সেক্রেটারি মাইকেল আর. পম্পেও’র সংবাদ মাধ্যমের জন্য বক্তব্য

সংবাদ মাধ্যমের জন্য বক্তব্য
মাইকেল আর. পম্পেও, সেক্রেটারি অফ স্টেট
সংবাদ সম্মেলন কক্ষ
ওয়াশিংটন ডিসি
৫ আগস্ট ২০২০

 

সেক্রেটারি পম্পেও: শুভ বিকাল সবাইকে।

গতকাল বৈরুত বন্দরে সংঘটিত ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত সকলের প্রতি আমি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। ভয়াবহ এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে আমরা লেবানন সরকার ও তাদের জনগণকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছি। আপনারা দেখতে পাবেন, আগামী দিনগুলোতে লেবাননের জনগণকে সহায়তার জন্য যুক্তরাষ্ট্র অনেকগুলো বিষয় ঘোষণা করবে।

প্রথমেই বলে রাখি, আমি আগামী সোমবার আমেরিকার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভেনিয়া, অস্ট্রিয়া ও পোল্যান্ড সফরে যাচ্ছি। আমি আশা করি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক সফর হবে।

এবার আমি আমার মূল বক্তব্যে ফিরে আসি: শুরুতেই, প্রায়শই আমি যেমন করি, সমাজতন্ত্রী চীন প্রসঙ্গে কয়েকটা কথা বলবো।

শেষ যখন এখানে এসেছিলাম তারপর থেকে চীনের জনগণকে দমন ও নিয়ন্ত্রণে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রচেষ্টার আরো অনেক দৃষ্টান্ত সারা বিশ্ব দেখেছে। অন্যান্য দেশ ও যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে বেশ কয়েকটি বিবৃতিও দিয়েছে।

আমরা হংকংয়ে দেখেছি, কর্তৃপক্ষ বৈধ নির্বাচন পিছিয়েছে, গণতন্ত্র সমর্থক আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করেছে, একজন আমেরিকানসহ স্বাধীনতা-প্রেমী বিদেশীদের ওপর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। আমি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদেরকে চীন বা চীনের কোন স্থানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে আরো বেশি সতর্ক থাকার তাগিদ দেব।

জিনজিয়াংয়ের মুসলমান সংখ্যালঘুদের নিয়ন্ত্রণে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির অব্যাহত প্রচেষ্টা আমরা দেখেছি। আমি ট্র্রেজারি ডিপার্টমেন্টকে সাধুবাদ জানাই গত সপ্তাহে তাদের গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি কর্তৃপক্ষকে সেখানকার মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য।

আমরা আরো দেখছি সারা বিশ্বব্যাপী চীনা কমিউনিস্ট পার্টির অরাজকতা। গ্যালাপ্যাগোস দ্বীপপুঞ্জের আশেপাশে চীনা পতাকাবাহী নৌযান কর্তৃক অবৈধ মৎস্যশিকার বিষয়ে গত রবিবারে আমি একটা বিবৃতি দিয়েছি। এ ঘটনা ইকুয়েডরে আমার বন্ধুদের আতঙ্কিত করেছে।

দেখুন, এগুলো বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। এ মাসে আমি নিক্সন লাইব্রেরিতে বলেছি, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আগ্রাসী আচরণের বিরুদ্ধে সকল স্বাধীনতা-প্রেমী দেশগুলোকে একত্রে এগিয়ে আসতে হবে। তবে ভালো খবর হলো, এ পরিস্থিতির সম্পূর্ণ পরিবর্তন হচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সঠিক পন্থা হিসাবে সারা বিশ্ব অনাস্থা পোষণ ও যাচাই করে দেখার মূল ধারণাটিকে গ্রহণ করবে।

তাছাড়া আমরা যারা এই প্রশাসন অর্থাৎ ট্রাম্প প্রশাসনে কাজ করছি তারা এসব হুমকি থেকে আমেরিকানদের সুরক্ষার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

