•  
United States of America, Department of State

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস

Social / Search – BN

TwitterFacebookYouTube
|
[Skip to Content]
  • ভিসাসমূহ
    • নন ইমিগ্র্যান্ট ভিসা
      • পর্যটন, অস্থায়ী চাকরি, পড়ালেখা ও এক্সচেঞ্জসহ অস্থায়ী ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের জন্য

      • আরও পড়ুন
    • ইমিগ্র্যান্ট ভিসা
      • যেসব বিদেশি নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে আগ্রহী তাদের জন্য

      • আরও পড়ুন
    • ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম
      • ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম (ভিডব্লিউপি) এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর নাগরিকদের সব শর্তপূরণ সাপেক্ষে ৯০ দিন বা তার কম সময় যুক্তরাষ্ট্রে বিনা ভিসায় সফরের সুযোগ দেয়।

      • আপনি কি যোগ্য?
    • যুক্তরাষ্ট্রে সফর ও পর্যটন
      • woman standing in front of the Washington monument
      • যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ
  • যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সেবা
    • জরুরি সহায়তা
      • জরুরি পরিস্থিতিতে পড়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকরা অনুগ্রহ করে ফোন করুন, +৮৮০ ২ ৫৫৬৬২০০০ কল করুন।

        অফিস সময়ের বাইরে, যোগাযোগ করুন: +৮৮০ ২ ৫৫৬৬২০০০, আপনি রেকর্ড করা বার্তাটি শুনলে দয়া করে "৩" টিপুন এবং আপনি ডিউটি অফিসারের সাথে সংযুক্ত হবেন।

        বাংলাদেশের বাইরে: +৮৮০ ২ ৫৫৬৬২০০০

  • আমাদের সম্পর্ক
    • যুক্তরাষ্ট্র মিশনের প্রধানরা
      • রাষ্ট্রদূত পিটার হাস
      • ডেপুটি চিফ অফ মিশন হেলেন লা-ফেইভ
    • যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নেতৃবৃন্দ
      • যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট
      • যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট
      • যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট
    • যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ
      • নীতি ও ইতিহাস
      • সরকারি প্রতিবেদন
  • ব্যবসা-বাণিজ্য
    • বাংলাদেশে ব্যবসা করা বিষয়ে
      • বাংলাদেশে কাজ শুরু করা
      • বৈদেশিক নিরাপত্তা পরামর্শ কাউন্সিল
      • অর্থনৈতিক উপাত্ত ও প্রতিবেদনসমুহ
    • যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করা বিষয়ে
      • যুক্তরাষ্ট্রে যেভাবে শুরু করবেন
      • যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উপাত্ত ও প্রতিবেদন
  • শিক্ষা ও সংস্কৃতি
    • যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা
      • যুক্তরাষ্ট্রে মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন সুযোগ সম্পর্কে আরও জানুন, যেমনটি বিশ্বের আর কোথাও পাবেন না।

      • পছন্দমত সুযোগ খুঁজে নিন
    • আমেরিকান স্পেসস
      • দ্য আমেরিকান সেন্টার
      • আর্চার কে ব্লাড লাইব্রেরি
      • আমেরিকান কর্নার চট্টগ্রাম
      • আমেরিকান কর্নার খুলনা
      • আমেরিকান কর্নার সিলেট
      • আমেরিকান কর্নার রাজশাহী
      • ইএমকে সেন্টার
    • স্থানীয় প্রোগ্রামগুলো
      • ইংরেজি ভাষা বিষয়ক প্রোগ্রামগুলো
      • স্কলারদের জন্য প্রোগ্রামগুলো
      • প্রফেশনালদের জন্য প্রোগ্রামগুলো
      • স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামগুলো
  • দূতাবাস
    • যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস
      • যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ঢাকা
      • মাদানি অ্যাভিনিউ, বারিধারা,

        ঢাকা-১২১২

        বাংলাদেশ

        টেলিফোন: (৮৮০) (২) ৫৫৬৬-২০০০

    • আমাদের সঙ্গে কাজ করুন
      • a group of people in business attire with hands raised

      • দূতাবাসে চাকরির সুযোগ
    • আর্থিক তহবিলের সুযোগ-সুবিধা
      • Grants Corner

      • অনুদান এবং সংগ্রহ
    • বায়ুমান সূচক
      • বাংলাদেশের ঢাকার বায়ুমানের সরাসরি/সার্বক্ষণিক তথ্য। আরও জানুন।

      • আরও জানুন
  • খবর ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান
      • প্রেস বিজ্ঞপ্তি
        • U.S. Embassy Inaugurates the Second-Ever Cohort of the “Academy for Women Entrepreneurs (AWE)” Program in Bangladeshযুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় “একাডেমি ফর উইমেন এন্টারপ্রেনারস (এডব্লিউই)” কার্যক্রমের দ্বিতীয় কোহর্ট উদ্বোধন করেছে
        • Minnesota Students Exchange with Bangladeshi Students about U.S. Education opportunitiesযুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার সুযোগ নিয়ে মিনেসোটা ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা বিনিময়
        • যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এখন সর্বকালের মধ্যে সর্বোচ্চ
        • USAID Deputy Assistant Administrator Änjali Kaur Visits Bangladeshঅর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান তুলে ধরতে বাংলাদেশ সফর করেছেন ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর
      • খবর
        • USAID Deputy Assistant Administrator Änjali Kaur Visits Bangladeshঅর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান তুলে ধরতে বাংলাদেশ সফর করেছেন ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর
        • Inauguration of New Location for Edward M. Kennedy (EMK) Centerনতুন ঠিকানায় এডওয়ার্ড এম কেনেডি (EMK) সেন্টারের উদ্বোধন
        • সংসদে সাইবার নিরাপত্তা আইন পাস বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বিবৃতি
        • Statement on Odhikarঅধিকার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রায়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বিবৃতি
      • যুক্তরাষ্ট্র ও (বাংলাদেশ)
        • Minnesota Students Exchange with Bangladeshi Students about U.S. Education opportunitiesযুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার সুযোগ নিয়ে মিনেসোটা ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা বিনিময়
        • যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এখন সর্বকালের মধ্যে সর্বোচ্চ
        • USAID Deputy Assistant Administrator Änjali Kaur Visits Bangladeshঅর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান তুলে ধরতে বাংলাদেশ সফর করেছেন ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর
        • Inauguration of New Location for Edward M. Kennedy (EMK) Centerনতুন ঠিকানায় এডওয়ার্ড এম কেনেডি (EMK) সেন্টারের উদ্বোধন
      • রাষ্ট্রদূত
        • Inauguration of New Location for Edward M. Kennedy (EMK) Centerনতুন ঠিকানায় এডওয়ার্ড এম কেনেডি (EMK) সেন্টারের উদ্বোধন
        • ক্লাইমেট অ্যাকশন চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের আয়োজন
        • Ambassador Haas inaugurated new American Corner in Rajshahiরাষ্ট্রদূত পিটার হাস নতুন স্থানে স্থাপিত ‘আমেরিকান কর্নার রাজশাহী’-র উদ্বোধন করেন
        • English Access Microscholarship Programযুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস আয়োজিত ইংলিশ অ্যাক্সেস মাইক্রো-স্কলারশিপ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে ২০০ নতুন শিক্ষার্থী
      • ভাষণসমূহ
        • রোহিঙ্গা গণহত্যার ষষ্ঠ বার্ষিকী
        • Remarks by U.S. Ambassador Peter Haas Inauguration of Roots of Friendshipযুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০ বছর শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্য
        • "বাংলাদেশে অনলাইন স্বাধীনতা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ" শীর্ষক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস-এর বক্তব্য“বাংলাদেশে অনলাইন স্বাধীনতা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ” শীর্ষক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস-এর বক্তব্য
        • Helen LaFave’s at the National Workshopমানব পাচার সংক্রান্ত জাতীয় কর্মশালায় চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফাভ-এর বক্তৃতা
      • শেয়ারআমেরিকা থেকে সর্বশেষ পাওয়া
          • ব্লিঙ্কেন: আমেরিকার ‘সর্বোত্তম কৌশলগত সম্পদ’ হল অংশীদারিত্ব
            ব্লিঙ্কেন: আমেরিকার ‘সর্বোত্তম কৌশলগত সম্পদ’ হল অংশীদারিত্ব
            অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন কথা বলছেন (© ক্লিফ ওয়েন/এপি)

            সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সমাধানে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে কাজ করার মাধ্যমে সবার জন্য আরো সমৃদ্ধ ও নিরাপদ বিশ্ব প্রতিষ্ঠার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের রূপকল্পের কেন্দ্রে রয়েছে।

            গত ১৩ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক এক বক্তৃতায় সেক্রেটারি বলেছেন, “আমাদের কর্মকৌশলের মূল বিষয় হলো আমেরিকার সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলগত সম্পদ তথা জোট ও অংশীদারিত্বকে পুনঃনিবিষ্ট, পুনরুজ্জীবিত ও পুনর্গঠিত করা।”

            ব্লিঙ্কেন বলেন, কোল্ড ওয়ার-পরবর্তী যুগে শুরু হওয়া বিভিন্ন সংকট যেমন, জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদ ইত্যাদি কোনো দেশের পক্ষে একা সমাধান করা সম্ভব নয়। সে কারণেই যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারদের সাথে যেসব লক্ষ্য নিয়ে কাজ করেছে:

            • লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষিখাতে উন্নতির জন্য ১০০ টিরও বেশি দেশকে সমবেত করা।
            • রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের সমর্থনে ৫০টি দেশকে সমবেত করা।
            • উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অবকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে G7-ভুক্ত দেশগুলোকে সাথে নিয়ে ৬০০ বিলিয়ন ডলার সংস্থান করা।
            মানবিক সহায়তার বাক্স বহন করে ভবনের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে এক ব্যক্তি (© ইভগেনি মালোলেটকা/এপি)
            A man receives humanitarian aid provided by UN World Food Program and ADRA charity organisation for the residents of the region and internally displaced persons at the distribution center in Kostiantynivka, Ukraine, Friday, Feb. 10, 2023. (AP Photo/Evgeniy Maloletka)

            সেক্রেটারির বক্তব্যের কিছু উদ্ধৃতি এখানে দেয়া হলো:

