ঢাকা, জুলাই ২৯, ২০২১ — আজ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সায়েদুল ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি সহায়তায় শুরু হওয়া ‘বাংলাদেশে বাল্য বিয়ে রোধে পদেক্ষপ’ শীর্ষক প্রচারাভিযানের উদ্বোধন করেছেন। এই প্রচারাভিযানের মাধ্যমে বাল্য বিয়ের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে পরিবারগুলোকে বাল্য বিয়ে বন্ধে উত্সাহিত করা হবে এবং প্রতিটি মেয়েশিশুকে তাদের স্বপ্নপূরণের আকাঙ্খা বাস্তবায়নে সহায়তা করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বাল্য বিয়ে বন্ধে সরকারের ১০-বছর মেয়াদী জাতীয় কর্ম-পরিকল্পনার (২০১৮-২০৩০) উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবায়ন এগিয়ে নিতে সহায়তা করা হবে।
বাংলাদেশ বাল্য বিয়ে কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, গবেষণায় দেখা যায় যে ১৬ বছর বয়সের আগে বিয়ে করা মেয়েদের সংখ্যা ২০০৭ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ৪৬ শতাংশ থেকে কমে ৩২ শতাংশ হয়েছে। একইসময়ে ১৮ বছর বয়সের (বিয়ে করার বৈধ বয়স) বিয়ে করা নারীদের সংখ্যা ৬৬ শতাংশ থেকে কমে ৫৯ শতাংশ হয়েছে। তবে, কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন এই সময়ে আয় কমে যাওয়া, বিশেষ করে নিম্ন-আয়ের পরিবারগুলোতে, এবং স্কুল বন্ধ থাকাসহ আরো অনেক কারণে বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের হার হঠাত্ করে ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
ইউএসএআইডি’র সামাজিক আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগ প্রকল্প উজ্জীবন-এর মাধ্যমে অকালে গর্ভধারনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি মেয়েদের শিক্ষায় বিনিয়োগের মাধ্যমে উচ্চহারে লাভ ফেরত পাওয়ার বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা হচ্ছে। ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে পরিচালিত এই প্রকল্পটির ব্যবস্থাপনায় রয়েছে জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়। এই প্রচারাভিযানের মাধ্যমে বাংলাদেশে বাল্য বিয়ে সংক্রান্ত বর্তমান আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সহায়তা করা হবে, যেই আইনে বাল্য বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও বিদ্যমান পদ্ধতি অনুসরণ করে কীভাবে নিজের এলাকার বাল্য বিয়ের ঘটনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে সে বিষয়ে এলাকাবাসীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও এই প্রচারাভিযানের মাধ্যমে জানানো হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা পাওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হবে।
এই প্রচারাভিযানের মাধ্যমে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে ১০ লাখ কিশোর-কিশোরী, মা-বাবা, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, নীতি-নির্ধারক, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি সংগ্রহের চেষ্টা করা হবে। এই ধরনের প্রচারণামূলক কর্মকান্ড মানুষকে মনে করিয়ে দেবে যে সমাজের মেয়েদের বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি সমাজের ছেলে-মেয়েদের পরিপূর্ণ বিকাশে সহায়তা করার লক্ষ্যে তাদের জন্য একটি নিরাপদ ও সুস্থ সামাজিক পরিবেশ তৈরি করার দায়িত্ব সমাজের প্রতিটি মানুষের এবং এই ধরনের কাজের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত সমাজ লাভবান ও উপকৃত হয়।
“বাল্য বিয়ে মানবাধিকারের লঙ্ঘন। বাল্য বিয়ের মতো একটি জটিল সমস্যার অবসানে আমাদের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং এ কাজে বিভিন্ন পক্ষের উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে,” উল্লেখ করে ইউএসএআইডি’র জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও শিক্ষা পরিচালক জেরসেস সিদওয়া বলেন, “আমরা ইউএসএআইডি-র পক্ষ থেকে এই ধরনের ক্ষতিকর অনুশীলন থেকে তরুণবয়সী বাংলাদেশীদের সুরক্ষা দেওয়ার কাজ চালিয়ে যাব এবং টেকসই উন্নয়ন প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করে যে বাল্য বিয়ে তা দূরীকরণে বাংলাদেশ সরকার ও অংশীদারদের সাথে মিলে কাজ করব।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সায়েদুল ইসলাম বলেছেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বাল্য বিয়ে দূরীকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকার, উন্নয়ন অংশীদারগণ,