প্রশ্নবিদ্ধ কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমেরিকানদের উপাত্ত নিরাপদ রাখতে গত এপ্রিলে আমি আমার সহকর্মীদের ক্লিন পাথ উদ্যোগের ঘোষণা দিয়েছি। আজ আমি পাঁচটি নতুন কর্মোদ্যোগ উদ্বোধনের মাধ্যমে ক্লিন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের ঘোষণা দিতে পেরে আনন্দিত বোধ করছি। এগুলোর বিষয়ে আমি সংক্ষিপ্তভাবে বলার চেষ্টা করছি।

প্রথমত, ক্লিন ক্যারিয়ার। অবিশ্বস্ত চীনা টেলিকম কোম্পানিগুলো যাতে যুক্তরাষ্ট্র ও বৈদেশিক কোন স্থানের মধ্যে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সেবা না দিতে পারে সেটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করছি।

অ্যাটর্নি জেনারেল বার, সেক্রেটারি এসপার এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি ওলফ’র সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে আমি FCC’র নিকট যুক্তরাষ্ট্রে ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে সেবা প্রদানকারী চায়না টেলিকম ও আরো তিনটি কোম্পানির অনুমোদন প্রত্যাহার ও বাতিল করার তাগিদ দিচ্ছি।

দ্বিতীয়ত, আমাদের আহ্বান ক্লিন স্টোর। আমরা দেখতে চাই যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপ স্টোরগুলো থেকে অনির্ভরযোগ্য চীনা অ্যাপগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টিকটক’র বিরুদ্ধে আশু পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন এবং তা সঙ্গত কারণেই। চীনভিত্তিক কোম্পানির মালিকানাধীন টিকটক, উইচ্যাট ও অন্যান্য অ্যাপস আমেরিকান নাগরিকদের ব্যক্তিগত উপাত্তের জন্য বিরাট হুমকি। বিষয়বস্তু নিয়ন্ত্রণে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ব্যবহৃত মাধ্যমগুলোর কথা নাইবা বললাম।

তৃতীয়ত, ক্লিন অ্যাপস। হুয়েই ও অন্যান্য অবিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান যাতে যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় অ্যাপসগুলো আগে থেকেই ইনস্টল করতে বা ডাউনলোডের জন্য প্রস্তত রাখতে না পারে সে ব্যাপারে কাজ করছি। আমরা চাই না, কোন কোম্পানি হুয়েই’র মানবাধিকার লঙ্ঘন অথবা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নজরদারি মাধ্যমের মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সহযোগী হোক।

চতুর্থত, ক্লিন ক্লাউড। আমরা আলিবাবা, বাইদু, চায়না মোবাইল, চায়না টেলিকম ও টেনসেন্ট’র মতো কোম্পানি পরিচালিত ক্লাউড ভিত্তিক ব্যবস্থাগুলোর কাছ থেকে কোভিড টীকার গবেষণাসহ আমেরিকানদের সর্বোচ্চ সংবেদনশীল ব্যক্তিগত তথ্যাদি এবং আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহের মহামূল্যবান মেধাসত্ত্ব সুরক্ষা করছি।

যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক পরিমাণ উপাত্ত ও সংবেদনশীল তথ্যাদি সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণে চীনা ক্লাউড সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা সীমিত করতে স্টেট ডিপার্টমেন্ট কমার্স ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করবে।

পঞ্চমত ও শেষটি হলো ক্লিন কেবল। আমাদের দেশ ও অন্যান্য দেশকে বৈশ্বিক ইন্টারনেটের ব্যবস্থার সাথে সংযোগকারী সমুদ্র-তলদেশের কেবলের মাধ্যমে আদান-প্রদানকৃত তথ্যাদি যাতে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত না হতে পারে সেটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করছি।