            • “আমরা নতুন নতুন উপায়ে আমাদের বন্ধুত্বকে আরো গভীর, প্রসারিত ও জোটবদ্ধ করার জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে গুরুত্বের সাথে কাজ করছি যাতে আমরা নতুন যুগের তিনটি জরুরী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারি।”
            • “আমাদের ভবিষ্যৎ রূপকল্প হলো এমন এক বিশ্ব গড়ে তোলা যা হবে অবাধ, উন্মুক্ত, সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত এবং এই রূপকল্প আমেরিকার একার নয়, বরং এটি প্রত্যেক মহাদেশের প্রতিটি দেশের মানুষের দীর্ঘস্থায়ী আকাঙ্খা।”
            • “আমরা যেকোন দেশের সাথে এমনকি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যাদের সাথে আমাদের দ্বিমত রয়েছে তাদের সাথেও কাজ করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ – যতক্ষণ তারা তাদের নাগরিকদেরকে সেবা দিতে, সম্মিলিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অবদান রাখতে এবং আন্তর্জাতিক রীতিনীতি বজায় রাখতে চায়।”
            • “বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আমরা আমাদের পুরানো ও নতুন জোটগুলোকে সমবেত করছি।”
            • “আমাদের অবশ্যই ইতিহাসের রাডারে হাত রাখতে হবে এবং অনিশ্চিত সময়েও বিভিন্ন নিশ্চিত বিষয় যেমন আমাদের মূলনীতি, আমাদের অংশীজন এবং আমরা যেখানে পৌঁছাতে চাই সেই লক্ষ্যে পরিচালিত হয়ে সামনের পথ তৈরি করতে হবে।”

            প্রেসিডেন্ট বাইডেন ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।

          • ২০২১ সালের ম্যাকআর্থার ‘জিনিয়াস গ্র্যান্ট’ উদ্ভাবকদের সাফল্য উদ্‌যাপন [ভিডিও]
            ২০২১ সালের ম্যাকআর্থার ‘জিনিয়াস গ্র্যান্ট’ উদ্ভাবকদের সাফল্য উদ্‌যাপন [ভিডিও]
            ২৫ জন ম্যাকআর্থার অনুদান বিজয়ীর হেডশট সহ ভিডিওর উদ্বোধনী শট (© জন ডি. এবং ক্যাথরিন টি. ম্যাকআর্থার ফাউন্ডেশন)

            ২০২১ সালে যে ২৫ জন ব্যক্তি ম্যাকআর্থার ফাউন্ডেশন ফেলোশিপ পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক প্রযুক্তি নকশাবিদ, এক ল্যান্ডস্কেপ ইকোলজিস্ট এবং এক বেতার প্রযোজক, যিনি আমেরিকার স্প্যানিশভাষী জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করছেন। এই ফেলোশিপকে প্রায়ই “জিনিয়াস গ্র্যান্টস” নামে ডাকা হয়।

            এই কর্মসূচির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিসিলিয়া কনরাড বলেছেন, “আমরা যখন গত দুই বছরের ছায়া থেকে বেরিয়ে আসছি, তখন ২৫ জনের এই দল আমাদের আবার কল্পনা করতে সাহায্য করেছে যে আসলে কী করা সম্ভব। তাঁরা দেখিয়েছেন, সৃজনশীলতার কোনো সীমানা নেই।”

            ৪০তম বার্ষিকী উদযাপন করা এই কর্মসূচি শিল্প, অ্যাডভোকেসি, ইতিহাস, সাহিত্য এবং বিজ্ঞানের প্রতিভাবান মানুষদের সহায়তা করে। বিজয়ীদের বেছে নেওয়া হয় তাদের সাফল্যের রেকর্ড ও ভবিষ্যৎ অর্জনের প্রবল সম্ভাবনার ওপর ভিত্তি করে।

            এই ফেলোশিপে রয়েছে ৬ লাখ ২৫ হাজার ডলার পুরস্কার, যার সঙ্গে কোনো শর্ত জোড়া নেই। বিজয়ীদের কোনো নির্দিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন বা কোনো প্রতিবেদনও তৈরি করতে হয় না।

            শিকাগোভিত্তিক জন ডি. অ্যান্ড ক্যাথরিন টি. ম্যাকআর্থার ফাউন্ডেশনের এই ফেলোশিপ “জিনিয়াস গ্র্যান্টস” নামে বহুল পরিচিত, যদিও ফাউন্ডেশনটি এই নাম এড়িয়ে চলে। প্রতিষ্ঠানটি বলে থাকে, ব্যক্তিগত ও ধারণাগত বাধার মুখে ঝুঁকি নেওয়ার ইচ্ছা এবং অধ্যবসায়সহ অনেক গুণ রয়েছে এই ফেলোদের।

            কর্মসূচির পরিচালক মার্লিস ক্যারাথের মতে, অনেক অনুদান বিজয়ী “একেবারে গোড়া থেকে শুরু করে, সম্পূর্ণভাবে” বর্তমানের সামাজিক বা পরিবেশগত সমস্যা সমাধান করেন।

            পরিচিত হোন ২০২১ ম্যাকআর্থার ফেলোদের কয়েকজনের সঙ্গে:

            ম্যাকআর্থার ফাউন্ডেশন বিজয়ীদের পাঁচজনের মুখচ্ছবি (© জন ডি. অ্যান্ড ক্যাথরিন টি. ম্যাকআর্থার ফাউন্ডেশন)
            ২০২১ ম্যাকআর্থার ফাউন্ডেশন ফেলোশিপ বিজয়ীরা (বাম থেকে): রেজিনাল্ড ডোয়াইন বেটস, ড্যানিয়েল অ্যালারকন, জ্যাকুলিন স্টুয়ার্ট, জোশুয়া মিল এবং লিসা শুল্টি মুর। (© জন ডি. অ্যান্ড ক্যাথরিন টি. ম্যাকআর্থার ফাউন্ডেশন)

            রেজিনাল্ড ডোয়াইন বেটস, একজন কবি ও আইনজীবী। তিনি ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা নিয়ে কবিতা লেখেন এবং কারাবন্দিদের জন্য সাহিত্যের প্রাপ্তি বাড়াতে কাজ করেন।

            ড্যানিয়েল অ্যালারকন, একজন লেখক ও বেতার প্রযোজক। তিনি সেই সব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনকে তুলে ধরেন, যা আমেরিকাজুড়ে স্প্যানিশ ভাষাভাষী সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সংযোগ তৈরি করে।

            জ্যাকুলিন স্টুয়ার্ট, একজন চলচ্চিত্র পণ্ডিত। সিনেমাকে শিল্পের একটি রূপ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে, উপেক্ষিত কৃষ্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অবদানকে সবার নজরে আনেন তিনি।

            জোশুয়া মিল, একজন প্রযুক্তি নকশাবিদ। তিনি অন্ধ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ব্যবহারের জন্য যন্ত্র তৈরি করেন। যেমন, স্পর্শানুভূতিসম্পন্ন সড়ক-মানচিত্র।

            লিসা শুল্টি মুর, একজন ল্যান্ডস্কেপ ইকোলজিস্ট। তিনি অধিকতর টেকসই কৃষি ব্যবস্থা নির্মাণে কৃষকদের সহায়তা করেন, এমন সংরক্ষণ কৌশলের মাধ্যমে, যা মাটির উর্বরতা কমায় না এবং দূষণও ঘটায় না।

            তৃতীয় পক্ষ মনোনয়ন দেয় বলে এর বাছাই প্রক্রিয়া গোপনীয় রাখা হয়। বিজয়ীদের পুরস্কার প্রাপ্তির খবর জানানো হয় টেলিফোনে এবং মনোনয়ন সম্পর্কেও তাদের আগে থেকে জানা থাকে না।

            অনুদান বিজয়ীদের অবশ্যই মার্কিন নাগরিক হতে হয় অথবা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে হয়।  ১৯৮১ সাল থেকে ১০৬১ জন এই পুরস্কার জিতেছেন। অন্য ফেলোদের সম্পর্কে আরও পড়ুন, ম্যাকআর্থার ফেলোস সাইটে।

          • সঙ্গীতের সাহায্যে কূটনীতি: পারস্পরিক জীবনবোধ দেখা
            সঙ্গীতের সাহায্যে কূটনীতি: পারস্পরিক জীবনবোধ দেখা
            সঙ্গীতশিল্পীরা একত্রিত হচ্ছে, তাদের কেউ কেউ সিড়িতে বসেছে (© আলেক্সিয়া ওয়েবস্টার/ওয়ানবিট)

            আমেরিকান সঙ্গীতশিল্পীরা কয়েক দশক ধরে বিভিন্ন দেশে ভালো বোঝাপড়া গড়ে তুলতে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের অংশ হিসেবে বিশ্বজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। 

            সঙ্গীতের সাহায্যে কূটনীতির এই ধারাটি গড়ে উঠেছিল মধ্য পঞ্চাশের দশকে। সেই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট লুই আর্মস্ট্রং, ডিউক এলিংটন, ডিজি গিলেস্পি এবং সারাহ ভন এর মতো বিখ্যাত জ্যাজ শিল্পীদের সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কনসার্টের আয়োজন করেছিল, যেখানকার মানুষেরা আমেরিকান সঙ্গীতশিল্পীদের কনসার্ট খুব কমই দেখেছে। 

            এই জ্যাজ অ্যাম্বাসেডর বা দূতরা আফ্রিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ আমেরিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ভ্রমণ করেন। তাদের কনসার্টগুলোয় ভীড়ও হয়েছিল প্রচুর। দেশগুলোতে তারা বিভিন্ন স্কুল পরিদর্শন এবং স্থানীয় সঙ্গীতশিল্পীদের সাথে মিলে গানও করেছিলেন । তাদের অনেকে উচ্চ সুরের, নিজস্ব সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন যা নিয়ে বেশ আলোচনা–সমালোচনা হয়েছিল। এসব আমেরিকান সমাজের সাধারণ ঘটনা এবং গণতন্ত্রের প্রতিফলন। 

            মুক্ত–স্বাধীনতা বিনিময় 

            “জ্যাজ সঙ্গীত রচনা আপনি নিদ্বির্ধায় করতে পারেন।জ্যাজ আপনাকে শুনতেই হবে,” উল্লেখ করে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক ডিপ্লোমেসির অধ্যাপক ২০০৯ সালে ভয়েস অফ আমেরিকাকে বলেছিলেন, “এই দুটোই (জ্যাজ ও স্বাধীনতা) আমেরিকান রাজনৈতিক ব্যবস্থার একদম মধ্যমনি হয়ে বসে আছে। এবং এই নীতি অভিজ্ঞতা ও স্বাধীনতা অন্যদের সাথে ভাগ না করে জ্যাজ আপনি শুনতে পারবেন না।”  

