যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সালের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশকে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ৮৪ মিলিয়ন ডলারের বেশি স্বাস্থ্য সহায়তা দিয়েছে, যার মধ্যে আজকের দেয়া স্বাস্থ্যসেবাদানকারী পেশাজীবীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম ও হাতের আঙ্গুল থেকে শরীরের অক্সিজেন মাত্রা নিরূপণের যন্ত্র অক্সিমিটার রয়েছে।
ঢাকা, জুন ১০, ২০২১ — আজ, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি-র মাধ্যমে বাংলাদেশী জনগণের জীবন রক্ষায় ও কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে এবং জরুরি স্বাস্থ্য চাহিদা পূরণে সহায়তা করতে জরুরি চিকিত্সা সরঞ্জামের দ্বিতীয় সরবরাহটি বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছে। সর্বশেষ এই সহায়তার মধ্য দিয়ে শুধু কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের মোট স্বাস্থ্য সহায়তার পরিমাণ ৮৪ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা চিকিত্সা সরঞ্জামের দ্বিতীয় সরবরাহকে স্বাগত জানাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকা উইং এর পরিচালক মিস সেহেলি সাব্রিনের সাথে যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ডেপুটি চিফ জোঅ্যান ওয়াগনার এবং ইউএসএআইডি-র মিশন ডিরেক্টর ডেরিক এস. ব্রাউন।
জরুরি চিকিত্সা সরঞ্জামের সর্বশেষ এই সরবরাহটি ইউএসএআইডি, ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের জরুরি সেবা কার্যালয় এবং স্বাস্থ্যসেবাদানকারী পেশাজীবীদের আমেরিকান কোম্পানি হেনরি শাইন ইনকের যৌথ অনুদান।
এর আগে, গত ৭ জুন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক বিমান কোভিড-১৯ চিকিত্সার জন্য দরকারি গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী ঢাকায় পৌঁছে দিয়েছিল।
এই দু’টো সরবরাহ বাংলাদেশের মহামারি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের চলমান প্রচেষ্টার সাথে যুক্ত হলো। উল্লেখ্য যে, যুক্তরাষ্ট্র কোভিড-১৯ মহামারির শুরু থেকে এই রোগ প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টাকে জোরদার করতে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে চলেছে এবং উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা হিসেবে এখন পর্যন্ত ৮৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান দিয়েছে। জরুরি চিকিত্সা সরঞ্জামের সাম্প্রতিক সরবরাহগুলো বাংলাদেশকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মোট সহায়তার পরিমাণ আরো ২ মিলিয়ন বৃদ্ধি করল।
এই সহায়তা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ব্যক্তিদের জীবন বাঁচাতে ও চিকিত্সা সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার সামর্থ্য ও নজরদারি বাড়াতে সহায়তা করছে। এছাড়াও কোভিড-১৯ রোগ ব্যবস্থাপনা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ চর্চাগুলো জোরদার করা, সরবরাহ ব্যবস্থা ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন ঘটানো, সম্মুখসারিতে থেকে কাজ করছে যারা তাদেরকে সুরক্ষা দেওয়া এবং কোভিড-১৯ সম্পর্কে জনসাধারণের জ্ঞান বৃদ্ধিতে কাজে লাগছে।
এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে কোভিড মোকাবেলায় ইতোপূর্বে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করা সর্বাধুনিক ১০০টি ভেন্টিলেটর এবং বাংলাদেশ যাতে নিজেরাই ভেন্টিলেটর উত্পাদন করতে পারে সে লক্ষ্যে সহায়তা করতে গ্যাস অ্যানালাইজার দিয়েছে। বাংলাদেশকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য সহায়তার মধ্যে আরো রয়েছে বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে উত্পাদিত কয়েক লাখ ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই, কেএন৯৫ সার্জিকেল মাস্ক, ফেস শিল্ড বা মুখের বর্ম, হ্যাজমেট স্যুট, পুরো শরীর ঢাকার গাউন, মেডিকেল-গ্রেড হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সার্জিকেল গ্লাভস, মেডিকেল গগলস) সংগ্রহ করে চিকিত্সা কেন্দ্র, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, প্রথম সাড়াদানকারী ও শুল্ক পরিদর্শকদের মাঝে বিতরণ করা এবং বাংলাদেশব্যাপী কোভিড-১৯ রোগীদের স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত হাজার হাজার চিকিত্সক ও অন্যান্য সম্মুখসারির কর্মীদের সেবার মান বাড়াতে পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ প্রদান।
যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া এই স্বাস্থ্য সহায়তাগুলো বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে সরবরাহকৃত ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি স্বাস্থ্য সহায়তার সাথে যুক্ত হলো এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্য মানসম্মত, জীবনরক্ষাকারী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতির বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত হলো।