চীনা সরকার নিয়ন্ত্রিত সমুদ্র-তলদেশ বিষয়ক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশসমূহ, আফ্রিকা ও ইউরোপে সংযোগ বিষয়ক একাধিক ক্রয়কাজে হুয়েই মেরিন অন্যান্য কোম্পানির তুলনায় ব্যাপক কম দর দেখিয়েছে।

আমরা এটা চলতে দিতে পারি না। আমরা সকল স্বাধীনতা-প্রেমী দেশ ও কোম্পানিগুলোকে ক্লিন নেটওয়ার্কে যোগদানের আহ্বান জানাচ্ছি।

আমাদের গণতন্ত্র সুরক্ষায় ট্রাম্প প্রশাসন আরো বিভিন্ন পন্থায় কাজ অব্যাহত রেখেছে:

বিভিন্ন প্রক্সি সাইটের মাধ্যমে রাশিয়ার অসত্য তথ্য ও মিথ্যা প্রচারণা বিষয়ে ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট’র গ্লোবাল এনগেজমেন্ট সেন্টার আজ একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করছে।

এবার আসি রাশিয়া ও অন্যান্য অপপ্রচারকারীদের সম্পর্কে:

কারো নির্দেশে বা বিদেশী কোন সরকারের নিয়ন্ত্রণে থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু সাইবার অপরাধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপকারী কোন ব্যক্তির পরিচয় বা অবস্থান সনাক্ত করার তথ্য প্রদানের আহবান জানিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট’র রিওয়ার্ড ফর জাস্টিস কার্যক্রম ১ কোটি ডলার পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করেছে।

মধ্যপ্রাচ্য সম্পর্কে কয়েকটি কথা:

রিয়াদ চুক্তির শর্তাবলী এগিয়ে নিতে প্রজাতন্ত্রী ইয়েমেন সরকার এবং সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের মধ্যেকার চুক্তিকে আমরা স্বাগত জানাই। এর মাধ্যমে হুথি আগ্রাসন প্রতিরোধে ইয়েমেনে ঐক্যমত্যের সরকার গঠনের পথ সুগম হবে।

এই চুক্তির শর্তাবলী বাস্তবায়ন এবং দেশব্যাপী রাজনৈতিক সমঝোতা প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের বিশেষ দূতের প্রচেষ্টায় সমর্থন জানানোর জন্য সকল পক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।

ইয়েমেনে ব্যাপক পরিসরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পেছনে মূল কারণ হলো ইরান ইসলামিক প্রজাতন্ত্র কর্তৃক হুথিদেরকে অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ।

আর তাই আগামী সপ্তাহে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বাড়াতে নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব পেশ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

নিরাপত্তা পরিষদের লক্ষ্য হলো “আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তি ও নিরাপত্তা” বজায় রাখা।

কাউন্সিল যদি সন্ত্রাসবাদের এক নম্বর মদদদাতা রাষ্ট্রকে অবাধে অস্ত্র বেচাকেনার সুযোগ দেয় তাহলে তাদের সেই লক্ষ্য চরম উপহাসের কারণ হবে।

যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয়ে বছরব্যাপী কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। কংগ্রেসে আমাদের উভয়দলের মধ্যে সমঝোতা রয়েছে। কাউন্সিলে আমাদের ১৩ বছরের ঐক্যমত্য রয়েছে। আর আমরা যে প্রস্তাবটি রেখেছি তা খুবই যৌক্তিক।

একভাবে না হলে অন্যভাবে- যেভাবে সম্ভব, আমরা সঠিক কাজটিই করবো। অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা যাতে সম্প্রসারিত হয় সেটা আমরা নিশ্চিত করবো।

এবার জাতিসংঘ বিষয়ে একটু কথা বলি- এটা খুবই হতাশাব্যঞ্জক যে, হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল তাদের সদস্য হিসাবে কিউবা’র মতো একটি নৃশংস একনায়কতান্ত্রিক দেশকে গ্রহণ করে যারা মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের ছদ্মবেশে নিজ দেশের ডাক্তারদেরকে পাচার করে দেয়। কোন দেশেরই উচিত নয় কাউন্সিলে কিউবা’কে ভোট দেয়া।