            স্যুট পরা লুই আর্মস্ট্রং স্ফিঙ্কসের সামনে ট্রাম্পেট বাজাচ্ছেন, আর তার স্ত্রী লুসিল দেয়ালে বসে দেখছেন (© ইউনিভার্সেল আর্কাইভ/ইউনিভার্সেল ইমেজ গ্রুপ/গেটি ইমেজস)
            লুই আর্মস্ট্রং ১৯৬১ সালে মিশরে স্ত্রী লুসিলের জন্য ট্রাম্পেট বাজাচ্ছেন (© ইউনিভার্সেল আর্কাইভ/ইউনিভার্সেল ইমেজ গ্রুপ/গেটি ইমেজ)

            কিংবা ৪১ বছর ধরে ভয়েস অফ আমেরিকা (ভোয়া)-র জ্যাজ আওয়ার অনুষ্ঠানের উপস্থাপক উইলিস কনোভার ১৯৫০ এর দশকে যেমন বলেছিলেন: মানুষ জ্যাজ ভালোবাসে কারণ তারা স্বাধীনতাকে পছন্দ করে।“১৯৫৫ সালে নিউইয়র্ক টাইমস জ্যাজ–কে তৎকালীন স্নায়ুযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আমেরিকার “গোপন সঙ্গীত অস্ত্র” হিসেবে অভিহিত করেছিল।  

            সময়ের ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গীতের সাহায্যে কূটনীতির ক্ষেত্রে জ্যাজ ছাড়াও আমেরিকান সঙ্গীতের বৈচিত্র্যময় অন্যান্য ধারাগুলো যুক্ত হতে থাকে: 

            • যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আমেরিকান মিউজিক অ্যাব্রোড  কার্যক্রমের অধীনে প্রতি বছর নতুন প্রজন্মের সঙ্গীত দূতদের বিশ্বের ৩০টি দেশে পাঠানো হচ্ছে যেখানে তারা রক–এন–রোল থেকে শুরু করে কান্ট্রি মিউজিক এবং হিপ–হপ থেকে শুরু করে ধর্মীয় ধারার সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকে। এ পর্যন্ত আমেরিকান মিউজিক অ্যাব্রোড কর্মসূচির অধীনে শিল্পী ও শিক্ষাবিদরা ছয়টি মহাদেশের ১১০টিরও বেশি দেশ সফর করেছে।
            • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গীত কূটনীতির আরেকটি উদ্যোগ নেক্সট লেভেল,, যার মাধ্যমে নৃত্য, সঙ্গীত ও আর্ট শিল্পী ও শিক্ষাবিদদের বিদেশে পাঠানো হয় যাতে করে তারা সেখানকার তরুণ ও সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি করতে ভূমিকা রাখতে পারে।
            • ওয়ানবিট এক্সচেঞ্জ কর্মসূচি সঙ্গীত তৈরিতে এবং যৌথ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৌশল খুঁজে পেতে বিশ্বের জনরা–বেন্ডিং নিয়ে কাজ করা সঙ্গীতশিল্পীদের একত্রিত করার লক্ষ্যে নিয়োজিত। ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর আফ্রিকার সঙ্গীতশিল্পীরা তাদের সমাজকে গঠন করেছিল এমন ঐতিহ্যবাহী ব্ল্যাক ডায়াস্পোরিক সঙ্গীত ধারা রেকর্ড করা, পরিবেশন ও নিরীক্ষা করার জন্য আলজেরিয়াতে একত্রিত হয়েছিল। । ওয়ানবিটের মাধ্যমে ৬৮টি দেশের ৫০০ এরও বেশি সঙ্গীতশিল্পী যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৩টি দেশের ৪৯টি শহর ভ্রমণ করেছেন।

            এক লক্ষ্যে কাজ করা 

            ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট বাইডেন সঙ্গীত কূটনীতি আইনের মাধ্যমে শান্তি, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়ানোর লক্ষ্যে বেসরকারি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করে সঙ্গীত কূটনীতির অংশীদারিত্ব তৈরি করা ও শান্তিতে অবদান রাখা সঙ্গীতশিল্পীদের স্বীকৃতি দিতে উভয় দলের সিদ্ধান্তে গৃহীত “প্রমোটিং পিস, এডুকেশন অ্যান্ড কালচারাল এক্সচেঞ্জ (পিস)” আইনে স্বাক্ষর করেন। 

            স্টেট সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন নিজে একজন সঙ্গীত উৎসাহী  ব্যক্তি ও নিজেকে অপেশাদার গিটারিস্ট হিসেবে উল্লেখ করেন, তিনি আমেরিকান সঙ্গীতশিল্পীদের কাজ নিয়ে বলেছেন, তারা “মানুষকে পারস্পরিক মানবতা দেখতে সহায়তা করে, এক লক্ষ্যে কাজ করার বোধ তৈরি করে, আমাদের যারা ভুল বোঝে তাদের ধারণা পরিবর্তন করে এবং আমেরিকার কথাগুলো এমনভাবে বলে যা কোন নীতি কিংবা বক্তৃতার মাধ্যমে বলা কখনো সম্ভব ছিল না।“ 

          • জাতিসংঘে সহযোগিতা, সহনশীলতা ও শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন
            জাতিসংঘে সহযোগিতা, সহনশীলতা ও শান্তির আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন
            জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বক্তৃতার দৃশ্য (© রিচার্ড ড্রিউ/এপি)

            বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন শিশুরা ক্ষুধার্ত থাকবে না, সুযোগ সবার জন্য উম্মুক্ত হবে ও বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে নিষ্পত্তি হবে এমন ভবিষ্যত পৃথিবী গড়ে তুলতে চায় এমন যে কোনো দেশের সাথে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

            “যুক্তরাষ্ট্র সব মানুষের জন্য আরও নিরাপদ, আরও সমৃদ্ধ, আরও ন্যায্য বিশ্ব চায়,” উল্লেখ করে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে দেয়া বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, “আমরা জানি আমাদের ভবিষ্যত আপনাদের সাথে যুক্ত। এবং এখন আর কোনও একটি দেশের পক্ষে এককভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্ভব না।“

            প্রেসিডেন্ট বাইডেন জলবায়ু সংকট মোকাবেলা, উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা কমানো ও রোগ মোকাবেলায় দেশগুলোকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি দেশগুলোর প্রতি জাতিসংঘ নির্ধারিত সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং মানবাধিকারের ভিত্তি মূল্যবোধ রক্ষার আবশ্যকতায় জোর দেন।

            At U.N., Biden calls for cooperation, resilience and peace

            প্রেসিডেন্ট বাইডেন দেশগুলোর প্রতি বৃহত্তর সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র একটি আরও নিরাপদ, উন্নত বিশ্ব গড়তে কী ধরনের প্রচেষ্টা নিয়েছে তার একটি রূপরেখা তুলে ধরেন।

            আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে এগিয়ে নেওয়া

            বাইডেন বৈশ্বিক/আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে আরো বেশি সাড়াদানকারী, কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরাম জি২০ জোটের স্থায়ী সদস্য হিসেবে আফ্রিকান ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্তির প্রশংসা করেন।

            প্রেসিডেন্ট বলেন যে তার প্রশাসন বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ২৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসকে অতিরিক্ত অর্থায়নের জন্য অনুরোধ করেছে।

            প্রেসিডেন্ট বাইডেন হাত ধরে অন্য চারজনের সাথে ছবির জন্য পোজ দিচ্ছেন (© ইভান ভুচি/এপি)
            বাইডেন নয়াদিল্লিতে ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে (বাম থেকে) বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা-র সাথে যোগ দেন। (© ইভান ভুচি/এপি)

            টেকসই অবকাঠামো গড়ে তোলা

            বাইডেন জানান যে, যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রুপ অফ সেভেন অন্যান্য সদস্য দেশগুলো ২০২৭ সালের মধ্যে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতে ৬০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ আনার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে।

            জলবায়ু সংকট মোকাবেলা করা

            জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় বৃহত্তর বৈশ্বিক বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের তাপপ্রবাহের কথা উল্লেখ করেন। এছাড়াও তিনি উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ ইউরোপের দাবানল এবং লিবিয়ায় ভয়াবহ বন্যার কথাও উল্লেখ করেন।

            গত বছর যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু সংকট মোকাবেলা ও বৈশ্বিক পরিচ্ছন্ন জ্বালানি শক্তির অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে বিশ্বের বৃহত্তম বিনিয়োগ অনুমোদন করেছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত প্যাসিফিক আইল্যান্ডস ফোরাম-এর সাথেও কাজ করছে যাতে করে দেশগুলোকে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় সহায়তা করা যায়।

            উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন থেকে সৃষ্ট সঙ্কট মোকাবেলায় অভিঘাতসহনশীলতাকে এগিয়ে নিতে এই বছর প্যারিস চুক্তির প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ব সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় আরো বেশি সরকারি-বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে খারাপ প্রভাবের মুখোমুখি দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য।

            খাদ্য নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন

            প্রেসিডেন্ট বাইডেন জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যা দারিদ্র্যের অবসান এবং বৈষম্য কমানোর পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং পরিবেশ রক্ষা করতে চায়।

            প্রেসিডেন্ট বাইডেন আরো বলেন যে, সংঘাত, জলবায়ু সঙ্কট এবং কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং বৈশ্বিক খাদ্য সঙ্কটে ভূমিকা পালন করছে। যুক্তরাষ্ট্র ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে, খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে ও রোগ মোকাবেলায় ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে।

            ইউক্রেনের জনগণের পাশে দাঁড়ানো

            (বিশ্বের) দেশগুলোকে অবশ্যই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে যাতে করে নৃশংসতা, অন্যায় যুদ্ধ এবং ভবিষ্যৎ আগ্রাসন রোধ করা যায় উল্লেখ করে বাইডেন প্রশ্ন রাখেন, “আমরা যদি একজন আগ্রাসীকে তুষ্ট করার জন্য [ইউএন চার্টার] এর মূল নীতিগুলো থেকে সরে আসি তাহলে এই সংস্থার কোন সদস্য রাষ্ট্র কী সুরক্ষিত থাকার ব্যাপারে আস্থা পাবে?”

