লিখিত বক্তব্য
আস-সালামু আলাইকুম
দু’টি বিমানযোগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আড়াই মিলিয়ন ডোজ মডের্না টিকা বাংলাদেশে আসছে —প্রথম বিমানটি আজ রাতে ঢাকায় অবতরণ করল এবং অপর বিমানটি পৌঁছাবে প্রায় আট ঘণ্টা পরে, কাল
সকালে।
এই টিকা উপহার। আমেরিকান জনগণ টিকাগুলো বিনামূল্যে বাংলাদেশকে পাঠিয়েছে, উপহার হিসেবে। আমরা একটিমাত্র উদ্দেশ্য নিয়ে টিকাগুলো বাংলাদেশের জনগণের সাথে ভাগ করে নিচ্ছি, সেই উদ্দেশ্যটি হলো —
মানুষের জীবন বাঁচানো। কারণ এটিই হলো সঠিক কাজ। আমেরিকানরা সবসময় মানুষের প্রয়োজনে ও বিপদে তাদের পাশে দাঁড়ায়। আমরা আমাদের সামর্থ্য, ইচ্ছাশক্তি নিয়ে এগিয়ে যাই এবং যা করার দরকার সেটা করি।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সহায়তার ক্ষেত্রে বৃহত্তম দাতা দেশ।
আজ অবধি, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার মহামারি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে ৮৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা দিয়েছে।f
এই সহায়তার মধ্যে অন্যান্য কিছুর সাথে ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন সিলিন্ডার, ১২০০ পালস অক্সিমিটারসহ বাংলাদেশব্যাপী কর্মরত সম্মুখসারির হাজার হাজার স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ২০
লাখের বেশি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম, ৫০ লাখ সার্জিকেল মাস্ক এবং ৫২,০০০ জোড়া সুরক্ষামূলক গগলস রয়েছে।
এবং একথা পরিস্কারভাবে বলা দরকার:
আজকে রাতে ও কয়েক ঘণ্টা পর বিমানযোগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা টিকার এই অনুদান শুরু মাত্র।
যুক্তরাষ্ট্র জরুরিভিত্তিতে বাংলাদেশে দ্রুততার সাথে যতো বেশি সম্ভব নিরাপদ ও কার্যকর টিকা
পৌঁছানোর গুরুত্ব জানে ও বুঝতে পারে।
এবং আমরা জানি বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবন বাঁচাতে, ভাইরাসের নতুন ধরন তৈরি হওয়া থামাতে
এবং বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনর্গঠনে বিশ্বেরসর্বত্র যতো
বেশি সম্ভব মানুষকে দ্রুততার সাথে টিকাদান করতে আমাদেরকে অবশ্যই একসাথে
কাজ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশের মতোই সমান গুরুত্ব দিয়ে আন্তর্জাতিক টিকাদান প্রচেষ্টার সাফল্যের জন্য কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী মহামারিকে পরাজিত করতে আমাদের গণতন্ত্রের শক্তি, আমেরিকান বিজ্ঞানীদের দক্ষতা এবং
আমেরিকান উত্পাদনকারীদের সামর্থ্য এবং সর্বোপরি আমেরিকান জনগণের অভিঘাতসহনশীলতা, প্রতিশ্রুতি ও উদারতার
মনোভাবকে কাজে লাগাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বৈশ্বিক সঙ্কটে গণতন্ত্রের অস্ত্রাগার হিসেবে কাজ করেছিল। কোভিড-১৯
এর বৈশ্বিক সঙ্কট অবসানে আমাদের যৌথ লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের জন্য টিকার অস্ত্রাগার/মজুদ হিসেবে কাজ করবে।
এই বছরের শুরুতে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বিশ্বের মানুষের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের সরবরাহ থেকে কমপক্ষে ৮০ মিলিয়ন ডোজ টিকা অনুদানের প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছিলেন।
এছাড়াও কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ফাইজার টিকার ৫০০ মিলিয়ন ডোজ বিশ্বের দেশগুলোতে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে বরাদ্দ করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে গত পাঁচ দশক ধরে ঘনিষ্ঠতম অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। আজ, ইতিহাসের অভূতপূর্ব এমন এক চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় আমাদের
অংশীদারিত্বের গুরুত্ব অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আমি আজ রাতে আমাদের অংশীদার ও বাংলাদেশ সরকারের নেতৃবৃন্দের সাথে এখানে উপস্থিত হতে পেরে গর্ব বোধ করছি; কারণ আমরা সবাই মিলে একটি অধিকতর নিরাপদ ও
আরো বেশি সুরক্ষিত বিশ্ব গড়ে তুলতে সংক্রামক রোগের হুমকির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে চলেছি।
আমরা এটি করছি বাংলাদেশের জনগণের জন্য, আমেরিকার জনগণের জন্য এবং ঝুঁকিতে থাকা মহামূল্যবান বিশ্বের নাগরিকদের রক্ষায়; আমরা সৌভাগ্যবান যে আমরা একসাথে
এই দায়িত্ব পালন করতে পারছি।ধন্যবাদ।