বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২
শুভ সকাল এবং আজকে এই অনুষ্ঠান আয়োজন ও আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ এবং ফ্রেডরিখ-এবার্ট-স্টিফটুং বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানাই।
আজ এখানে আপনাদের সাথে কথা বলতে পেরে আমার ভালো লাগছে এবং আমি আনন্দিত যে আজকে আমি আপনাদেরকে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের পাঁচটি মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানাতে পারব।
এই লক্ষ্য বা উদ্দেশ্যগুলো আমাদের (বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্র) দূতাবাসের প্রতিদিনের কাজের ভিত্তি।
এবং এখানে একটি কথা সুস্পষ্ট করা দরকার যে, এই লক্ষ্যগুলো শুধু আমার লক্ষ্য কিংবা শুধু দূতাবাসের লক্ষ্য নয়।
এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য। এগুলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সকল দপ্তরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এবং এগুলো গোপন কিছু নয়। আপনারা এই লক্ষ্যগুলো স্টেট ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইটে পাবেন। গুগলে ইন্টিগ্রেটেড কান্ট্রি স্ট্র্যাটেজি বাংলাদেশ (“Integrated Country Strategy Bangladesh”) লিখে সার্চ দিলে প্রথমেই এই লিঙ্কটা দেখাবে।
আমি এই লক্ষ্যগুলো নিয়ে কথা বলার সময় আপনাদেরকে প্রতিটি লক্ষ্যকে আমরা কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি সে নিয়েও কিছু আলোচনা করবো ।
লক্ষ্য নম্বর এক: আরো বেশি শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ – নিজেদের নিরাপত্তায় আরো বেশি সক্ষম, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের প্রতি হুমকি মোকাবেলা করতে পারে এবং ইন্দো-প্যাসিফিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তায় ক্রমবর্ধমানভাবে অবদান রাখতে পারে।
গত বছর, (বাংলাদেশের) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিতে ও সকলের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি অবাধ, স্বাধীন, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ব্যাপারে তার ভিশন বা দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র — বাংলাদেশ সামরিক সহযোগিতা তাঁর সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতিকে শক্তিশালী করতে, মানবিক বিপর্যয় মোকাবেলায় তাদের সক্ষমতা বাড়াতে এবং আমাদের দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে অংশীদারিত্ব জোরদার করতে নিয়মিতভাবে একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
আমাদের দুই দেশের সামরিক বাহিনী কীভাবে একসাথে কাজ করছে তার একটা উদাহরণ দিচ্ছি: এই মাসের শুরুতে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে ঢাকায় ৪৬তম বার্ষিক ইন্দো-প্যাসিফিক আর্মি ম্যানেজমেন্ট সেমিনার আয়োজন করেছিল।
এটি ছিল এই অঞ্চলের স্থল বাহিনীগুলোর (প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে) বৃহত্তম সম্মেলন।
এই সম্মেলন অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর স্থল বাহিনীর উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কীভাবে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা যায় সে সম্পর্কে মতামত ও ধারনা বিনিময় করার সুযোগ করে দিয়েছিল। এছাড়াও এই সম্মেলন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক নেতা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আমরা আমাদের নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পর্ক বাড়াতে চাই।
এটি করার জন্য আমরা (বাংলাদেশের সাথে) দুটি “ফাউন্ডেশনাল” প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চাইছি — যার মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে আমাদের সামরিক বাহিনীগুলোকে একে অপরকে লজিস্টিক সহায়তা, সরবরাহ এবং সেবা প্রদানের সুযোগ করে দেবে।
অন্য চুক্তিটির মাধ্যমে আমাদের সামরিক বাহিনীগুলো ইচ্ছা করলে একে অপরের সাথে গোপনীয় তথ্য বিনিময় করতে পারবে এবং বিনিময়কৃত তথ্যের গোপনীয়তা/সুরক্ষা উভয়পক্ষ রক্ষা করবে।
লক্ষ্য নম্বর দুই: বাংলাদেশ গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা, বহুত্ববাদ, সহনশীলতা/পরমতসহিষ্ণুতা, সুশাসন এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সহজ কথায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অন্যান্য শাসনব্যবস্থার তুলনায় মানবাধিকার রক্ষা এবং (দেশের) সমৃদ্ধিশালী হওয়া ও টিকে থাকার ক্ষেত্রে বেশি কার্যকর।
গণতন্ত্রের অগ্রগতি/প্রসার বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক কারণ বাংলাদেশের আসন্ন সংসদ নির্বাচনের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে ।