            হুইলচেয়ারে বসে থাকা মানুষ স্মৃতিসৌধের দিকে তাকিয়ে (© পিয়েরে ক্রোম/গেটি ইমেজেস)
            গত ১৭ সেপ্টেম্বর একজন দর্শনার্থী ইউক্রেনের বুচাতে রাশিয়ার শহর দখলের সময় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে তৈরি স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। (© পিয়েরে ক্রোম/গেটি ইমেজেস)

            “যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের সাথে মিলে ইউেক্রেনের সাহসী জনগণের নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার যে লড়াই তার সাথে থাকবে,” বাইডেন বলেছেন। “এবং তাদের স্বাধীনতা“ (রক্ষায় তাদের সাথে থাকবে)।

             

          • স্টেট সেক্রেটারিদের ছবির গ্যালারিতে যুক্ত হলো ক্লিনটনের প্রতিকৃতি
            স্টেট সেক্রেটারিদের ছবির গ্যালারিতে যুক্ত হলো ক্লিনটনের প্রতিকৃতি
            Photo illustration showing Hillary Clinton's portrait in a frame surrounded by other portraits of secretaries of state (Courtesy of the Diplomatic Reception Rooms, U.S. Department of State) Photo © Rawpixel.com/Shutterstock.com Clinton photo: (© Steven Polson)

            স্টেট ডিপার্টমেন্ট এই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ৬৭তম স্টেট সেক্রেটারি হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটনের একটি ছবি উন্মোচন করেছে। এটি ঐতিহাসিক ও শৈল্পিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছবির গ্যালারিতে যুক্ত করা হয়েছে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম স্টেট সেক্রেটারি থমাস জেফারসনসহ তার উত্তরসূরিদের ছবি রয়েছে৷

            থমাস জেফারসনের প্রতিকৃতি (স্টেট ডিপার্টমেন্ট)
            চার্লস উইলসন পিলের আঁকা থমাস জেফারসনের প্রতিকৃতি (স্টেট ডিপার্টমেন্ট)

            এই গ্যালারিতে আমেরিকার প্রতিষ্ঠার সময় থেকে কূটনীতির সম্পূর্ণ ইতিহাসসহ ১৮ শতক থেকে বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত বিরল চীনামাটির বাসন, প্রাচীন আসবাবপত্র ও তৈলচিত্র সংরক্ষিত রয়েছে। সংগ্রহশালা ডিপ্লোম্যাটিক রিসিপশন রুমস এর পরিচালক ভার্জিনিয়া হার্ট বলেন স্টেট সেক্রেটারিদের প্রতিকৃতি দেশের শিল্পের বিকাশের দিকগুলোও তুলে ধরে।

            গ্যালারিতে থাকা প্রথম দিককার প্রতিকৃতির/ছবিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো জেফারসনের ছবি। ১৮০১ সালে আমেরিকার তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ১৭৯০ থেকে ১৭৯৩ সালে স্টেট সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জেফারসন তার ছবি আঁকার জন্য কয়েজন চিত্রশিল্পীকে সময় দিয়েছিলেন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের ১৭৯১টি পোর্ট্রেট বা প্রতিকৃতি চার্লস উইলসন পিলে এঁকেছেন, তার মধ্যে প্রথম স্টেট সেক্রেটারির ছবিটা তার আঁকা ছবির মধ্যে অন্যতম।

            তিনি একটি সাধারণ সমতল পটভূমিতে পোজ দিয়েছেন (আমেরিকান শিল্পীরা নেতৃবৃন্দকে আরো বেশিমাত্রায় তুলে ধরার জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে পটভূমিতে পরিবর্তন এনেছে এবং তাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে বোঝানোর জন্য সাজসজ্জাকে সরিয়ে দিয়েছে।)

            চল্লিশের কোঠায় থাকা জেফারসনকে তারুণ্যে ভরপুর ও সজাগ-সতর্ক দেখাচ্ছে, দূরে তাঁকিয়ে থাকা অবস্থায় তার মাথা তিন-চতুর্থাংশ ঘুরানো দেখানো হয়েছে। প্রতিকৃতির মধ্য দিয়ে একজন রাষ্ট্রনায়কের ছাপ তৈরি করা হয়েছে যিনি একটি তরুণ জাতিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যারা স্ব-শাসনে উজ্জীবিত।

            প্রতিকৃতি বিশেষজ্ঞ জেসমিন সেওয়েল এর নিউইয়র্ক-ভিত্তিক কোম্পানি সেওয়েল ফাইন পোর্ট্রেচার সমসাময়িক প্রতিকৃতি শিল্পীদের প্রতিনিধিত্ব করে, তিনি বলেছেন যে, ১৮ ও ১৯ শতকের আমেরিকান শিল্পীরা তাদের সমসাময়িক ইউরোপীয় শিল্পীদের কলাকৌশলগুলো সম্পর্কে জানতে বিদেশে গিয়েছিলেন কারণ তখনও মিউজিয়াম ও আর্ট একাডেমিগুলো নতুন বিশ্বে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

            সেওয়েল বলেন যে, আমেরিকান চিত্রশিল্পীরা সেই সময়ে তাদের ইউরোপিয়ান সহকর্মীদের রং, টোন ও কম্পোজিশন বিশেষভাবে লক্ষ্য করতেন ও নোট নিতেন বিশেষ করে জোশুয়া রেনল্ডস এবং থমাস গেইনসবরোর কাজের তাদের বিশেষ মনোযোগ ছিল।

            যদিও সেই যুগের শিল্পীদের কেউ কেউ প্রতিকৃতি তৈরিতে নমনীয়তা দেখাননি বা কঠোর ছিলেন তবে অন্যরা মর্যাদাপূর্ণ প্রতিকৃতির চিত্র তৈরি করার উপায় খুঁজে পেয়েছিলেন যা মৌলিকতার জন্য জায়গা করে নিয়েছিল। কেবিনেট সেক্রেটারিদের প্রতিকৃতি মোটামুটিভাবে প্রচলিত ধারণাকেই উপস্থাপন করেছে তবে স্টেট ডিপার্টমেন্টের সংগ্রহশালার কিছু কিছু প্রতিকৃতি সময়কে ছাড়িয়ে গিয়েছে।

            বাম থেকে এলিহু বেঞ্জামিন ওয়াশবার্ন, টমাস এফ বেয়ার্ড এবং ডিন অ্যাচেসনের প্রতিকৃতি (স্টেট ডিপার্টমেন্ট)
            বাম থেকে: এলিহু বেঞ্জামিন ওয়াশবার্ন, থমাস এফ বেয়ার্ড এবং ডিন অ্যাচেসন (স্টেট ডিপার্টমেন্ট)

            জর্জ পিটার আলেকজান্ডার হিলির ১৮৮৩ সালে আঁকা ইলিহু বেঞ্জামিন ওয়াশবার্নের প্রতিকৃতির কথাই ধরুন (বাম দিকে, উপরে)। তিনি যেন আঁকা ছবিতে জীবনকে তুলে এনেছেন। এখানে দেখা যায় ওয়াশবার্ন সামনের দিকে ঝুঁকে বসে দর্শকের চোখের দিকে তাঁকিয়ে আছেন। এই ভঙ্গিটি তার চরিত্রের দৃঢ়তাকে তুলে ধরেছে। আরেকটি উদাহরণ হল ১৮৯৭ সালে জন সিঙ্গার সার্জেন্টের আঁকা টমাস এফ বেয়ার্ডের প্রতিকৃতি (উপরে মাঝে)। তুলির আলগা আচড়গুলো চরিত্রটিকে ফুঁটিয়ে তুলেছে ও একটি আধুনিকতার ছাপ দিয়েছে এবং কিছুটা ছায়ায় থাকা বেয়ার্ডের মুখ মনোযোগের কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।

            খুব সাম্প্রতিককালে ১৯৫০ এ গার্ডনার কক্সের আঁকা ডিন অ্যাচেসনের প্রতিকৃতি প্রচলিত ধারণা থেকে বের হয়ে একটা বিমূর্ত পটভূমিতে আঁকা হয়েছে। এর পটভূমি ছবিটিকে মধ্য শতকের সমসাময়িক কাজ হিসেবে তুলে ধরেছে।

            একুশ শতকের প্রতিকৃতি

            ক্লিনটনের প্রতিকৃতি স্টিভেন পোলসনের আঁকা; যিনি ক্লিনটন ছাড়াও সাবেক স্টেট সেক্রেটারি ম্যাডেলিন অলব্রাইট, কলিন পাওয়েল এবং কন্ডোলিজা রাইসের প্রতিকৃতি এঁকেছেন। ক্লিনটনের প্রতিকৃতিতে দেখা যায় যে, ক্লিনটন হাসছেন এবং একটি আমেরিকান পতাকার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। তার হাতগুলো একে অন্যকে আঁকড়ে ধরে আছে এবং তিনি তার ডানদিকে তাঁকিয়ে আছেন।

            স্টিভেন পোলসন আঁকা ছবির সামনে দাঁড়িয়ে পোজ দিচ্ছেন (স্টিভেন পোলসনের সৌজন্যে)
            শিল্পী স্টিভেন পোলসন (স্টিভেন পোলসনের সৌজন্যে)

            পোলসন যার ছবি আঁকেন আগে তাকে নিয়ে গবেষণা করেন এবং তাদের সাথে দেখা করার আগে তাদের ফটো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখার মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করেন। প্রথম বৈঠকে, তিনি প্রাথমিক স্কেচের জন্য নিজেই ছবি তোলেন। পরে তিনি যার ছবি আঁকবেন তাকে প্রাথমিক ছবি থেকে তৈরি করা দুটো স্কেচ জমা দেন একটা বেছে নেওয়ার জন্য। তার ভিত্তিতে তিনি মূল ছবি আঁকার কাজটা শুরু করেন। যদিও কেউ কেউ প্রতিকৃতির জন্য পোজ দিতে বা বসতে শুরুতে কিছুটা বিচলিত হন তবে বেশিরভাগ মানুষই প্রক্রিয়াটি শুরু হওয়ার পর এটি উপভোগ করেন।

            তিনি তার বিষয়গুলি জানাটা উপভোগ করেন। তিনি ক্লিনটনকে স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ ও মজার মানুষ হিসেবে পেয়েছেন। তিনি পোলসনের নবজাতক সন্তানের খোঁজ নেন এবং দাদী হওয়ার কথা বলেছিলেন। (অলব্রাইট স্টুডিওতে ডোনাট ও কফি নিয়ে আসতেন। পাওয়েল তার পুরনো গাড়ি মেরামত করার শখ নিয়ে কথা বলতেন। আর রাইস তাকে ফটোশুটের জন্য তার বাড়িতে স্বাগত জানিয়েছিলেন, যা চমৎকার ও আনন্দদায়ক ছিল।)

