যুক্তরাষ্ট্র কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করতে অক্সিজেন ও জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম হস্তান্তর করেছে

ঢাকা, জুন ২৯, ২০২১ — আজ, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশী জনগণের জীবন বাঁচাতে সহায়তার লক্ষ্যে, কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে এবং বাংলাদেশী জনগণের স্বাস্থ্য চাহিদা মেটাতে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি-র মাধ্যমে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় জরুরি চিকিত্‌সা সরঞ্জাম/সরবরাহ অনুদান দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া এবারের অনুদানের আর্থিক মূল্য প্রায় ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে স্বাস্থ্যসেবাদানকারী পেশাজীবী ও অন্যান্য সম্মুখসারির কর্মীদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই), কোভিড-১৯ পরীক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য পরীক্ষাগারের যন্ত্রপাতি এবং কোভিড-১৯ রোগীদের সময়মতো গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ। বাংলাদেশ সরকার এই চিকিত্‌সা সরঞ্জাম ও ওষুধগুলো দেশের সীমান্ত এলাকাগুলোতে বিতরণ করবে যেখানে সাম্প্রতিককালে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই ধরনের চিকিত্‌সা সরঞ্জাম ও ওষুধের চাহিদা বেড়েছে।

“আজকে কোভিড-১৯ চিকিত্‌সা সরবরাহ ও ওষুধের হস্তান্তর এই সঙ্কট একসাথে কাটিয়ে উঠার ক্ষেত্রে আমাদের সফল ও অনন্য অংশীদারিত্বের দৃষ্টান্তগুলোর অন্যতম,” হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বলেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, লোকমান হোসেন মিয়া, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ।

যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া এবারের এই অনুদান বাংলাদেশে মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত হলো। যুক্তরাষ্ট্র মহামারি প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে আসছে এবং ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে মহামারি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরোধ ও সাড়ামূলক কার্যক্রমকে জোরদার করতে উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা হিসেবে ইউএসএআইডি, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর, সিডিসি ও স্টেট ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে ৮৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান সহায়তা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া এই সহায়তা কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিত্‌সা ও জীবন রক্ষায় সাহায্য করেছে, ভাইরাস পরীক্ষা করার ও নজরদারির সামর্থ্য জোরদার করেছে, সংক্রমণের ঘটনার ব্যবস্থাপনা, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের চর্চা ও পদ্ধতিগুলো উন্নত করেছে এবং সরবরাহ ব্যবস্থা ও লজিস্টিক বা সরঞ্জাম ব্যবস্থাপনা উন্নত করেছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার অন্যতম লক্ষ্য হলো সম্মুখসারির কর্মীদের সুরক্ষা এবং কোভিড-১৯ সম্পর্কে জনগণের জ্ঞান ও সচেতনতা বাড়ানো।

যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে বাংলাদেশকে নিজস্ব ভেন্টিলেটর তৈরিতে সহায়তা করার জন্য ১০০টি অত্যাধুনিক ভেন্টিলেটর ও গ্যাস অ্যানালাইজার দেয়ার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উত্‌পাদিত কয়েক লক্ষ পিপিই চিকিত্‌সাকেন্দ্র, আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, প্রথম সাড়াদানকারী ও শুল্ক পরিদর্শকদের মাঝে বিতরণ করেছে; যার মধ্যে কেএন৯৫ সার্জিকেল মাস্ক, মুখের বর্ম বা শিল্ড, হ্যাজম্যাট স্যুট, পুরো শরীর ঢাকার গাউন, মেডিকেল-গ্রেডের হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সার্জিকেল গ্লাভস ও মেডিকেল গগলস রয়েছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার চিকিত্‌সক ও অন্যান্য সম্মুখসারির কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান যাতে করে তারা বাংলাদেশ-ব্যাপী কোভিড-১৯ রোগীদের উন্নতমানের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারে।

এই সহায়তা গত ২০ বছরে বাংলাদেশকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি স্বাস্থ্য সহায়তার সাথে যুক্ত হয়েছে এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য মানসম্মত ও জীবন-রক্ষাকারী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতিই পুনর্ব্যক্ত করে।