দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক জ্বালানি বাজার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ২৮ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি তহবিলের ঘোষণা দিয়েছে ইউএসএআইডি

ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ২৮ অক্টোবর ২০২০, বুধবারে ইউএসএআইডি ওয়াশিংটনের এই বিবৃতিটি প্রচার করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা

গণমাধ্যম সম্পর্ক দফতর

অবিলম্বে প্রকাশের জন্য
২৮ অক্টোবর ২০২০
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

আজ, ভিয়েতনামের হ্যানয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত ইন্দো-প্যাসিফিক বিজনেস ফোরামে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি)-এর এশিয়া অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জ্যাভিয়ের পিয়েড্রা দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক জ্বালানি বাজার উন্নয়নে নতুন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে ২৮ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী তহবিলের ঘোষণা দিয়েছেন। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ‘এশিয়া এজ/Asia EDGE’ (এনহ্যান্সিং ডেভেলপমেন্ট এন্ড গ্রোথ থ্রু এনার্জি) উদ্যোগটি আরো অগ্রসর হবে। ফলে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার হবে এবং জ্বালানি ব্যবহারের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে।

ইউএসএআইডি ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যান্য অঙ্গ সংস্থাসমূহের নতুন এই বিনিয়োগ দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের জন্য অত্যাধুনিক জ্বালানি প্রযুক্তির কল্যাণে নতুন সুযোগের সদ্ব্যবহারের পাশাপাশি নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সহজতর হবে। এই চ্যালেঞ্জের কেন্দ্রে রয়েছে বেসরকারি খাত- যার মধ্যে রয়েছে বেসরকারি পুঁজি ব্যবহারের সীমিত সুযোগ, জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় বেসরকারি খাতের সীমিত সংশ্লিষ্টতা এবং স্বচ্ছ ও উন্মুক্ত জ্বালানি বাজারের ঘাটতি। সম্প্রসারিত, স্বচ্ছ ও কার্যকর আঞ্চলিক জ্বালানি বাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে সাশ্রয়ী, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ও টেকসই জ্বালানি ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।

নতুন কর্মকাণ্ডের প্রধান বিষয়গুলো নিম্নরূপ:

সাউথ এশিয়া গ্রূপ ফর এনার্জি (সেইজ): সেইজ কনসোর্টিয়ামে রয়েছে ইউএসএআইডি, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি (ডিওই) এবং ডিওই’র তিনটি জাতীয় গবেষণাগার: লরেন্স বার্কলি ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি (এলবিএনএল), ন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি ল্যাবরেটরি (এনআরইএল) এবং প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি (পিএনএনএল)। এই কনসোর্টিয়াম দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি খাতে নেতৃত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে প্রযুক্তিগত বিনিময় ও বিশ্লেষণ জোরদারকরণে কাজ করবে- যাতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো সর্বাধুনিক জ্বালানি প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। এই কার্যক্রমের আওতায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ, মডেলিং ও আধুনিক প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণার মাধ্যমে বেসরকারি খাতের জন্য বাজার সৃষ্টির সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সরকারসমূহকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করবে যাতে তারা কৌশলগত বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং বেসরকারি খাতের সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের কাছ থেকে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের অংশীদারদের সহযোগিতা গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হবে ।

সাউথ এশিয়া রিজিওনাল এনার্জি হাব (সারেহ): ইউএসএআইডি ‘সারেহ’ নামক একটি মাল্টিমিডিয়া মাধ্যম তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে ‘এশিয়া এজ’-এর বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলাফল দক্ষিণ এশিয়াব্যাপী প্রচার করা হবে, দক্ষিণ এশীয় বিভিন্ন অংশীদারকে একত্রিত ও সমন্বিত করা হবে এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের সরকার, বেসরকারি খাত ও এ অঞ্চলের ইউএসএআইডি মিশনের মধ্যে জ্ঞান, গবেষণা ও সম্পদ বিনিময় জোরদার করা হবে। ইউনাইটেড স্টেটস এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সাথে যৌথভাবে, সারেহ তাদের জ্ঞান প্রচার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন ধরনের অংশীদারদের কাছে নানা উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি তুলে ধরবে এবং সেইসাথে নীতি নির্ধারক ও নিয়ন্ত্রকদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করবে।

পরিকল্পিত সাউথ এশিয়া রিজিওনাল এনার্জি পার্টনারশিপ (সারেপ): সারেপ-এর আওতায় সক্রিয়ভাবে বেসরকারি খাতের সাথে অংশীদারিত্ব স্থাপনের লক্ষ্যে প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হবে। এর লক্ষ্য হবে পূর্ণাঙ্গ নীতিমালার দ্বারা সহায়ক পরিবেশ, কার্যকর প্রতিষ্ঠান, স্বচ্ছতা ও মুক্ত প্রতিযোগিতা সৃষ্টি এবং নির্ভরযোগ্য চুক্তি বাস্তবায়ন। আর্থিক প্রবাহ বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও ব্যবসায় উন্নয়ন সেবা প্রদান এবং জ্বালানি প্রকল্পগুলোকে আরো বেসরকারি-বিনিয়োগ উপযোগী করার জন্য সারেপ-এর আওতায় বিভিন্ন প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হবে।

এই তিনটি কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্বালানি মডেল উন্নয়ন ও প্রস্তাবিত বিভিন্ন জ্বালানি পন্থা মূল্যায়নে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে, কার্যকর ও স্বচ্ছ সরকারী বিধিমালা প্রণয়নে আইনি দলগুলোকে এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য বিভিন্ন জ্বালানি ব্যবহারের সুবিধা নিশ্চিত করতে গবেষণা ও উন্নয়নে কর্মরত বিভিন্ন উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানকে ইউএসএআইডি তহবিল প্রদান করবে। এসকল কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার সীমানা পেরিয়ে আরো মুক্ত ও কার্যকরভাবে জ্বালানি প্রবাহের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং ব্লু ডট নেটওয়ার্কের মত উদ্যোগের আওতায় উচ্চমানের অবকাঠামো কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টাকে আরো জোরদার করবে।

ইউএসএইড’র অর্থায়নের মাধ্যমে ‘এশিয়া এজ’-এর আওতায় দক্ষিণ এশিয়ায় একটি প্রতিযোগিতামূলক আঞ্চলিক বিদ্যুৎ বাজার সৃষ্টির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নীতিমালা পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। এর ফলে এই অঞ্চলের বিদ্যুৎ বাণিজ্য ৩,৫০০ মেগাওয়াট বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২৩ লক্ষ পরিবারে ব্যবহৃত বিদ্যুতের সমান। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারত সরকার তাদের আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্য নির্দেশিকা সংশোধন করে- যার ফলে অন্যান্য রাষ্ট্র ভারতের বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ব্যবহার করে বিদ্যুৎ বিনিময় করতে পারছে।

২০১৯ সালে ভারতীয় সরবরাহ লাইন ব্যবহার করে বিদ্যুৎ বাণিজ্য বিষয়ে একটি চুক্তি সম্পাদনের পর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এবং ফেডারেল ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ নেপাল এই ব্যবস্থাটি ব্যবহার করছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের স্বাধীন ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্বপ্নকে এগিয়ে নিতে ইউএসএআইডি’র ভূমিকা সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে দেখুন, ‘ইউএসএআইডি’র ইন্দো-প্যাসিফিক ভিশন’।

ইউএসএআইডি’র প্রেস রিলেশনস অফিসের সাথে যুক্ত থাকুন: press@usaid.gov