            পোলসনের মতে পোজ সঠিকভাবে না পাওয়া পর্যন্ত একজন শিল্পীকে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। যদি দেখা যায় যার ছবি আঁকা হচ্ছে তার স্বামী বা স্ত্রী কিংবা সন্তানেরা আঁকা ছবি দেখে আনন্দ প্রকাশ করছে তাহলে বুঝতে হবে শিল্পী সঠিক জায়গাটা খুঁজে পেয়েছেন। “প্রতিকৃতি দিয়ে, আপনি এমন কিছু করার চেষ্টা করছেন যা লোকেরা দেখবে এবং উপভোগ করবে,” উল্লেখ করে পোলসন বলেন “এবং এতে কিছু গ্রাফিক শক্তি থাকতে হবে, যাতে করে প্রতিকৃতিটি যেখানে রাখা হবে সেখানকার দেয়ালের সাথে এটা মিলে যাবে না বা হারিয়ে যাবে না।“ (শৈল্পিক পরিভাষায়, “গ্রাফিক শক্তি” মানে হলো একটি পরিষ্কার, প্রাণবন্ত ছবি যা দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।)

            মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের প্রতিকৃতি আঁকা অন্য পোর্ট্রেট আঁকার মতোই, শুধু একটি বিষয়ে ব্যতিক্রম রয়েছে উল্লেখ করে পোলসন বলেন: “একজন মন্ত্রিপরিষদ সদস্যের অফিসিয়াল প্রতিকৃতির মধ্যে যা থাকে তা হলো তার দেশ সেবার প্রতি মানুষের ভালবাসা ও প্রশংসা ফুঁটিয়ে তোলা এবং তার সাথে যারা কাজ করেছেন তাদের ভালোবাসা ফুঁটিয়ে তোলা।

          • পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে শক্তিশালী করা
            পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহারে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে শক্তিশালী করা
            একটি বড় আকারের বায়ুচালিত টারবাইনের পাশে দাঁড়িয়ে শক্ত টুপি ও ভেস্ট পরা একজন লোক একই রকম পোশাক পরা সহকর্মীর ছবি তুলছে (© জুল কিফলি/এএফপি/গেটি ইমেজেস)

            সন নগুয়েন যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে বিদ্যুৎচালিত যানবাহন প্রযুক্তির অগ্রগতি দেখেছিলেন এবং ভিয়েতনামের বায়ু দূষণের কথা জেনেছিলেন।  

            তাই দেশে ফেরার পর তিনি ২০১৯ সালে “ডট বাইক” কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই কোম্পানি ডানাং, হ্যানয় ও হো চি মিন সিটিতে ইলেকট্রিক বাইক বিক্রি করে। এছাড়াও তারা বৈদ্যুতিক ব্যাটারির পুনঃব্যবহার ও কীভাবে নিজেদের কারখানাকে পরিবেশবান্ধব সবুজ জ্বালানি দিয়ে চালানো যায় সে বিষয়ে অনুসন্ধান করছেন। 

            নগুয়েন ২০২২ সালে ভিয়েতনাম ইনভেস্টমেন্ট রিভিউ –কে বলেন যে,  বিদ্যুৎচালিত যানবাহন “ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশে বায়ুর গুণমান উন্নত করার জন্য সবচেয়ে প্রত্যক্ষ ও কার্যকরী সমাধান।”  

            আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির সাউথইস্ট এশিয়া এনার্জি আউটলুক ২০২২ এ প্রকাশিত তথ্য মতে গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় জ্বালানি শক্তির বার্ষিক গড় চাহিদা ৩% করে বাড়ছে। 

            বিশ্বজুড়ে ক্লিন এনার্জি বা পরিবেশবান্ধব জ্বালানি শক্তির দ্রুত ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার যে অসংখ্য অংশীদারদের সাথে কাজ করছে তার মধ্যে ডট বাইক অন্যতম। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের ২০৫০ সালের মধ্যে নেট–জিরো কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করার জন্য বৈদ্যুতিক যানবাহন নির্মাতা ভিনবাস ও ভিনফাস্ট এর সাথে কাজ করছে। 

            বৈদ্যুতিক যানবাহন চার্জিং স্টেশনে ইলেকট্রিক যানবাহনে চার্জ করা হচ্ছে পাশে দাঁড়ানো লোকজন(© নামলং নগুয়েন/শাটারস্টকডটকম)
            যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি কার্বন নির্গমন কমাতে ভিয়েতনামের ইলেকট্রিক যানবাহন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে, যেমন ভিনফাস্ট, কাজ করছে। উপরে, ২০২১ সালে ভিয়েতনামের কোয়াং নিনেতে একটি ভিনফাস্ট গাড়িতে চার্জ করা হচ্ছে। (© নামলং নগুয়েন/শাটারস্টকডটকম)

            যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি–এর ‘ভিয়েতনাম আরবান এনার্জি সিকিউরিটি প্রজেক্ট’ ভিয়েতনামকে বৈদ্যুতিক যানবাহন স্থাপনে সহায়তা করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অংশীদারিত্বমূলক অনেকগুলো প্রকল্পের মধ্যে একটি। যুক্তরাষ্ট্র সরকার পুরো দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়াজুড়ে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান পরিবেশবান্ধব জ্বালানির চাহিদা মেটাতে বিলিয়ন ডলার ব্যবহার করছে। 

            ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া ইউএসএআইডি–র সাউথইস্ট এশিয়া স্মার্ট পাওয়ার প্রোগ্রাম (এসপিপি) এর লক্ষ্য হলো সামগ্রিকভাবে এই অঞ্চলজুড়ে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি প্রকল্পের জন্য ২ বিলিয়ন ডলার বা ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যবহার করা। গত জুন মাসে এসপিপি প্রকল্প থেকে এই অঞ্চলের জ্বালানি শক্তিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করার জন্য আসিয়ান সেন্টার ফর এনার্জি (এসিই)-কে ৩ মিলিয়ন ডলার বা ৩০ কোটি টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। 

            “আমরা এখনো পরিচ্ছন্ন ও নির্ভরযোগ্য জ্বালানি শক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি, অদক্ষতা কমানো, বায়ুর মান বাড়ানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে সংগ্রাম করছি,” উল্লেখ করে এসিই–এর নির্বাহী পরিচালক নুকি আগা উতামা জুন মাসে বলেছেন, অংশীদারিত্ব “২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের আঞ্চলিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ।“ 

            দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় পরিচ্ছন্ন শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে নিতে যে অংশীদারিত্বমূলক কর্মকান্ড চলছে এখানে তার কয়েকটি উল্লেখ করা হলো:  

            মেকং অঞ্চল  

            যুক্তরাষ্ট্র সরকার ২০১৬ সাল থেকে নবায়নযোগ্য শক্তি কার্যক্রমে বিনিয়োগের জন্য নিম্ন মেকং অঞ্চলের দেশ এবং অন্যান্য আসিয়ান সদস্য দেশগুলোকে উৎসাহিত করছে। এই সহযোগিতার ফলে প্রায় ৮০ লাখ বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম ১০,০০০ মেগাওয়াট শক্তির উৎপাদন ব্যবস্থা স্থাপিত হয়েছে। 

             

            ইউএসএআইডি–এর ‘মেকং সাসটেইনেবল ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যালায়েন্স’ কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামের টেক্সটাইল শিল্পে কম জ্বালানি শক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার কৌশল বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে। কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনামে এই জোট আগামী ১৫ বছরের মধ্যে পোশাক উৎপাদন খাত থেকে ৬৮ হাজার টন কার্বন নির্গমন অপসারণ বা কমানোর জন্য ছাদে সৌর শক্তি বসানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। 

            ইন্দোনেশিয়া 

            একজন লোক সন্ধ্যার সময় সৌর-চালিত আলোসহ ঘাটে হাঁটছে (© দিতা আলংকারা/এপি)
            ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তোলা ছবির ইন্দোনেশিয়ার কারামপুয়াং দ্বীপের এই ঘাট আলোকিত করার জন্য সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। (© দিতা আলংকারা/এপি)

            মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষিত অনুদান ইন্দোনেশিয়ার সুম্বাওয়া দ্বীপে একটি বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ইন্দোনশিয়ার পিটি মেডকো পাওয়ার সংস্থাকে প্রয়োজনীয় গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করবে। গবেষণা প্রকল্পটি যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে ইন্দোনেশিয়ার নেতৃত্বাধীন জাস্ট এনার্জি ট্রানজিশন পার্টনারশিপ (জেইটিপি) এর কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে। জেইটিপি ইন্দোনেশিয়ার টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ২০ বিলিয়ন বা প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। 

            ২০১৫ সাল থেকে ইন্দোনেশিয়ার নতুন নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ইউএসএআইডি–র সহায়তা ৩৩ লাখেরও বেশি মানুষের কাছে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি শক্তি পৌঁছে দিয়েছে। এছাড়াও ইউএসএআইডি ইন্দোনেশিয়ার ৫৩ লাখেরও বেশি মানুষের কাছে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি শক্তি পৌঁছাতে সরকারি ও বেসরকারি খাতে ১.৬২ বিলিয়ন বা প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ সংগ্রহ করেছে। 

            এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে রানতাউ দেদাপ ভূ–তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প এবং বায়াং নিয়ালো জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পন্ন করতে সহায়তা করছে। শুধু রানতাউ দেদাপ নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি প্রকল্প থেকেই ১২ লাখেরও বেশি মানুষ উন্নত বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে। 

            ফিলিপাইন 

            গত জুন মাসে ইউএসএআইডি ফিলিপাইনে ছাদে সৌরশক্তি প্যানেল স্থাপন, ন্যানোজেনারেটর ও অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি প্রযুক্তি স্থাপনের জন্য ১.১৬ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি বা প্রায় ১২ কোটি টাকার অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে। ইউএসএআইডি জানিয়েছে যে, উন্নত জ্বালানি ব্যবস্থায় প্রবেশ করার সক্ষমতা বাড়ার ফলে কাগায়ান এবং ইসাবেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী জনগোষ্ঠী প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত হতে পারবে ও তাদেরকে দুর্যোগকালীন সময়ে পুনরুদ্ধার করা সহজ হবে। 

