ঢাকা, ২৭ জুলাই ২০২০- আজ রাষ্ট্রদূত আর্ল আর. মিলার ঢাকাস্থ শ্যামলীর ২৫০ শয্যার যক্ষ্মা (টিবি) হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার প্রদত্ত জিনএক্সপার্ট যন্ত্র কীভাবে মাত্র ৪৫ মিনিটে কোভিড-১৯ শনাক্ত করতে পারে সেটা প্রত্যক্ষ করেন। একই সাথে তিনি বহু-ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা বা মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি (MDR-TB) রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া উন্নতকরণে যন্ত্রোপকরণ হস্তান্তর করেন।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশে যক্ষ্মার প্রাদুর্ভাব কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি)’র মাধ্যমে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে গত দশ বছরে ১০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস মার্চ ২০২০ থেকে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলার প্রস্তুতি ও কার্যক্রম বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত প্রচেষ্টার পরিপূরক হিসাবে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তাও সম্প্রসারণ করেছে।
জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের (এনটিপি) চিকিৎসকগণ কীভাবে জিনএক্সপার্ট যন্ত্র ব্যবহার করে মাত্র ৪৫ মিনিটে হাসপাতালে কোভিড-১৯’র সম্পূর্ণ পরীক্ষা শেষে শনাক্তকৃত রোগীদেরকে অবিলম্বে চিকিৎসা দিচ্ছেন সেটা পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রদূত মিলার। এর আগেও যক্ষ্মা পরীক্ষার জন্য ইউএসএআইডি বাংলাদেশ সরকারকে ৭৪টি জিনএক্সপার্ট যন্ত্র প্রদান করেছে যেগুলো এখন কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক কোম্পানি সেফাইড কর্তৃক প্রস্তুতকৃত জিনএক্সপার্ট পদ্ধতিটি যক্ষ্মা ও কোভিড-১৯’সহ চাহিদামাফিক বিভিন্ন রোগের পরীক্ষা করতে সক্ষম। রাষ্ট্রদূত মিলার হাসপাতালের পরীক্ষাগারে গিয়ে কোভিড-১৯ পরীক্ষায় জিনএক্সপার্ট যন্ত্রের কার্যকর ব্যবহার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাপুষ্ট কার্যক্রমের আওতায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসা প্রযুক্তিবিদদের সাথেও সাক্ষাৎ করেন।
সাম্প্রতিক কালে কোভিড-১৯ মহামারী সারা বিশ্বের মনোযোগের কেন্দ্রে অবস্থান করলেও যক্ষ্মা এখনও বিশ্বের একক সংক্রামক রোগে মৃত্যুর প্রধান কারণ এবং বাংলাদেশে মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসাবে রয়ে গেছে। বহু-ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার (MDR-TB) রোগনির্ণয় পদ্ধতি উন্নতকরণে রাষ্ট্রদূত মিলার জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের নিকট দুটি মাইকোব্যাকটেরিয়া গ্রোথ ইন্ডিকেটর টিউব (এমজিআইটি) যন্ত্রও হস্তান্তর করেন।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলার প্রস্তুতি ও কার্যক্রম গ্রহণে তহবিল সংস্থানে প্রথম পর্যায়ের দাতা সংস্থাগুলোর অন্যতম হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এর সবগুলো প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৫৬.৫ মিলিয়ন ডলারের বেশী অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউএসএআইডি থেকে উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা হিসাবে প্রদত্ত প্রায় ৩৭ মিলিয়ন ডলার। এই তহবিল বাংলাদেশের পরীক্ষাগার ও পরীক্ষাগারের কর্মীদের সক্ষমতা জোরদারকরণ, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সেবা উন্নতকরণ, সংক্রমণের বিস্তার হ্রাস ও নিয়ন্ত্রণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং রোগ সম্পর্কিত গুজব ও ভুলধারণা দূরীকরণে সহায়ক হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে ১৯৭১ সাল থেকে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিষয়ক সহায়তা হিসাবে ১ বিলিয়ন ডলারের অধিক সহায়তাসহ সার্বিক উন্নয়ন সহায়তা হিসাবে ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশী অর্থ প্রদান করেছে। খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা উন্নতকরণ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও চর্চা উৎসাহিতকরণ, পরিবেশ সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নে ২০১৯ সালে ইউএসএআইডি ২০০ মিলিয়ন ডলারের অধিক অর্থ প্রদান করেছে।