এবার কথা বলবো ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত ছোট্ট দু’টি প্রসঙ্গে:

প্রথমত, আইসিস’র গণহত্যা শুরুর ষষ্ঠ বার্ষিকী পালনকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও আমেরিকার জনগণের পক্ষ থেকে আমি ইয়েজিদি জনগোষ্ঠীর প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করছি। ইরাকিদের পুনরুদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য আমাদের প্রশাসন অনেক কাজ করেছে, তবে এখনও অনেক কাজ বাকি।

তবে আশার খবর হলো, উগ্র ইসলামপন্থী শাসন থেকে সরে এসে দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জনের জন্য আমি সুদানকে সাধুবাদ জানাই।

গত মাসে বেসামরিক নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ইসলাম ত্যাগকে অপরাধের তালিকা থেকে বাতিল করেছে যা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

পরিশেষে বলবো, মহামারী মোকাবেলায় আমাদের বৈশ্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

নাজুক জনগোষ্ঠী ও সহযোগীদেরকে এই মারাত্মক ভাইরাস মোকাবেলায় এ সপ্তাহে স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং ইউএসএআইডি নতুন মানবিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা হিসাবে আরো ৫৩ মিলিয়ন ডলার প্রদান করবে। এর মাধ্যমে আমাদের মোট সহায়তা ১.৬ বিলিয়নে দাঁড়াবে।

আমরা কোভিড-১৯ প্রাইভেট সেক্টর এনগেজমেন্ট অ্যান্ড পার্টনারশিপ ফান্ড চালু করবো যার আওতায় মহামারীর অর্থনৈতিক প্রভাব নিরসনে সম্ভাবনাময় নতুন পণ্য, বাজার ও ধারণা উৎসাহিতকরণে ১ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে।

এ পর্যায়ে আমি সানন্দে কিছু প্রশ্ন নেবো।

জনাব ব্রাউন: ঠিক আছে। আমরা প্রথম প্রশ্ন নেবো ফোন লাইন থেকে। অনুগ্রহ করে ম্যাট লি’র ফোন লাইনটি সংযুক্ত করুন।

প্রশ্ন: মাননীয় সেক্রেটারি, আপনি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন?

সেক্রেটারি পম্পেও: ম্যাট, আপনার কথা শুনতে বেশ কষ্ট হচ্ছে।

প্রশ্ন: শোনা যাচ্ছে না?

সেক্রেটারি পম্পেও: এখন শুনতে পাচ্ছি।

প্রশ্ন: আমি আমার স্পিকারটা বন্ধ করে নিই- এবার? এবার কি ভালো শোনা যাচ্ছে?

সেক্রেটারি পম্পেও: জ্বী, এখন আগের চেয়ে অনেক ভাল শোনা যাচ্ছে, ম্যাট।

প্রশ্ন: ঠিক আছে। ধন্যবাদ! খুব ছোট্ট ‍দু’টো প্রশ্ন আমার। একটা ইরান বিষয়ে: আপনি বলেছেন যে, একভাবে না হলে অন্যভাবে- যেভাবে সম্ভব, নিষেধাজ্ঞা যাতে বর্ধিত করা হয় সেটা আমরা নিশ্চিত করবো। এর অর্থ কি এই যে, এই প্রস্তাবনা ব্যর্থ হলে- সে সম্ভাবনাও কম নয়- আপনি কি আগের অবস্থায় ফিরে যাবেন? দ্বিতীয়ত, ভারপ্রাপ্ত (অস্পষ্ট) চলে যাওয়ার ব্যাপারে আপনি কি আদৌ চিন্তিত- বিশেষত এতো অল্প সময়ের মধ্যে- এর ফলে ইন্সপেক্টর জেনারেলের কার্যালয়ের কাজগুলো দৃশ্যপট থেকে সরে যাবে কিনা? ধন্যবাদ।