            এই অনুদান ২০২১ সালে শুরু হওয়া ইউএসএআইডি–র ‘এনার্জি সিকিউর ফিলিপাইন’ প্রকল্পের অংশ। ২০২২ সালে এই কর্মসূচির মাধ্যমে ফিলিপাইনের প্রথম নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি নিলাম কার্যক্রমকে সহায়তা করা হয়েছিল যাতে করে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি শক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদা সংক্রান্ত প্রকল্পগুলো সুরক্ষিত করা যায়। ফিলিপাইনের জ্বালানি বিভাগ সৌর, বায়ুচালিত, জৈব জ্বালানি ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ১৮টি চুক্তি করেছে যার মাধ্যমে দেশের মোট জ্বালানি চাহিদার প্রায় ৭% পূরণ করা সম্ভব হবে। 

            “ব্যাংকিং, টেলিযোগাযোগ, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং পরিবহনের মতো ব্যবস্থাগুলোর ভিত্তি হলো জ্বালানি শক্তি,” উল্লেখ করে ইউএসএআইডি সহকারী প্রশাসক মাইকেল শিফার ২০ জুন বলেছেন, “আমরা ফিলিপাইনের প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী সম্প্রদায়গুলোতে টেকসই জ্বালানি শক্তির ব্যবহার বাড়াতে ও দেশজুড়ে পরিবারগুলোর সমৃদ্ধি বাড়াতে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করব।“ 

            T পুরুষরা রাস্তার ধ্বংসাবশেষ এবং ভেঙে পড়া বৈদ্যুতিক খুঁটি সরিয়ে নিচ্ছে (© টেড আলজিবে/এএফপি/গেটি ইমেজেস)

            ইউএসএআইডি ক্লিন এনার্জি উন্নয়নকে সহায়তা করছে যা ফিলিপাইনের কাগায়ান প্রদেশের দুর্যোগ মোকাবেলায় সহায়তা করবে। উপরের ছবিতে কর্মীরা ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ম্যানিলার উত্তরে অবস্থিত প্রদেশে টাইফুন মাংখুট আঘাত হানার পর ধ্বংসাবশেষ পরিস্কার করছে। (© টেড আলজিবে/এএফপি/গেটি ইমেজেস)
          • দক্ষিণ এশিয়ায় পরিবেশ-বান্ধব বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো
            দক্ষিণ এশিয়ায় পরিবেশ-বান্ধব বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানো
            উচুঁ ভবনের পটভূমিতে থাকা ছাদে কর্মীরা সৌর প্যানেল বসাচ্ছে (©আরএস আইয়ার/এপি)

            যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে ক্লিন এনার্জি বা পরিবেশ-বান্ধব উন্নত জ্বালানি শক্তির প্রাপ্তি বাড়ার ফলে এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘসময় ধরে খোলা থাকছে, শিক্ষার্থীরা রাতে লেখাপড়া এবং হাসপাতালগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে সেবাদান করছে।

            যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল ও ভারতে বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সৌর বা জলবিদ্যুতের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ১.৬ বিলিয়ন ডলার কিংবা ১৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্লিন এনার্জি প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে। প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানো এবং জলবায়ু সংকটের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব এড়াতে সাহায্য করা।

            “এই ধরনের যৌথ বিনিয়োগ সমগ্র অঞ্চলজুড়ে প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি গতিশীল করেছে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য লাভ ও উপকার বয়ে আনবে,” বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার। তিনি গত ১৩ জুলাই মধ্যম আয়ের দেশগুলোর চ্যালেঞ্জ বিষয়ক জাতিসংঘ আয়োজিত এক অধিবেশনে এই কথা বলেন।

            এই বিনিয়োগ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জ্বালানি বাজারকে আরো টেকসই এবং নিরাপদ করার জন্য ২০১৮ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ক্লিন এজ এশিয়া (অ্যানহ্যান্সিং ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড গ্রোথ থ্রু এনার্জি) উদ্যোগের অংশ।

            ভূটান ও ভারত

            যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে পরিকল্পিত খোলংচু নদীকে কাজে লাগিয়ে জলবিদ্যুৎ তৈরির জন্য ৬০২ মিলিয়ন আমেরিকান ডলার বিনিয়োগ (পিডিএফ, 778কেবি) করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি-র মতে, এটিসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য প্রকল্পগুলো একদিকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাবে এবং একইসঙ্গে ভারত ও ভূটানের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত জ্বালানি সহযোগিতা বাড়াবে।

            নিরাপত্তা স্ট্রাইপ লাগানো পোশাক পরে লোকজন একটি বড় টানেলের ভেতরে হেঁটে যাচ্ছে (© কুনি তাকাহাশি/গেটি ইমেজেস)
            যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ভারত ও ভূটানে জলবিদ্যুৎ ব্যবহারকারী বাড়িয়েছে। উপরে, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ভূটানের পুনাতসাংছু-আই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে শ্রমিকদের দেখা যাচ্ছে। (© কুনি তাকাহাশি/গেটি ইমেজেস)

            স্টেট ডিপার্টমেন্টের জ্বালানি শক্তি বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জিওফ্রে পিয়াটের মতে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্তগুলো বৈশ্বিক কার্বন নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এবং জলবায়ু সঙ্কটের অধিক খারাপ প্রভাব এড়াতে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করবে।

            পিয়াট গত ৪ আগস্ট ভারতের জ্বালানি বিষয়ক কর্মকর্তাদের সাথে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল আলোচনায় বলেন, ” জ্বালানি শক্তি এবং জলবায়ু সংক্রান্ত বিষয়ে ভারতের সাথে আমাদের যে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে সেটা সমগ্র বিশ্বে অন্য কারো সাথে নেই।“

            যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফিনান্স করপোরেশন অ্যারিজোনাভিত্তিক ফার্স্ট সোলার ইনক-কে তাদের সৌর প্যানেল নির্মাণ কারখানার জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার বা ৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ ঋণ দিয়েছে যা দিয়ে কোম্পানিটি বার্ষিক আনুমানিক ৩.৩ গিগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করবে যা প্রায় ২০ লাখ বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য যথেষ্ট।

            ফার্স্ট সোলারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক উইডমার ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মতো ভারতও বুঝতে পেরেছে যে তাদেরকে নিজেদের জ্বালানি শক্তির ভবিষ্যৎ নিজেদেরকেই গঠন করতে হবে এবং তারা আভ্যন্তরীণ সৌর শক্তি উৎপাদন ক্ষমতার দ্রুত সম্প্রসারণে জোরালোভাবে কাজ করছে।“

            বাংলাদেশ

            বাংলাদেশে সাশ্রয়ী ও টেকসই জ্বালানি শক্তির ব্যবহার বাড়াতে ইউএসএআইডি ২০২১ সালের জুন মাসে পাঁচ-বছর মেয়াদী ১৭ মিলিয়ন ডলার বা ১৭০ কোটি টাকার এক উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাডভান্সিং ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড গ্রোথ থ্রু এনার্জি (বিএডিজিই বা ব্যাজ) নামের এই অংশীদারিত্বমূলক উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশে জ্বালানি নিরাপত্তা ও সহনশীলতা উন্নয়নের পাশাপাশি স্বচ্ছ ও দক্ষ জ্বালানি বাজারকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতকে কারিগরি সহায়তা দেয়া হবে।

            নেপাল

            রাস্তায় সবুজ রংয়ের বৈদ্যুতিক বাস চলতে দেখা যাচ্ছে (© প্রবিন রানাভাত/সোপা ইমেজস/লাইটরকেট/গেটি ইমেজেস)
            যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নেপালের অংশীদারিত্ব সেই দেশে রাস্তা এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারের আওতা বাড়িয়েছে। উপরে ২০২৩ সালের ৭ জানুয়ারিতে নেপালের পাটানের সড়কে চলাচলরত একটি ইলেকট্রিক বাস। (© প্রবিন রানাভাত/সোপা ইমেজস/লাইটরকেট/গেটি ইমেজেস)

            নেপালে বিদ্যুতের সীমিত প্রবেশগম্যতা ও পরিবহনের উচ্চ খরচ উন্নয়নের গতিকে ধীর করে রেখেছে; এই অবস্থার পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ করপোরেশন (এমসিসি) এবং নেপাল সরকার ৫০০ মিলিয়ন ডলারের এক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে যার আওতায় ৩০০ কিলোমিটার উচ্চ ভোল্টেজ পাওয়ার লাইন তৈরি ও রাস্তা উন্নয়নের কাজ করা হবে।

            নেপাল সরকার এই কর্মসূচির জন্য আরো ১৯৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং এটি এমসিসি-র কোন কর্মসূচিতে কোন অংশীদার দেশের পক্ষ থেকে সর্ববৃহৎ বিনিয়োগ। ২০২২ সালে নেপাল সরকার কর্তৃক অনুমোদিত এই কর্মসূচির লক্ষ্য হলো দেশটির বিস্তৃত পরিসরের জলবিদ্যুৎ সুবিধাগুলোকে ব্যবহার করে দেশের অভ্যন্তরে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি শক্তি (ক্লিন এনার্জি) ব্যবহারের পাশাপাশি ভারত ও অন্যত্র রপ্তানি করা।

            এমসিসি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি সংস্থা যারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। এমসিসি দারিদ্র্য মোকাবেলায় সুনির্দিষ্ট প্রকল্পে অর্থায়ন করে এবং সেই প্রকল্পে বেসরকারি পুঁজির সমাবেশ ঘটায় যাতে করে বাণিজ্য ও ব্যবসার সুযোগ বাড়ার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়।

            Expanding access to clean power in South Asia

          • সাম্য ও ন্যায়বিচার রক্ষায় সোচ্চারদের সম্মাননা
            সাম্য ও ন্যায়বিচার রক্ষায় সোচ্চারদের সম্মাননা
            মঞ্চে চেয়ারে বসা মানুষেরা ডায়াসে দাঁড়িয়ে কথা বলা ব্যক্তির বক্তব্য শুনছেন (স্টেট ডিপার্টমেন্ট/ফ্রেডি এভারেট)

