৯ এপ্রিল ২০২০
শক্তিশালী গণতন্ত্র সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা উৎসাহিত করে- ফলে জনগণ তথ্য পায়, নানা মতের প্রতিফলন ঘটে, এবং নেতৃবৃন্দকে জবাবদিহিতার আওতায় রাখে।
আমাদের চারপাশে সংবাদের ছড়াছড়ি- ইন্টারনেট, টেলিভিশন, রেডিও ও সংবাদপত্র সর্বত্র- তাই সাংবাদিকরা যে কত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন সেটা ভুলে যাওয়া খুব সহজ।
যুক্তরাষ্ট্রে সংবাদ মাধ্যমকে অনেক সময় সরকারের চতুর্থ শাখা বলা হয়ে থাকে। যদিও বিধান অনুযায়ী সরকারের শাখা তিনটি যথা- নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগ- তবুও উক্ত শব্দবন্ধের মাধ্যমে সরকারী কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ এবং নেতৃবৃন্দকে দায়বদ্ধ রাখতে সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকার প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের অন্যতম প্রধান কাজ হলো তথ্য প্রদান, যার উদ্দেশ্য হলো জনসাধারণকে প্রায়শ জটিল সরকারী পদ্ধতিগুলো বুঝতে সহায়তা করা, এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত জনগণের ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে সে বিষয়ে সচেতন করা।
সংবাদ মাধ্যম জনগণকে ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের মতামত থেকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী প্রকাশ ও বোঝার সুযোগ করে দেয়। বিরোধী নেতৃবৃন্দের মতামত বিষয়ক সংবাদ এবং সরকারি কর্মকাণ্ড বিষয়ে সমালোচনাধর্মী সম্পাদকীয় প্রকাশের মাধ্যমে নানা মতের প্রতিফলন ঘটে। গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ নেতৃবৃন্দ হয়তো চাইবেন না যে তাঁদের নীতিমালা প্রকাশ্য সমালোচনার শিকার হোক, তবে তাঁরা সংবাদ মাধ্যমের সেই সমালোচনার অধিকার সমুন্নত রাখবেন।
পর্যবেক্ষক হিসাবে সংবাদ মাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এবং অনেক সময় দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে। স্পষ্টতই এর কারণ হলো, সংবাদ মাধ্যম সরকারের বাইরের অংশ। তাই দেশের নেতৃবৃন্দ যখন তাঁদের দেয়া নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হন তখন সংবাদ মাধ্যম সে বিষয়ে জনসাধারণকে অবগত রাখতে পারে।
সাংবাদিকরা যখন হুমকি, আক্রমণ, তথ্য-নিয়ন্ত্রণ (censor) বা কারাবন্দিত্বের শিকার হন তখন সেটা আসলে সেই সমাজের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি সরাসরি আক্রমণ।
শক্তিশালী গণতন্ত্র সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা উৎসাহিত করে। কোন সরকার যখন তাদের সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তখন আসলে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয় যেখানে সাংবাদিকরা নিজেরাই ভয়ে নিজেদের বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ বা সেন্সরে বাধ্য হন। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি উইলিয়াম ব্রেনান বলেন- জনগণের যেকোন বিষয়ে বিতর্ক হতে হবে নিঃশঙ্কোচ, তেজদীপ্ত ও উন্মুক্ত।”