রাজশাহী ও চট্টগ্রামের ৭৬ জন শিক্ষার্থী কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে পরিচালিত দুই বছরব্যাপী অ্যাক্সেস প্রোগ্রাম সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এই প্রোগ্রামটি তাদের ইংরেজি ভাষা, বিশ্লেষণী-চিন্তা ও নেতৃত্বের দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করেছে ।
ঢাকা, আগস্ট ১১, ২০২১ —গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তরের (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) অর্থায়নে পরিচালিত ইংলিশ অ্যাক্সেস মাইক্রোস্কলারশিপ প্রোগ্রামের কোর্স সম্পন্নকারী ৭৬ জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। রাষ্ট্রদূত মিলার মহামারি চলাকালীন এই সময়েও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে সফলভাবে কোর্স সম্পন্ন করায় রাজশাহী ও চট্টগ্রামের স্থানীয় মাদ্রাসা ও সরকারি স্কুলের ৩৮ জন তরুণী ও ৩৮ জন তরুণ শিক্ষার্থীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। “অ্যাক্সেস প্রোগ্রাম সূচনালগ্ন থেকেই বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে তাদের জীবনে পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে,” উল্লেখ করে ভার্চুয়াল সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তৃতায় রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, “আমি বিশ্বাস করি এটি এমন একটি অর্জন যা আপনাদেরকে জীবনব্যাপী অনেক অর্জনের সূচনা করলো মাত্র….আপনাদের প্রতি আমার সেই বিশ্বাস আছে এবং এই অসাধারণ যাত্রায় আপনাদের সহযোগিতাকারী আপনাদের শিক্ষক, সহপাঠী ও প্রিয়জনরাও সেটাই বিশ্বাস করে। আপনারাই সেই মেধাবী এবং বুদ্ধিদীপ্ত নেতা যারা আগামীর বাংলাদেশের গতিপথ তৈরি করবেন। আপনারা আমাদের পৃথিবীর সর্বাধিক চ্যালেঞ্জপূর্ণ সমস্যাগুলোর সমাধানে সহায়তা করার মাধ্যমে পৃথিবীকে এগিয়ে নিতে নেতৃত্বদানকারী পরবর্তী প্রজন্ম। আপনারা অসাধারণ, যা এখনই পরিমাপযোগ্য নয়।”
ইংলিশ অ্যাক্সেস মাইক্রোস্কলারশিপ কর্মসূচি হলো একটি দুই বছরের কঠোর অনুশীলনের ইন্টারঅ্যাকটিভ কোর্স যেখানে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী থেকে আসা ১৩-১৭ বছরের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে ইংরেজি ভাষা শেখে, আমেরিকান সংস্কৃতি সম্পর্কে জানে, বিশ্লেষণী চিন্তা করার সামর্থ্য ও নেতৃত্বদানের দক্ষতা অর্জন করে। এবং এসব কিছুই তাদেরকে উচ্চতর শিক্ষা অর্জন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দেয়। বর্তমানে ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামে ২০০ শিক্ষার্থী অ্যাক্সেস কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করছে। ২০০৪ সালে এই কর্মসূচি চালু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১,৩৩৬ জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থী সফলভাবে এই কোর্স সম্পন্ন করেছে। গতকাল সমাবর্তনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে এই কোর্স সম্পন্নকারী বিশ্বের ৮৫টি দেশের প্রায় ৯৫,০০০ প্রাক্তন শিক্ষার্থীর সাথে যুক্ত হলো।
অ্যাক্সেস কর্মসূচি ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অনেক উদ্যোগের অন্যতম, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের জনগণের সাথে জনগণের এবং শিক্ষা বিষয়ক সম্পর্কগুলো জোরদার ও সম্প্রসারণ করার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে শিক্ষার মান বৃদ্ধি ও উদ্ভাবনী শিক্ষার সুযোগ তৈরি করার মাধ্যমে বাংলাদেশী তরুণ-তরুণীদের ক্ষমতায়ন করা হচ্ছে।
ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ইংরেজি ভাষা কার্যক্রম সম্পর্কে আরো জানতে দেখুন: https://bd.usembassy.gov/education-culture/english-language-programs/.
শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষা বিষয়ক কার্যক্রম সম্পর্কে আরো জানতে দেখুন: https://bd.usembassy.gov/education-culture/student-exchange-programs/.
ইংরেজি ভাষা শেখার সুযোগ ও শিখন সংক্রান্ত উপকরণ পেতে দেখুন:
https://americanenglish.state.gov/ এবং ফেসবুকে এই বিষয় সংক্রান্ত তথ্য পেতে দেখুন: https://www.facebook.com/AmericanEnglishatState.
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের অর্থায়নে পরিচালিত বিনামূল্যের ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্স (মক) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখুন: https://www.openenglishprograms.org/MOOC.
ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি সেন্টার (এলপিসি) বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালের আগস্ট মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। শুরুতে পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর লক্ষ্য ছিল বিনামূল্যে প্রান্তিক পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় যোগাযোগ করার দক্ষতা ও কমপিউটার ব্যবহারের প্রাথমিক জ্ঞান গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা। যাতে করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর তরুণ বয়সী নারী ও পুরুষরা নিজেদেরকে প্রতিযোগিতামূলক কাজের জন্য গড়ে তুলতে ও একটি উন্নত জীবনযাপন করতে পারে। ২০০৪ সালে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এলপিসি-কে বাংলাদেশে দূতাবাসের ইংলিশ অ্যাক্সেস মাইক্রোস্কলারশিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষার মৌলিক দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার একমাত্র সেবাপ্রদানকারী সংস্থা হিসেবে বেছে নেয়। এছাড়াও এলপিসি যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ (টিওটি) কর্মসূচি, বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং চাপাই নওয়াবগঞ্জে যেখানে এলপিসি শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে সেখানে ইমাম ও কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য ইংরেজি ভাষায় যোগাযোগ করার শিক্ষাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন । এলপিসি-র অনেক প্রশিক্ষক/রিসোর্স পারসন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মাধ্যমে পেশাগত উন্নয়ন প্রশিক্ষণ পেয়েছেন, যা তাদের শিক্ষাদানের দক্ষতা বৃদ্ধি করেছে।
###