            কাঠামোগত বর্ণবাদ সমাজকে দুর্বল করে। জনগোষ্ঠীতে যথাযথ সুযোগের অভাব থাকলে রাষ্ট্র সম্ভাব্য অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনে ব্যর্থ হয়। মানুষ যখন টিকা পায় না তখন রোগের বিস্তার ঘটে। ব্যক্তি যদি সরকারের ভেতর নিজের প্রতিফলন না দেখে, তখন গণতন্ত্রের প্রতি তার বিশ্বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

            “বর্ণবাদ, বৈষম্য — শুধু নৈতিকভাবেই ভুল নয়; এগুলো আমাদের পৃথিবীকে অনিরাপদ, অস্থিতিশীল ও অসমৃদ্ধ করে তোলে,” স্টেট সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত ৯ আগস্ট বর্ণবাদ বিরোধী গ্লোবাল অ্যান্টি-রেসিজম চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এই কথা বলেন।

            জাতিগত সাম্যকে এগিয়ে নেওয়া এবং দেশে-বিদেশে প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায় ও জনগোষ্ঠীকে সহায়তার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এই পুরস্কার এবছরই চালু হয়েছে।

            ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট জাতিগতভাবে প্রান্তিক ও আদিবাসীদের অভিজ্ঞতা ও চ্যালেঞ্জগুলো সরকারি নীতিতে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে এবং নিজ দেশে বৈষম্যের অবসানে কাজ করে যাওয়া মানুষদের সহায়তা করে।

            জাতিগত সাম্য ও ন্যায়বিচারের জন্য স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রথম বিশেষ প্রতিনিধি ডিজারি কর্মিয়ার স্মিথ।  তিনি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সবাইকে পুরস্কারপ্রাপ্তদের উদাহরণ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে এবং বর্ণবাদ বিরোধী প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে উৎসাহিত করেন।

            বলেন, “আশা করি আপনারা সবাই এখান থেকে যাওয়ার সময় বর্ণবাদ বিরোধী বিশ্ব তৈরির গভীর প্রত্যয় নিয়ে যাবেন।” তিনি আরো বলেন, “মর্যাদা, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার প্রচারের জন্য তারা যে কাজ করেছেন তা শুধু তাদের নিজেদের জনগোষ্ঠীর জন্যই নয়, বরং সবার কল্যাণ বয়ে আনবে। ”

            Celebrating champions of equity and justice

            অনুষ্ঠান চলাকালীন ব্লিঙ্কেন ছয়জন পুরস্কার বিজয়ী, যারা বিশ্বব্যাপী সাম্যের প্রচারে কাজ করছেন তাদের “অসাধারণ সাহস ও অঙ্গীকারের” প্রশংসা করেন।

            আফ্রিকা

            সাদিয়া মোসবাহ (স্টেট ডিপার্টমেন্ট)
            সাদিয়া মোসবাহ

            তিউনিসিয়ার আন্দোলনকর্মী সাদিয়া মোসবাহ তিউনিসিয়ার কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে আইনী সুরক্ষার আওতায় আনতে এবং তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য মেমটি (“আমার স্বপ্ন”) প্রতিষ্ঠা করেন। তার প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে তিউনিসিয়ায় জাতিগত বৈষম্যকে অপরাধমূলক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।

             

            দক্ষিণ এশিয়া

            সরস্বতী নেপালী

            স্বরস্বতী নেপালী, নেপালের দলিত এবং অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করছেন। তিনি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দলিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন এবং জনপ্রিয় হিন্দু মন্দিরে দলিতদের উপাসনা করার অনুমতি দিতে, বাধ্যতামূলক শ্রম (ক্রীতদাস) বিলোপ, দলিত পরিবারের জমির অধিকার সুরক্ষিত করা এবং বৈষম্য সংক্রান্ত মামলার বিচারের রায় দলিতদের পক্ষে পেতে সফল হয়েছেন।

             

            রানী ইয়ান ইয়ান (স্টেট ডিপার্টমেন্ট)
            রানী ইয়ান ইয়ান

            রানী ইয়ান ইয়ান চাকমা সার্কেলের একজন নেতা। তিনি বাংলাদেশের আদিবাসীদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতা, জমি দখল এবং অন্যান্য ধরনের বৈষম্যের প্রতি আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এছাড়াও তিনি জলবায়ু সহিষ্ণুতাকে এগিয়ে নিতে এবং আদিবাসী নারী ও যুবাদের রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে প্রচারণার কাজ করছেন।

            Celebrating champions of equity and justice

            ইউরোপ

            ভিক্টোরিনা লুকা (স্টেট ডিপার্টমেন্ট
            ভিক্টোরিনা লুকা

            মোলদোভার মানবাধিকার আইনজীবী ভিক্টোরিনা লুকা রোমা অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে কাজ শুরু করেছেন এবং তিনি জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে অন্তর্ভুক্তিমূলক করার অগ্রগতি বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন৷ তিনি মোলদোভাতে রেডিও প্যাট্রিন পরিচালনা করেন, যা বিশ্বব্যাপী শ্রোতাদের সাথে রোমা ভাষা এবং সংস্কৃতি ভাগ করে নেয়।

            দক্ষিণ আমেরিকা

            কারি গুয়াজাজারা (স্টেট ডিপার্টমেন্ট)
            কারি গুয়াজাজারা

            কারি গুয়াজাজারা অবৈধ খনি খননকারী, কাঠ পাচারকারী ও চোরা বন্যপ্রাণি শিকারীদের হাত থেকে ব্রাজিলের অ্যামাজনকে রক্ষা করতে কাজ করেন। গুয়াজাজারা-তেনেতেহারা জাতিগোষ্ঠীর এই মানুষটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের অধিকারের অগ্রগতি এবং তাদের ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল ও ঐতিহ্য রক্ষা করার জন্য কাজ করছেন।

             

            অসওয়াল্ডো বিলবাও লোবাটন (স্টেট ডিপার্টমেন্ট)
            অসওয়াল্ডো বিলবাও লোবাটন

            কয়েক দশক ধরে অসওয়াল্ডো বিলবাও লোবাটন আফ্রো-পেরুভিয়ানদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছেন। ১৯৯২ সালে পেরুর কৃষ্ণাঙ্গদের প্রথম সভা আয়োজনে সহায়তা করেছিলেন তিনি এবং ২০১৭ সালে পেরুর আদমশুমারিতে জাতিগত বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে প্রচারণা চালান এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারি নীতির জন্য কাজ করেছেন।

            ন্যায়ের পথে

            পুরস্কার প্রাপ্তরা ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাতকালে অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে ও বৈষম্য মোকাবেলার ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতার বিষয়গুলো ভাগ করে নেবেন। যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা ফরেন পলিসি ফর আমেরিকা ফাউন্ডেশন পুরস্কার জয়ী প্রত্যেককে ৫,০০০ ডলার অনুদান দেবে।

            অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে ইয়ান ইয়ান বলেন, বর্ণবাদ ও জেনোফোবিয়া বা অন্য জাতিদে

            র প্রতি ভীতি ও তাদেরকে অপছন্দ করার বিষয়টি রাতারাতি বদলানো যাবে না। এক্ষেত্রে অগ্রগতি শুধু তখনই আসবে যখন আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের জন্য প্রচেষ্টা ও সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

            ইয়ান ইয়ান বলেন, এই পুরস্কার “আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও আমাদের অর্জনের স্বীকৃতি।”

            “ন্যায়বিচারের পথ কখনই সহজ ছিল না,” উল্লেখ করে ইয়ান ইয়ান বলেন, তবুও “আমরা এখানে আমাদের অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছি এবং আমরা পরবর্তী প্রজন্মের নেতাদের শক্তিশালী ও উন্নত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”

          • প্রশান্ত মহাসাগরে দ্বীপবাসীদের জলবায়ু পরিবর্তন সহিষ্ণু করে তুলতে সহায়তা
            প্রশান্ত মহাসাগরে দ্বীপবাসীদের জলবায়ু পরিবর্তন সহিষ্ণু করে তুলতে সহায়তা
            নারী দাঁড়িয়ে আছে আর বসে থাকা ব্যক্তিরা তাঁকিয়ে আছে (লাইভ অ্যান্ড লার্ণ/ইউএসএআইডির সৌজন্যে)

            পেলেনিস অ্যালোফা ২০০৬ সালে যখন কিরিবাতিতে চলে আসেন তখন তার মা-বাবার জন্মভূমিতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির পরিণতি সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। সাগরের নোনা পানিতে দূষিত হয়ে পড়েছিল কূপের পানি ও মাটি। তাদের বাড়ির মেঝে চুইয়ে পানি ঢুকত।

            রাতের বেলা কাছেই আছড়ে পড়া ঢেউয়ের শব্দে তার মনে আতঙ্ক জাগত। ” নিজেকে এতোটাই অরক্ষিত বোধ করছিলাম যেন ঢেউ এসে আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।” উল্লেখ করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি কে বলছিলেন, “কিন্তু এখানে এটাই স্বাভাবিক।”

            ২০১১ সালের দিকে অ্যালোফা এই অবস্থার পরিবর্তনের জন্য কাজ করতে শুরু করেন। তিনি কিরিবাতির নিচু এলাকার ৩৩টি দ্বীপকে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করার জন্য কিরিবাতি ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (কিরিক্যান) প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৫ সালে কিরিক্যান ইউএসএআইডি-এর সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসীরা লোনা পানির দূষণের শিকার এবং ক্ষয় হচ্ছে এমন পানীয় জলের উৎসগুলো কীভাবে শনাক্ত এবং রক্ষা করবে তার উপর প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে।

            জলবায়ু সঙ্কটের কারণে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সমুদ্রপৃষ্ঠের ক্রমবর্ধমান উচ্চতা বৃদ্ধি, চরম আবহাওয়া এবং অন্যান্য পরিণতির ফলে খাবার পানি সংগ্রহ ও সেচ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্র অ্যালোফার মতো প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসীদের সাথে কাজ করছে।

            প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলোর সম্মেলনে বলেন যে, আমরা ” আমাদের সকলের জন্য হুমকিস্বরূপ জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ।” তিনি আরো বলেন যে, জলবায়ু সঙ্কট “আমাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি।”

            নারী তার খরাক্রান্ত জমির দিকে তাকিয়ে আছেন (© মারিও টামা/গেটি ইমেজ)
            হেলেনা আইসুল ভানুয়াতুর তান্নাতে তার সব্জি বাগানে কাজ করেন। বর্ধিত শুষ্ক মৌসুমের কারণে তার ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। (© মারিও টামা/গেটি ইমেজ)

