ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ কাস্টমস–এ কোভিড–১৯ মোকাবেলায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী দিয়েছে।
ঢাকা, জুন ১৭, ২০২০ — বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এবং যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস-এর প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার অংশ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনিমের কাছে অত্যাবশ্যকীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) হস্তান্তর করেন। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের চলমান কর্মকাণ্ডকে সহায়তা করতে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন ডলারের সাহায্য দিয়েছে।
আজ ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে হস্তান্তরিত ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামগুলোর মধ্যে ১,৫০০ মাস্ক ও ফুল-বডি গাউন রয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বাংলাদেশ কাস্টমসে সামনের সারিতে কর্মরত সাহসী কাস্টমস পরিদর্শক ও কর্মীদের কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে তাদের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের দেয়া পিপিই সরঞ্জাম বিতরণ করবে। এর ফলে, বাংলাদেশ কাস্টমসের চট্টগ্রাম ও মোংলা কাস্টম হাউজসহ দেশের ছয়টি কাস্টম হাউজের সবকয়টিতে আমদানি ও রপ্তানি প্রক্রিয়ার সকল গুরুত্বপূর্ণ কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে চালু রাখা সম্ভব হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বাংলাদেশ সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত সম্মুখসারির কর্মীদের রক্ষা করতে তাদের মাঝে পিপিই ও অন্যান্য মেডিকেল সরঞ্জাম বিতরণের কাজ অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও তারা কোভিড-১৯ চিকিত্সার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালগুলোতে পিপিই ও অন্যান্য চিকিত্সা সরঞ্জাম সরবরাহ করাসহ দেশব্যাপী জরুরি মেডিকেল সরঞ্জামের ঘাটতি আছে এমন স্থানগুলো চিহ্নিত করে ঘাটতি দূর করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করছে। আজকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত পিপিই সরঞ্জাম প্রদান, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের নেয়া অনেক উদ্যোগের একটি। যা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অব্যাহত অঙ্গীকারের প্রকাশ। এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে এবং একটি অবাধ ও স্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এই মহামারি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বিশ্বব্যাপী জরুরি স্বাস্থ্য, মানবিক, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহায়তা কর্মকাণ্ডে সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিওদের এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই তহবিল বিশ্বের ১২০টিরও বেশি দেশে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সুরক্ষা, এবং পরীক্ষাগার, রোগের সার্ভিল্যান্স ও জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেয়ার সামর্থ্য বাড়ানোর মাধ্যমে মানুষের জীবন বাঁচাবে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া প্রায় ৩৭ মিলিয়ন ডলারের তহবিল ও কারিগরি সহায়তা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য বিগত ২০ বছরে দেয়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি স্বাস্থ্য সহায়তার সাথে যুক্ত হলো, যা বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য মানসম্পন্ন জীবনরক্ষাকারী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতা ও অঙ্গীকারের বিষয়টিই তুলে ধরে।
ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস খাদ্য ও কৃষিজাত পণ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিতকরণে কর্মরত বাংলাদেশ কাস্টমসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যবহারের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) দিতে পেরে গর্বিত। এই অনুদান যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অন্যান্য অনুদান ও সাম্প্রতিক বাংলাদেশ রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর অনুদানের অতিরিক্ত। কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ অন্যান্যরা বাংলাদেশের খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখতে সম্মুখসারির কর্মী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তারা স্বাস্থ্যসেবাদানকারী, প্রথম সাড়াদানকারী, এবং মুদি ও ওষূধের দোকানে কাজ করছেন এমন মানুষদের সাথে মিলে প্রতিদিন অসাধারণভাবে সেবা দিচ্ছেন।