মানব পাচার বিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ

রাষ্ট্রদূত মিলার ও আইনমন্ত্রী হক মানব পাচার বিষয়ক ট্রাইব্যুনালের সভাপতিত্বকারী বিচারকদের জন্য ইউএসএআইডি’র ফাইট স্লেভারি অ্যান্ড ট্রাফিকিং ইন পারসন্স প্রকল্প কর্তৃক আয়োজিত এক কর্মশালার উদ্বোধন করেন।

ঢাকা, ১২ জানুয়ারি ২০২২ – রাষ্ট্রদূত মিলার এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, এমপি, ঢাকার ট্রাইব্যুনাল বিচারকদের জন্য আয়োজিত মানব-পাচার বিরোধী এক কর্মশালার উদ্বোধন করেন। ফাইট স্লেভারি অ্যান্ড ট্রাফিকিং ইন-পারসন্স (এফএসটিআইপি) প্রকল্প কর্তৃক আয়োজিত এই কর্মশালায় অর্থায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ইউএসএআইডি)। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে জোরদার সহযোগিতার ফলে মানব পাচারের (টিআইপি) বিচারের জন্য সাতটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে এবং মানব পাচার প্রতিরোধে পাঁচ বছরের একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে।

রাষ্ট্রদূত মিলার বাংলাদেশের মানব পাচার প্রতিরোধ কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার বিষয়টি তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, “মানব পাচার প্রতিরোধে আপনাদের সাথে সামিল হওয়া যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অন্যতম অগ্রাধিকার। এই কর্মশালার মাধ্যমে মানব পাচার বন্ধে বাংলাদেশ সরকার, সুশীল সমাজ, বেসরকারি খাত ও পাচারের কবল থেকে মুক্ত হওয়া ব্যক্তিদের সাথে অংশীদারিত্বের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।”

রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, “মানব পাচার হলো আধুনিক কালের দাসত্ব। আমাদের পৃথিবীতে এর কোনো স্থান নেই। কোথাও না।”

২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন থাকলেও আমেরিকা ও বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী ও বিচার বিভাগীয় অংশীজনেরা স্বীকার করেন যে, মানব পাচারের বিচার ও অপরাধ প্রমাণের হার বাড়ানো প্রয়োজন। ইউএসএআইডি’র ১০ মিলিয়ন ডলার অর্থায়নপুষ্ট এফএসটিআইপি প্রকল্পের আওতায় বিচার বিভাগের কর্মকর্তা, সরকারী আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য আয়োজিত এ সপ্তাহের কর্মশালার ন্যায় বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরো কার্যকরভাবে মানব পাচারকারীদের বিচার ও অপরাধ প্রমাণে বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট’র টিআইপি প্রতিবেদনে পরপর দুই বছর বাংলাদেশ পর্যায়-২’এ অবস্থান অর্জন করেছে। এর মাধ্যমে মানব পাচার বিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের ক্রমবর্ধমান সাফল্যের বিষয়টিই উঠে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় বাংলাদেশ সরকার পাচারকাজে জড়িত অপরাধীদের বিচারের জন্য বিচার বিভাগের সক্ষমতা জোরদার করেছে। গত পাঁচ বছরে ইউএসএআইডি পাচারকাজে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার, বিচার ও শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে ৫৬৯ জন বিচারক ও ১,০০০’রও বেশি পুলিশ, সরকারী আইনজীবী ও উকিলকে মানব পাচার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসূচী ও তহবিলের আওতায় পাচারের কবল থেকে মুক্ত হওয়া ৩,০০০ জনেরও বেশি মানুষকে আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, পরামর্শ, জীবন-দক্ষতা ও ব্যবসা-উদ্যোগ বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং চাকরি প্রদানের জন্য স্থানীয় পর্যায়ের সংস্থাগুলোকেও সহায়তা প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত মিলার; মন্ত্রী হক; মোঃ গোলাম সারওয়ার, সচিব, আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়; বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, মহাপরিচালক, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (জেএটিআই); মোঃ গোলাম কিবরিয়া, জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা বিচারক, পরিচালক- প্রশিক্ষণ, জেএটিআই।

###