সেক্রেটারি পম্পেও: ম্যাট, আমি আপনার দ্বিতীয় প্রশ্নটির জবাব দেয়ার চেষ্টা করছি। আপনার কথা খানিকটা ভেঙে গিয়েছিলো। আমার মনে হয় আপনি ভারপ্রাপ্ত আইজি স্টিভ একার্ডের চলে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। তিনি বাড়ি ফিরে গেছেন। এরকম ঘটতেই পারে। এই বিষয়ে আমার আর কিছু বলার নেই।

ইরান প্রসঙ্গে আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, এখনও রাখঢাক করে কিছু বলতে চাই না– আমাদের মিশনের লক্ষ্য দ্ব্যর্থহীন। এই বিষয়ে প্রেসিডেন্টের নির্দেশনা অত্যন্ত পরিষ্কার: এবছর ১৮ অক্টোবরে আমরা অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হতে দিচ্ছি না। এটি JCPOA-এর অন্যতম প্রধান ব্যর্থতা এবং ইরানকে অস্ত্র কেনাবেচার অনুমতি দেওয়া বিশ্বের জন্য ভাল কিছু নয়। ইরান ও চীনের মধ্যেকার একটি চুক্তি সম্পর্কে আপনারা সংবাদ মাধ্যমে মন্তব্য দেখে থাকবেন। কিছু দেশ অস্ত্র বিক্রির জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে যা মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে তুলবে, ইসরাইলকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে, ইউরোপকে ঝুঁকিতে ফেলবে, এমনকি আমেরিকানদের জীবনও ঝুঁকিতে পড়বে। আমরা এটা হতে দেব না। তাই আমরা আমাদের সাধ্যমত সমস্ত কূটনৈতিক পন্থাই ব্যবহার করছি।

আমি ঘুরিয়ে বলতে চাইনা, আগেও বলেছি আমি আমার বক্তব্য স্পষ্টভাবেই দিতে চাই। আমরা ভালোভাবেই জানি, যুক্তরাষ্ট্র চাইলে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। তবে, অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বাড়াতে আমেরিকার যা যা করা দরকার, আমরা সেটা করবো। আমার বিশ্বাস আমরা সফল হবো।

জনাব ব্রাউন: ঠিক আছে। চলুন, এবার আমরা ক্রিস্টিনার কাছে যাই।

প্রশ্ন: চমৎকার। ধন্যবাদ, মাননীয় সেক্রেটারি। সেক্রেটারি আজারকে তাইওয়ানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত বিষয়ে আপনি কি কিছু বলবেন? এই সফরের বার্তাটি কী? আপনি হয়তো জানেন, চীনা কমিউনিস্ট সরকার বলেছে যে, এই সফর শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকিতে ফেলছে এবং ভুল সংকেত দিচ্ছে। তারা এই সফরটি নিয়ে না এগুনোর তাগিদ দিচ্ছে। এই বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

সেক্রেটারি পম্পেও: এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমি শুধু এইটুকুই বলতে চাই যে, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণ এর আগেও তাইওয়ান সফর করেছেন। তৎকালীন নীতিমালার সাথেও এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। তিনি একটি গভীর ও গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্যে এই সফরে যাচ্ছেন। আমরা এখনো বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যে আছি। তিনি তাইওয়ানে যাচ্ছেন, মহামারী মোকাবেলায় তাইওয়ানের কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্য সম্পর্কে কথা বলতে। আমরা চেয়েছিলাম তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য অধিবেশনের কথোপকথনে অংশ নেবে। কিন্তু চীন বাধা দেয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। তিনি তাইওয়ানে গিয়ে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে কথা বলবেন। কীভাবে আমরা কোভিড মোকাবেলা করছি, এর চিকিৎসা ও টীকা বিষয়ে সামনের দিনগুলিতে আমরা কীভাবে অগ্রসর হতে পারবো- সেসব বিষয়ে তাঁরা আলোচনা করবেন। এক্ষেত্রে তাইওয়ানের বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতাকে আমরা স্বাগত জানাই। আমার ধারণা, তিনি এসব বিষয়েই তাঁদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নেবেন।

