ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে অগ্রযাত্রা শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্য

আন্তর্জাতিক সম্মেলন ইন্দোপ্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে অগ্রযাত্রা: উন্মুক্ত, সহিষ্ণু আন্তঃসংযুক্ত বঙ্গোপসাগর বহির্বিশ্বের উন্নয়নে বাংলাদেশের ভূমিকা

৩১ মার্চ, ২০২২
 ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (IUB)

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য ভিন্ন হলেও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য দু’দেশের রূপকল্প অভিন্ন।

যেসব ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন  হয়, সেগুলো নিয়েই আমরা অগ্রসর হই, একসাথে কাজ করতে পারি এবং করি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের প্যারিস শান্তি ফোরামে এই অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশের রূপকল্প বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন:

“ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলটিকে অবশ্যই সবার জন্য শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল হতে হবে। এই অঞ্চলের জন্য আমাদের লক্ষ্য হল অবাধ, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অঞ্চল।”

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সর্বান্তকরণে একমত। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বিষয়ক কৌশলপত্র ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন:

“আগামী দশকগুলোতে আমাদের প্রতিটি দেশের তথা প্রকৃতপক্ষে সারাবিশ্বের দীর্ঘস্থায়ী ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ওপর।”

একটি বিষয় স্পষ্ট যে, এই অঞ্চলের জনগণ ও সরকার তাদের সকল নাগরিকের সমৃদ্ধির জন্য জন্য আরো বেশি সুযোগ চায়।

তারা তাদের দেশের মধ্যে, বিভিন্ন দেশের সাথে ও বিশ্বব্যাপী আরো সংযোগ গড়ে তোলার সুযোগ চায়।

তারা মহামারী এবং বৈশ্বিক উষ্ণতার মতো সংকট মোকাবেলায় আরো ভালোভাবে প্রস্তুত থাকতে আগ্রহী।

তারা শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রত্যাশী।

সমগ্র ইন্দো-প্যাসিফিকের জনগণও চায় গণতন্ত্র এবং তাদের মানবাধিকারকে সম্মান করা হোক।

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলপত্রে পাঁচটি মূল উপাদান রয়েছে যা এ অঞ্চলে আমাদের দীর্ঘমেয়াদী সম্পৃক্ততার পথনির্দেশ করবে।  যুক্তরাষ্ট্র এমন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্বপ্ন দেখে যা হবে:

  1. অবাধ ও উন্মুক্ত;
  2. আন্তঃসংযুক্ত;
  3. সমৃদ্ধশালী;
  4. নিরাপদ, ও
  5. ঝুঁকি-সহিষ্ণু।

আজকের সম্মেলনটি উক্ত প্রতিটি স্তম্ভ, সেগুলো অর্জনে বাংলাদেশের অবদান এবং ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে বাংলাদেশের সাথে অংশীদার হতে পারে সেসব বিষয়ে আলোকপাত করার সুযোগ এনে দিয়েছে।

প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গঠনের বিষয়টিকে এগিয়ে নেবে।

এর অর্থ এমন একটি অঞ্চল যেখানে স্বচ্ছভাবে সমস্যার সমাধান করা হবে ।

নিয়মনীতি প্রণীত এবং প্রয়োগ করা হবে ন্যায়সঙ্গতভাবে।

প্রতিটি দেশ তাদের নিজস্ব পথ ও তাদের নিজস্ব অংশীদার বেছে নিতে সক্ষম হবে।

এবং যেখানে প্রতিটি দেশের জনগণকে স্বাধীনভাবে তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করতে দেওয়া হবে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার নৃশংস ও বিনা প্ররোচনায় আগ্রাসন বিশ্বের জন্য একটি সতর্কবাণী। আমাদের নীতি-আদর্শগুলো অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।

একটি বিষয় আমি সুস্পষ্ট করতে চাই: এই নীতি-আদর্শগুলো সুরক্ষার লক্ষ্য কোন দেশকে দাবিয়ে রাখা নয়।

বরং সব দেশের জন্য তাদের নিজ নিজ পথ বেছে নেওয়ার অধিকার সুরক্ষা করা, যা হবে জবরদস্তি ও ভয়ভীতিমুক্ত।

এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ তাদের স্থল ও সমুদ্র-সীমান্ত বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে বঙ্গোপসাগরকে বিশ্বের কাছে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত করে তুলেছে।

তাছাড়া অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল হবে এমন একটি এলাকা যেখানে মালামাল, ধারণা ও মানুষ অবাধে স্থল, সাইবার পরিসর ও উন্মুক্ত সমুদ্রে চলাচল করবে।

এ অঞ্চলের সমুদ্র ও আকাশপথ যাতে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পরিচালিত ও ব্যবহৃত হয় সেটা নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশ ও অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করবো।