            সহনশীলতা তহবিল

            সম্মেলনে বাইডেন প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি মোকাবেলায় ১,৩০০ কোটি টাকাসহ (১৩০ মিলিয়ন ডলার) ৮,১০০ কোটি টাকার (৮১০ মিলিয়ন ডলার) নতুন ও সম্প্রসারিত তহবিল ঘোষণা করেন। গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জকে ১৫,০০০ কোটি টাকারও (১.৫ বিলিয়ন ডলার) বেশি প্রত্যক্ষ বৈদেশিক সহায়তা দিয়েছে।

            এছাড়াও ইউএসএআইডি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যেমন গ্রিনক্লাইমেট ফান্ড, এডাপ্টেশন ফান্ড এবং গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি থেকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলোকে ৫,০০০ কোটি টাকা (৫০০ মিলিয়ন ডলার)-র বেশি সহায়তা করেছে।

            মে মাসে পাপুয়া নিউ গিনিতে যুক্তরাষ্ট্র-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ ফোরামের নেতাদের সংলাপে যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে ও জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় একটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় সহনশীল ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ২০ কোটি টাকা (২ মিলিয়ন ডলার) সহায়তা দেওয়ার অভিপ্রায়ের কথা ঘোষণা করেছে।

            পাপুয়া নিউ গিনিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট অ্যারিজোনা ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সোর্স গ্লোবালের মাধ্যমে ৪০টি হাইড্রোপ্যানেল স্থাপন করার কাজকে সহায়তা করেছে। এসব প্যানেলে সৌর শক্তি ব্যবহার করে বাতাস থেকে পানি টেনে নেয়া হবে। নারীর নেতৃত্বাধীন সমবায় থেকে প্যানেল গুলো পরিচালনা করা হয়। যার মাধ্যমে আদিবাসীদের দু’টো গ্রামে জলবায়ুসহিষ্ণু পদ্ধতিতে পানি আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রামগুলোর বাসিন্দারা আগে আমদানি করা পানির উপর নির্ভর করতো।

            সোলার প্যানেলের সামনে এক ব্যক্তি বোতল থেকে পানি পান করছেন (© পিটার স্টিভেনসন)
            যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি পাপুয়া নিউ গিনিতে মানুষের নিরাপদ খাবার পানির সরবরাহ পাওয়ার সরঞ্জাম স্থাপন করেছে। (© পিটার স্টিভেনসন)

            খাপ খাওয়াতে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানো

            এছাড়াও খরা এবং অন্যান্য চরম আবহাওয়া থেকে ফসল রক্ষা করতে কৃষকদের সাথে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে সলোমন আইল্যান্ডে ইউএসএআইডি ২,৫০০ কৃষককে বাগানের ভূমির উচ্চতা বাড়ানো, গাছ লাগানো ও ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধারসহ সহনশীলভাবে চাষাবাদে সহায়তা করছে যাতে অভ্যন্তরীণ খামার গুলোকে রক্ষা করা সম্ভব হয়।

            ইউএসএআইডি ফিজি, ফেডারেটেড স্টেটস অফ মাইক্রোনেশিয়া এবং পাপুয়া নিউ গিনির কৃষকদের কৃষি কৌশলের মাধ্যমে জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলা করতে সাহায্য করে। যেমন কম্পোস্ট করা নারকেলের ছোবড়া খরা পরিস্থিতিতে দীর্ঘ সময় ধরে পানি ধরে রাখতে সহায়তা করে।

            যুক্তরাষ্ট্র কিরিবাতি, টোঙ্গা এবং ভানুয়াতুতে ইউএনডিপি ও স্থানীয় অংশীদারদের সহনশীল খামার কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টাকে সহায়তা করে । এই প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে নারিকেল, কাঁঠাল জাতীয় ফল ব্রেডফ্রুট, প্যান্ডানাস, জলাভূমিতে জন্মানো ট্যারো ও ডুমুরসহ দেশীয় বহুবর্ষজীবী ফসলের চাষাবাদে সহায়তা করতে পানির ট্যাঙ্ক ব্যবহার করা কিংবা বাগানের মাটির স্তর উচুঁ করা।

            ৩ জন লোক জমিতে ফসল রোপন করছে (ইউএসএআইডি প্যাসিফিক আমেরিকান ফান্ড)
            যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মেরি ডামোর (মাঝে) গত ১৮ মে ফিজিতে শস্য রোপন করছেন। ইউএসএআইডি এখানে খরা পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টাতে সহায়তা করছে। (ইউএসএআইডি প্যাসিফিক আমেরিকান ফান্ড)

            কিরিবাতির অ্যালোফা ১,৩০০ জনেরও বেশি মানুষকে কৃষিকাজের জন্য মাটিকে সমৃদ্ধ করা ও কীভাবে অল্প পানি ব্যবহার করে চাষাবাদ করা যায় সে লক্ষ্যে কম্পোস্টিং এবং অন্যান্য বাগান করার কৌশলগুলোর উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। ইউএসএআইডি কিরিবাতিতে জলবায়ু অভিযোজন প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য গ্রিনহাউস, সৌর প্যানেল, সেচ ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য উপকরণ দিয়েছে।

            কিরিবাতির ভূমি ও কৃষি উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সচিব সাইতোফি মিকা বলেছেন, উন্নত চাষের কৌশল ও অভিযোজিত ফসল সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপবাসীদের ফসলের খামারে চলে আসা লবণাক্ত পানি ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করছে।

            “আমাদের দ্বীপের বাসিন্দারা ভূমি ও সাগরের মানুষ,” উল্লেখ করে মিকা বলেন, “তারা অভিঘাতসহনশীল। যদিও পরিবর্তন আমাদের দোরগোড়ায় কিন্তু বেঁচে থাকতে এবং উন্নতি করতে অবশ্যই আমরা পরিবর্তনের সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নেব।”

বক্তব্য

হোম হোম | খবর ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান | বক্তব্য
"বাংলাদেশে অনলাইন স্বাধীনতা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ" শীর্ষক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস-এর বক্তব্য

“বাংলাদেশে অনলাইন স্বাধীনতা ও ব্যবসায় বিনিয়োগ” শীর্ষক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস-এর বক্তব্য

শুভ অপরাহ্ন এবং আজকের অনুষ্ঠানে আমাদের সাথে যোগ দেওয়ায় আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ। আরও পড়ুন»

মাধ্যমে U.S. Embassy Dhaka | 5 ফেব্রুয়ারী, 2023 | বিষয়সমূহ: ব্যবসাবাণিজ্য, ভাষণসমূহ, রাষ্ট্রদূত | ট্যাগ: অনলাইন স্বাধীনতা, বক্তব্য, ব্যবসায় বিনিয়োগ, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ, রাষ্ট্রদূত পিটার হাস

আরও দেখাও ∨

ফিল্টার

বিষয়বস্তুর ধরন:

বিষয়সমূহ

  • অনুষ্ঠান-আয়োজন
  • অফিসিয়াল রিপোর্ট
  • অর্থনৈতিক বিষয়সমূহ
  • অ্যালামনাই
  • আমেরিকান স্পেসেস
  • ইউরোপ ও ইউরেশিয়া
  • ইতিহাস
  • ইমিগ্রেশন ভিসা
  • ইংরেজি ভাষা শিক্ষা
  • কনসাল জেনারেল
  • কনস্যুলার বিষয়সমূহ
  • কৃষি
  • খবর
  • জরুরি সেবা
  • ডেপুটি চিফ অব মিশন
  • দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া
  • দূতাবাস
  • নন ইমিগ্র্যান্ট ভিসা
  • নিরাপত্তা ও জরুরি বার্তা
  • পরিবেশ
  • পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল
  • প্রতিবেদনসমূহ
  • প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  • ফ্যাক্ট শিট
  • বাণিজ্য
  • বাণিজ্যিক বিষয়সমূহ
  • বাণিজ্যিক সুযোগসমূহ
  • বিজ্ঞপ্তি
  • ব্যবসাবাণিজ্য
  • ভাষণসমূহ
  • ভিসা
  • ভিসা অব্যাহতি কর্মসূচি
  • মানবাধিকার
  • যুক্তরাষ্ট্র ও (বাংলাদেশ)
  • যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংস্থাগুলো
  • যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা
  • যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করা
  • যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য বার্তা
  • যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সেবা
  • যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট
  • রাষ্ট্রদূত
  • শিক্ষা
  • শিল্প ও সংস্কৃতি
  • সতর্কতা
  • সংস্কৃতি
  • স্কলারশিপস ও এক্সচেঞ্জসমূহ
আরও দেখাও ∨

সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ

  • U.S. Embassy Inaugurates the Second-Ever Cohort of the “Academy for Women Entrepreneurs (AWE)” Program in Bangladesh

    যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় “একাডেমি ফর উইমেন এন্টারপ্রেনারস (এডব্লিউই)” কার্যক্রমের দ্বিতীয় কোহর্ট উদ্বোধন করেছে

  • Minnesota Students Exchange with Bangladeshi Students about U.S. Education opportunities

    যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার সুযোগ নিয়ে মিনেসোটা ও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা বিনিময়

  • যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এখন সর্বকালের মধ্যে সর্বোচ্চ

  • USAID Deputy Assistant Administrator Änjali Kaur Visits Bangladesh

    অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান তুলে ধরতে বাংলাদেশ সফর করেছেন ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর

  • Inauguration of New Location for Edward M. Kennedy (EMK) Center

    নতুন ঠিকানায় এডওয়ার্ড এম কেনেডি (EMK) সেন্টারের উদ্বোধন

বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস

  • ভিসাসমূহ
  • যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সেবা
  • আমাদের সম্পর্ক
  • ব্যবসা-বাণিজ্য
  • শিক্ষা ও সংস্কৃতি
  • দূতাবাস
  • খবর ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান
  • গোপনীয়তা
  • সাইটম্যাপ

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ঢাকা

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ঢাকা
মাদানি অ্যাভিনিউ, বারিধারা,
ঢাকা-১২১২
বাংলাদেশ
টেলিফোন: (৮৮০) (২) ৫৫৬৬-২০০০
TwitterFacebookYouTubeFlickr

Footer Disclaimer – BN

এটি হচ্ছে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। এখান থেকে বাইরের কোনও ওয়েবসাইটে যাওয়া লিংকগুলোকে সেখানকার মতামত বা গোপনীয়তা বিষয়ক নীতির প্রতি অনুমোদন হিসেবে দেখা যাবে না।

American Flag