০৩ মে ২০২১ – আজ থেকে ত্রিশ বছর আগের এই দিনে ক্রমাগত চাপ ও সহিংসতার মধ্যে আফ্রিকার সাংবাদিকেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে উইন্ডহোয়েক ঘোষণা প্রদান করে যেখানে বলা হয়, “কোন দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ ও চর্চা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য স্বাধীন, বৈচিত্র্যপূর্ণ ও উন্মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতিষ্ঠা, চর্চা ও শক্তিশালীকরণ অপরিহার্য।” সেই থেকে আজও আমরা সেই সত্যকথকদের সাহস উদযাপন করি, যারা ব্যক্তিগত পর্যায়ে ব্যাপক ঝুঁকিতে থেকেও দুরন্ত সাহস দেখিয়েছেন। সর্বত্র সকল সমাজে সাংবাদিকতা ও মুক্ত গণমাধ্যমের নিরন্তর ও অপরিহার্য ভূমিকার প্রতি আমরা সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি।
সাংবাদিকেরা সত্য উদঘাটন করেন, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করেন এবং ক্ষমতাসীনদের কাছে স্বচ্ছতার দাবী করেন। গণতন্ত্রকে চলমান রাখার জন্য তাঁরা অপরিহার্য। কোভিড-১৯ মহামারীর পুরো সময় জুড়ে সাংবাদিক ও মিডিয়া কর্মীরা জনগণকে অবহিত রাখতে নিজেদের জীবেনকে চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলেও সম্মুখ সারিতে থেকে কাজ করেছেন। যখন সত্যের ওপর ক্রমাগত আঘাত এসেছে এবং আমরা যখন সঠিক ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ, উন্মুক্ত সংলাপ ও জবাবদিহিতার চরম সংকটে পড়েছি তখনও তাঁরা দায়িত্ব পালন করেছেন।
শারীরিক নির্যাতনের ঝুঁকি ও নির্বিচার আটকসহ মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রতি এসব হুমকি প্রতিরোধ করা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট-এর পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী রেকর্ড সংখ্যক সাংবাদিককে কারাবন্দী করা হয়েছে। অনলাইনে সাংবাদিকদের বিশেষত নারী ও অশ্বেতাঙ্গ সাংবাদিকদের অবমাননা ও হয়রানি ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। কর্তৃত্ববাদী শাসকেরা মুক্ত গণমাধ্যমকে দুর্বল করা, সত্যকে বিকৃত করা বা অসত্য তথ্য প্রচারের প্রচেষ্টা নিয়েছে। ফলে ক্ষয়িষ্ণু সংবাদ শিল্প বিশ্বব্যাপী স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোকে বাদ রেখে ক্রমবর্ধমানভাবে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে সংবাদের আওতার বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। এই আক্রমণগুলোও সর্বত্র গণতন্ত্রের প্রতি হুমকিস্বরূপ।
আজ, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আমরা সর্বত্র সাংবাদিকদের নিঃশঙ্ক সাহসিকতা উদযাপন করি। আমরা সমৃদ্ধ, ঝুঁকি-সহিষ্ণু ও মুক্ত সমাজ বিনির্মাণে মুক্ত গণমাধ্যমের অত্যাবশ্যক ভূমিকা স্বীকার করি। সারা বিশ্বব্যাপী মুক্ত, স্বাধীন ও বৈচিত্র্যপূর্ণ গণমাধ্যমের সুরক্ষা প্রদান ও উৎসাহিতকরণে আমরা আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।