অত্যাবশ্যক ও বিকাশমান প্রযুক্তি, ইন্টারনেট ও সাইবার পরিসর বিষয়ে গোপনীয়তা ও মানবিক মর্যাদা সুরক্ষাকারী যৌথ পন্থাগুলোকেও আমরা এগিয়ে নিতে সচেষ্ট হবো।

দ্বিতীয়ত, আমরা অব্যাহতভাবে এই অঞ্চলের অভ্যন্তরে ও বহির্বিশ্বে শক্তিশালী সংযোগ গড়ে তুলবো। যৌথ সমস্যা মোকাবেলায় আমাদেরকে অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ জনগোষ্ঠী হিসাবে কাজ করতে হবে।

আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিমসটেক সচিবালয়ের আয়োজক, ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ার এবং সার্ক, কলম্বো প্ল্যান ও আরো বহু কিছুর সক্রিয় সদস্য হিসেবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও নেতৃত্বশীল ভূমিকা রাখছে।

প্রতিবেশী দেশগুলোকে সহায়তা দেয়ার গুরুত্বও বাংলাদেশ জানে- যেমন তারা মালদ্বীপকে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় সহায়তা দিয়েছে কিংবা শ্রীলঙ্কায় তীব্র নগদ অর্থ সংকটকালে মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যমে সহায়তা করেছে।

রাষ্ট্রদূত হিসাবে আমি একসাথে যৌথ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আমাদের বন্ধন শুধু আমাদের দুদেশের সরকারকেই সংযুক্ত করে না বরং আমাদের দুদেশের জনগণের মধ্যেও সেতুবন্ধন তৈরি করে।

আমরা শিক্ষা ও বিনিময় কার্যক্রমের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের জনগণের মধ্যেকার সম্পর্ককে আরো দৃঢ় করছি।

১৯৫৮ সালে শেখ মুজিবুর রহমান বিদেশী নেতাদের জন্য আয়োজিত বিনিময় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের পর থেকে প্রায় ৫,০০০ বাংলাদেশী যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়িত বিনিময় কার্যক্রমের আওতায় অধ্যয়ন ও শিক্ষাদান করেছে এবং তাদের পেশাগত দক্ষতার বিকাশ ঘটিয়েছে।

এছাড়াও, আমেরিকায় লেখাপড়ার জন্য প্রেরিত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা দ্রুততম হারে বাড়ছে। গত বছর প্রায় ৮,৬০০ শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বমানের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যোগ দিয়েছে।

আজ এখানে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও তরুণ শিক্ষকদের কাছে আমার প্রত্যাশা, আপনারাও তাদের পদাঙ্ক অনুসরণের বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন।

আমাদের দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে, যার জন্য  উচ্চ-পর্যায়ের  একটি ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদল আসন্ন সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সুযোগ অনুসন্ধান করতে আসবে ।

তৃতীয়ত, আমরা ব্যাপকভিত্তিক সমৃদ্ধি উৎসাহিত করব, যাতে একবিংশ শতাব্দীতে কেউ আর পিছিয়ে না থাকে।

বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উদ্যোক্তাসুলভ মনোভাব ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ তাদের শিল্পায়নের ভিত্তিকে আরো বৈচিত্র্যপূর্ণ করে তুলছে বিধায় আঞ্চলিক পর্যায়ে সরবরাহ ব্যবস্থা আরো ঝুঁকি-সহিষ্ণু হয়ে উঠবে।

শ্রম অধিকার ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্কারের ফলে প্রবৃদ্ধির সুফলগুলো আরো ব্যাপক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়বে।

বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় উৎস যুক্তরাষ্ট্র।  রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ পরিবেশ গড়ে তুলতে এবং আমাদের সকল নাগরিকের স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদেরকে নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগে সহায়তা দিতে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক পরিকাঠামো তৈরি করছি। এতে যৌথ উদ্দেশ্যের ভিত্তিতে প্রধান যেসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে: জলবায়ু বান্ধব ও দূষণমুক্ত জ্বালানি, ন্যায়সঙ্গত বাণিজ্য সুবিধা ত্বরান্বিতকরণ, ঝুঁকি-সহিষ্ণু সরবরাহ ব্যবস্থা ও ডিজিটাল অর্থনীতি।

আমি আগামী মাসগুলোতে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের সাথে এ বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার প্রতীক্ষায় আছি।

চতুর্থত, আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা জোরদার করব।

বিভিন্ন ধরনের হুমকি বাড়ছে। এর সাথে সাথে আমাদের নিরাপত্তা পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা আবশ্যক।

সহিংস চরমপন্থা থেকে শুরু করে অবৈধ মাছ শিকার ও মানব পাচারের মতো বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমরা অংশীদারদের সাথে নিবিড় নিরাপত্তা সহযোগিতা স্থাপনের প্রচেষ্টা নেবো।