জনাব ব্রাউন: শেষ প্রশ্ন। প্রশ্নটি করুন।

প্রশ্ন: ধন্যবাদ আপনাকে।

সেক্রেটারি পম্পেও: বলুন।

প্রশ্ন: আগামীকাল এবং ৯ আগস্ট – হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলার ৭৫ বছর পূর্ণ হবে। পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে আপনার মতামত জানাবেন কি? যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে ‘নতুন START চুক্তি’র ভবিষ্যৎ নিয়েও কিছু বলবেন আশা করি।

সেক্রেটারি পম্পেও: ঠিক আছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে যখন আমার প্রথম সাক্ষাৎ হয়- প্রথমত যখন আমি সিআইএ’র পরিচালক ছিলাম এবং বর্তমানে পররাষ্ট্র সচিব পদে থাকা অবস্থায়- তখন থেকেই তিনি আমাকে একটি বিষয় পরিষ্কারভাবে বলেছেন। আর সেটা হলো, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ফলে পৃথিবীতে যেন কোন বিপর্যয় নেমে না আসে সেটা নিশ্চিত করা তাঁর অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। তাই আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছি। উদাহরণস্বরূপ, আমরা INF চুক্তি থেকে সরে এসেছি, কারণ রাশিয়ানরা এটা মেনে চলছিল না। এর ফলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির ঝুঁকি ছিলো। কোন অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পর শুধু এক পক্ষ সেটা মেনে চললে কৌশলগত ঝুঁকি তৈরি হয়।

যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন – এই তিন দেশের পারমাণবিক সক্ষমতা সবচেয়ে বেশি। শক্তিশালী এই অস্ত্রগুলো ব্যবহারের ফলে বিশ্বে যে মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে- সে ঝুঁকি হ্রাসের জন্য একত্রে কাজ করার বিষয়ে বিগত কয়েক মাসে তিন দেশের মধ্যে কৌশলগত সংলাপ আয়োজনের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা। রাশিয়ানদের সাথে এই আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। দু’টি ভালো সমাবেশ হয়েছে আমাদের- আশা করছি দ্রুতই আরেকটি হবে। আমরা আশাবাদী যে চীনারাও আলোচনায় যোগ দেবে। আমাদের ধারণা, এটা তাদের জন্যই ভালো হবে। আমরা জানি, এটা পুরো বিশ্বের জন্যও ভালো হবে। যে রাষ্ট্রগুলো সব পক্ষের জন্য সুবিধাজনক সমাধানে পৌঁছুতে চায়, ভাল ফলাফল চায়, বিশ্বমঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চায়- তারাও এখন এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, তাদেরও এখন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মত সংলাপে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এমন একটি কৌশলগত পরিস্থিতি সৃষ্টির উপায় বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত হতে হবে যাতে বিশ্বের যেকোন স্থানে যেকোন সময় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি কমে আসে।

আমরা আশা করি, তারা এতে অংশ নেবে। আমরা আশা করি, রাশিয়ানরা তাদেরকে এতে অংশ নেয়ার তাগিদ দেবে। আমরা আরো আশা করি, সারা পৃথিবী খুব গুরুত্ব দিয়ে এই সত্য অনুধাবন করবে যে- এই তিন পারমাণবিক শক্তি, যাদের যথেষ্ট সম্পদ ও সামর্থ্য আছে, তারা একত্রে আরো শক্তিশালী ও আরো স্থিতিশীল কৌশলগত পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারবে – যেখানে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার ও বিস্তারের ঝুঁকি হ্রাস করা যায়।

চমৎকার। সবাইকে ধন্যবাদ। আপনাদের দিনটি ভাল কাটুক। ধন্যবাদ।

সমাপ্ত