আমি একটি বিষয় অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই: যুক্তরাষ্ট্র (কখনোই) সুনির্দিষ্টভাবে কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষ নেয় না।
আমরা যা চাই তা হলো আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী একটা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান যেখানে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের নিজেদের সরকার নির্বাচন করতে পারবে।
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা সবার দায়িত্ব।
এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে সরকার, গণমাধ্যম থেকে শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নাগরিক সমাজ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দল, সবারই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের দরকার রয়েছে।
যদি তাদের কেউ একজন নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় কিংবা তাদের কেউ একজন যদি অন্যকে তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেয় তাহলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিক্ষোভ ও সমাবেশগুলোতে সহিংস সংঘর্ষের ঘটনা আমাদেরকে এই সত্যটিই মনে করিয়ে দেয়।
রাজনৈতিক সহিংসতার পরিবেশে কোনভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
বিক্ষোভকারী, রাজনৈতিক দলসমূহ, সরকার এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রত্যেকের জন্য আইনের শাসনকে সম্মান করা এবং সহিংসতা, হয়রানি এবং ভয় দেখানো থেকে বিরত থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
লক্ষ্য নম্বর তিন: বাংলাদেশ সামাজিক ও পরিবেশগতভাবে সহিষ্ণু একটি দেশ।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং মহামারীর মতো বিষয়গুলোতে কার্যকরভাবে সাড়া দেওয়ার সক্ষমতা অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে।
আপনারা সকলেই জানেন যে বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সামান্য নীচুতে থাকা নদীবেষ্টিত ব-দ্বীপ যেখানে দীর্ঘ উপকূল ও বৃহত্ প্লাবনভূমি রয়েছে যা এই দেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ফসল বিনষ্ট করা, খাদ্য ঘাটতি, শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা এবং মশাবাহিত রোগের হুমকি বাড়ায়।
যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেতৃত্বের প্রশংসা করে এবং এই সমস্যা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গর্বিত অংশীদার।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করা বাইডেন প্রশাসনের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে প্রথমবারের মতো ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ক্লাইমেট ফাইন্যান্স প্ল্যান প্রকাশ করেন এবং জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়ন অঙ্গীকার চারগুণ করার ঘোষণা দেন যেখানে বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণদের উপর জলবায়ুর প্রভাব কমানোর জন্য এ যাবতকালের সর্বাধিক অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আমাদের সহযোগিতার আরেকটি বড় উদাহরণ হলো কোভিড-১৯ মোকাবেলা করা।
যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সাল থেকে (কোভিড-১৯ মোকাবেলায়) বাংলাদেশকে ১৪০ মিলিয়ন ডলারেরও (১,৪০০ কোটি টাকা) বেশি অনুদান সহায়তা দিয়েছে এবং প্রায় ৮ কোটি ৮০ লাখ কোভিড-১৯ টিকা ডোজ অনুদান দিয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমার সাম্প্রতিক বৈঠকে আমি বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশেরও বেশি মানুষকে টিকা দেওয়ার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছি, যা যুক্তরাষ্ট্রের টিকা দেওয়ার হারের তুলনায় বেশি।
আমি তাকে আরও বলেছি যে আমরা কোভিড-১৯ সঙ্কট মোকাবেলায় যেভাবে একসাথে কাজ করে সাফল্য অর্জন করেছি তা আমাদের যৌথ কাজের অর্জনগুলোর মধ্যে অন্যতম গর্বের বিষয়।
সত্যি বলতে কী, গত শুক্রবার আমাদের সরকারসূহ (বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যরা) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে কোভিড-১৯ বৈশ্বিক কর্মপরিকল্পনা বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠকের সহ-আয়োজক ছিল।
আমরা মহামারী মোকাবেলার ক্ষেত্রে আরো যে ঘাটতিগুলো রয়েছে সেগুলো পূরণ করতে এবং ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য হুমকি প্রতিরোধ ও মোকাবেলায় লক্ষ্যে আরো ভালো স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছি।
লক্ষ্য নম্বর চার: টেকসই ও বিস্তৃত পরিসরের সমৃদ্ধি এবং শ্রমমানের উন্নতি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সম্প্রসারিত ও বৈচিত্র্যময় করবে এবং বাংলাদেশকে বৃহত্তর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বাণিজ্য ও সংযোগ গড়ে তোলার জন্য উম্মুক্ত করবে।
আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সকল ক্ষেত্রে, আমি নিশ্চিত যে, আমরা অর্থনৈতিক বিষয়গুলোতে আরো দ্রুততার সাথে বহুদূর যেতে পারি।
আমরা বাংলাদেশের লক্ষণীয় ও যথার্থভাবে অসাধারণ অর্থনৈতিক অর্জনের প্রশংসা করি/স্বীকৃতি দেই। যুক্তরাষ্ট্র ৮ বিলিয়ন ডলার (৮০ হাজার কোটি টাকা)-এরও বেশি অনুদান সহায়তা দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রায় অংশীদারিত্ব করতে পেরে গর্বিত।
মাত্র ২০ বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের জাতীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে।
তার মানে প্রায় ৪ কোটি মানুষের দারিদ্র্য থেকে উত্তরণ ঘটেছে ।
বাংলাদেশ শিগগিরই স্বল্পোন্নত দেশের অবস্থান থেকে উত্তীর্ণ হবে এবং মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার পথে এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী) শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক আমন্ত্রণ আমাকে আনন্দিত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ব্যবসায়ী এই অঞ্চলে তাদের ব্যবসার সম্প্রসারণ করতে আগ্রহী এবং আমরা বাংলাদেশকে এমন একটি ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করতে চাই যা বিদেশী বিনিয়োগ যথাসম্ভব স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হবে।
এ ব্যাপারে আমরা কতোটা গুরুত্ব দিচ্ছি তার প্রমাণ হিসেবে বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ থেকে প্রথমবারের মতো একজন পূর্ণকালীন অ্যাটাশে-কে আগামী বছর স্বাগত জানাবে।
এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি প্রত্যক্ষ যোগাযোগ গড়ে উঠবে, সত্যি বলতে যা আরো আগেই হওয়া দরকার ছিল।
লক্ষ্য নম্বর পাঁচ: রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মানবিক সুরক্ষায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করছে এবং তাদের বার্মায় নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন সম্ভব না হওয়া পর্যন্ত আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রাখবে।
আমরা সম্প্রতি একটি মাইলফলক অতিক্রম করেছি: রোহিঙ্গাদের গণহত্যা ও তাদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটনের পাঁচ বছর পূর্তি।
এই সময়ে বাংলাদেশ তাদেরকে স্বাগত জানানো এবং তাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে অসাধারণ উদারতা ও সহানুভূতি দেখিয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের উপর যে আর্থিক বোঝা তৈরি হয়েছে আমরা সে সম্পর্কে সচেতন।
এই অসাধারণ আতিথেয়তার সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে আরো ১৭০ মিলিয়ন ডলার (১,৭০০ কোটি টাকা) সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা করেছে যা রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদেরকে আশ্রয়দাতা বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীর সহায়তায় ব্যবহার করা হবে।
নতুন এই অনুদানের মাধ্যমে রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কটে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া মোট সহায়তার পরিমাণ প্রায় ১.৯ বিলিয়ন ডলার (১৯ হাজার কোটির বেশি টাকায়)-এ পৌঁছেছে।
আমরা এই প্রচেষ্টাতে সহযোগিতা করছি এই আশায় যে, রোহিঙ্গারা শিগগিরই নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণভাবে তাদের জন্মভূতিতে ফিরে যেতে পারবে।
দুর্ভাগ্যবশত বার্মার পরিস্থিতি, বিশেষ করে সাম্প্রতিক ঘটনার পর অবস্থা এমন হয়েছে যে তাদের (রোহিঙ্গাদের) এখন নিরাপদে, স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ কিংবা টেকসই প্রত্যাবর্তন সহায়ক পরিস্থিতি নেই।
দুঃখের বিষয়, অবস্থাদৃষ্টে দেখে মনে হচ্ছে না এমন পরিস্থিতি খুব সহসা আসবে।
যুক্তরাষ্ট্র (রোহিঙ্গাদের বিষয়টি) জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা করা থেকে আরো বেশি টেকসই একটি পরিস্থিতিতে রূপান্তর করতে বাংলাদেশের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।
আমরা শরনার্থীদের উন্নতমানের শিক্ষা, জীবিকা অর্জনের উন্নততর সুযোগ তৈরি এবং শিবিরের মধ্যে আরো বেশি নিরাপত্তা তৈরিতে বাংলাদেশ সরকার এবং আন্তর্জাতিক দাতা সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করতে চাই।
পরিশেষে, এই পাঁচটি লক্ষ্য দূতাবাসে আমার টিমের সাথে কাজ করা এবং আমরা বাংলাদেশের জনগণের জন্য প্রতিদিন যে কাজ করি সেই সব কাজের এজেন্ডা বা বিষয়সূচি নির্ধারণ করে থাকে।
আমরা বিশ্বাস করি যে সবগুলো লক্ষ্য পারস্পরিকভাবে একটি অন্যটিকে সহায়তা করছে — এবং এই পাঁচটি ক্ষেত্রের সবকটিতে আমরা যতো বেশি সফল হবো যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক ততোবেশি শক্তিশালী হবে।