এসব চ্যালেঞ্জ ও আরো বহু বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্ব স্থাপন করতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত।

উদাহরণস্বরূপ, গত বছর আমরা বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডকে ১০টি মেটাল শার্ক বোট ও ১০টি ডিফেন্ডার ক্লাস বোট প্রদান করেছি।

বাংলাদেশের আঞ্চলিক জলসীমা ও একান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল সুরক্ষিত রাখা, সব ধরনের পাচার প্রতিরোধ এবং বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এই জাহাজগুলো সহায়তা করবে।

সর্বোপরি, আমরা আন্তর্জাতিক হুমকি মোকাবেলায় আঞ্চলিক সহিষ্ণুতা গড়ে তুলতে সহায়তা করব।

কোভিড-১৯ মহামারী ও জলবায়ু সংকট এই কাজের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে।

দুই ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছে।

টিকার প্রথম ডোজ প্রদান এবং আরো টিকা দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশের বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনার মাধ্যমে বাংলাদেশ তাদের নিজ জনগণ ও বিশ্বকে মহামারী থেকে সুরক্ষা দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ১৮ কোটিরও বেশি ডোজ নিরাপদ ও কার্যকর টিকা পাঠিয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ একাই পেয়েছে ৬ কোটি ১০ লক্ষ ডোজ। বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে আমাদের টিকা অনুদানের ডোজের সংখ্যা বেশি।

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামে বাংলাদেশের নেতৃত্বদানের বিষয়টি বিশ্বকে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে: গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমাতে সর্বোচ্চ নিঃসরণকারী সকল দেশের কাছ থেকেসহ আমাদের প্রয়োজন সত্যিকারের বৈশ্বিক অঙ্গীকার।

জলবায়ু বিষয়ে আমরা পুরো অঞ্চল জুড়ে দূষণমুক্ত জ্বালানি, নির্মল বায়ু ও জলবায়ু ঝুঁকি-সহিষ্ণুতা বৃদ্ধি প্রকল্পের জন্য লক্ষ কোটি  ডলার সংগ্রহ করেছি। তাছাড়া প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২০২৪ সালের মধ্যে জলবায়ু বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চারগুণ বাড়িয়ে বার্ষিক ১১.৪ বিলিয়ন ডলার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

গত বছর আমরা বাংলাদেশে দূষণমুক্ত জ্বালানি বিষয়ে ১৭ মিলিয়ন ডলারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চালু করেছি যা সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও টেকসই জ্বালানি ব্যবস্থা তৈরির পথ প্রশস্ত করতে সহায়তা করবে।

আমি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের পাঁচটি মূল উপাদান এবং কীভাবে বাংলাদেশ এর সাথে যুক্ত হচ্ছে তার রূপরেখা তুলে ধরলাম।

আমার বক্তব্য শেষ করার আগে আমি একটু সময়ের জন্য তুলে ধরতে চাই, এই ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলটি কী নয় সে বিষয়ে।

  1. ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল কোন সামরিক জোট নয়। এর উদ্দেশ্যও সেটা নয়।
  2. ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল যুক্তরাষ্ট্রপন্থী অঞ্চল বা চীনপন্থী অঞ্চলের মধ্যেকার প্রতিযোগিতাও নয়। প্রকৃতপক্ষে, আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে স্বতন্ত্র অঞ্চল হিসাবেই দেখি।
  3. ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলটি কোন দেশকে বিভিন্ন দেশের মধ্যে কোনটিকে বেছে নেয়ানোর উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়নি। কৌশলটির অন্যতম মূলনীতি হলো, প্রতিটি দেশই চাপ বা জবরদস্তি ছাড়াই নিজস্ব পথ বেছে নিতে সক্ষম হবে।

সংক্ষেপে, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলটি এমন একটি অঞ্চল তৈরির এক ইতিবাচক ও সম্মিলিত রূপকল্প যার আওতায় সমস্ত দেশ তথা বাংলাদেশ, চীন, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও এ অঞ্চলের দেশেগুলোর প্রতিটি জেলাই উন্নতি লাভ করতে পারবে।

২১ শতকের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা যেমন জলবায়ু সংকট, বিশ্ব স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ এবং দেশগুলো স্বাধীনভাবে তাদের নিজস্ব পথ বেছে নিতে পারবে কিনা তার সবই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সাথে সম্পর্কিত।

অন্য যেকোন অঞ্চলের তুলনায় এ অঞ্চলের সম্ভাব্য ঘটনাগুলো একবিংশ শতাব্দীর বৈশ্বিক গতিপথ রূপায়ণে সবচেয়ে সক্রিয়  ভুমিকা রাখবে।

তাই এই যৌথ রূপকল্প বাস্তবায়নের অংশীদার হিসাবে আমাদের একসাথে কাজ করা জরুরী।

ধন্যবাদ।