উপস্থাপকবৃন্দ: সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স মার্ক টি এসপার; ড. জন চিপম্যান, ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের মহাপরিচালক
২১ জুলাই, ২০২০
সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স মার্ক টি এসপার: ঠিক আছে, ধন্যবাদ, জন। এবং সদয় ভূমিকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আজ এখানে আসতে পেরে ভালো লাগছে। পেন্টাগনের পক্ষ থেকে শুভ সকাল।
ভার্চুয়ালভাবে সমবেত হওয়া এবং ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স কিভাবে ইন্দো-প্যাসিফিকে নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি এগিয়ে নিচ্ছে, বিশেষ করে করোনা বৈশ্বিক মহামারির আলোকে, সে বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগের জন্য আমি আবারো ড. চিপম্যান ও ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্যাটেজিক স্টাডিজকে ধন্যবাদ দিতে চাই।
এখন বলি, একটি অবাধ ও মুক্ত অঞ্চলের ব্যাপারে ইন্দো-প্যাসিফিক দেশ, যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার গভীরভাবে প্রোথিত আমাদের মিত্র ও অংশিদারদের সঙ্গে অভিন্ন মূল্যবোধ, ইতিহাস ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের মধ্যে। এবং এটিকে নস্যাৎ করার, বিশেষ করে সাম্প্রতিক, চেষ্টার কারণে এটি আরো গভীর হয়েছে।
বস্তুত, এই জুলাইতে আমার অনুমোদন শুনানির এক বছর পূর্ণ হলো, যে শুনানিতে আমি অঙ্গীকার করেছিলাম, সেক্রেটারি হিসেবে আমার শীর্ষ অগ্রাধিকার হবে বিশাল ক্ষমতার প্রতিযোগিতার এই যুগে জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল বাস্তবায়ন করা এবং আমাদের অগ্রাধিকার এলাকা, ইন্দো-প্যাসিফিকে ডিপার্টমেন্টে দৃষ্টি নিবদ্ধ করা।
আমি গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি, এক্ষেত্রে আমরা বিশাল অগ্রগতি সাধন করেছি, যার মধ্যে আছে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের তিন স্তম্ভ – প্রস্তুতি, অংশিদারি জোরালো করা এবং এ অঞ্চলে নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি – সে বিষয়ে পদক্ষেপ।
প্রথমত, প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ব্যবস্থা থেকে সরে আসছি এবং আমাদের বাহিনীর আধুনিকায়ন ও প্রতিবন্ধকতা দূরিকরণ জোরালো করায় মনোযোগ দিচ্ছি, যেমনটা দেখা যাচ্ছে ডিপার্টমেন্টের ইতিহাসে আমাদের সবচেয়ে বড় গবেষণা ও উন্নয়ন বাজেট প্রণয়ন থেকে।
আমরা বৈপ্লবিক প্রযুক্তি – যেমন হাইপারসনিক অস্ত্র, ৫জি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা – বানানো এবং মোতায়েন করাকেই শুধু অগ্রাধিকার দিচ্ছি না, আমরা ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য জরুরি প্ল্যাটফর্মেও বিনিয়োগ করছি এবং আমাদের লড়াইয়ের ধরন পাল্টে দিচ্ছি।
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জন্য আমরা ভবিষ্যতের জাহাজ বহরের নকশা করছি –অর্থাৎ টিকে থাকার আরো উপযোগী, আরো অভিযোজনযোগ্য, টেকসই এবং বহু বছর ধরে আমরা যা দেখে আসছি, তার চেয়ে বড়।
একইভাবে, মেরিন কোরকে আরো কৃশকায়, আরো দ্রুতগতির এবং আরো মারাত্মক, আরো নিখুঁত ও প্রশান্ত মহাসাগরে ভৌগলিকভাবে আরো বন্টনকৃত করার ব্যাপারে মনোযোগ দেওয়া হয়েছে । এদিকে, সেনাবাহিনী দূর-পাল্লার নির্ভুল অস্ত্রকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে, যাতে আরো দ্রুত গতি ও দূর পাল্লা অর্জনের মাধ্যমে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের ক্রমবর্ধমান অ্যান্টি-অ্যাকসেস, এরিয়া-ডিনায়াল সক্ষমতার চেয়ে এগিয়ে থাকা যায়।
বিমান বাহিনী তাদের দৃষ্টি একইভাবে নিবন্ধ রেখেছে স্টিলথ সামর্থ্য উন্নততর করতে এবং যৌথ অল-ডোমেইন কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোলের অগ্রগতিতে, যা এমন এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ, যেটি যুদ্ধক্ষেত্রে যে কোনো সেন্সরকে তাৎক্ষণিক শ্যুটারের সঙ্গে সংযুক্ত করে।
এইসব সম্পদ, ব্যবস্থা ও সামর্থ্যের সঙ্গে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পুরোটার সমন্বয় নিশ্চিত করতে আমরা একবিংশ শতাব্দীর জন্যে তৈরি করছি একটি নতুন যৌথ সমর-লড়াই ধারণা, চূড়ান্তভাবে যা একবিংশ শতাব্দীর কটি মতবাদ, এবং বাস্তবায়ন করছি এই নতুন ধারণা যাতে আরো ক্ষিপ্র, কম পূর্বাভাসযোগ্য হওয়া যায় এবং প্রয়োজন মাফিক দ্রুত যুদ্ধ অভিযানে বদলে যাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করা যায়।
দৃষ্টান্তস্বরূপ, ইন্দো-প্যাসিফিকে এবং বিশ্ব জুড়ে একটি দ্রুত সাড়া দানে সক্ষম, টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদী বম্বার উপস্থিতি তৈরি করতে আমরা বম্বার টাস্ক ফোর্স মিশনগুলো জোরদার করেছি। এই মোতায়েনগুলো আমাদের মিত্রদের কৌশলগত যেমন পূর্বাভাসযোগ্যতা দেয়, তেমনি আমাদের প্রতিপক্ষ তৎপরতার দিক থেকে পূর্বাভাস না পেতে পারেন।
এই প্রচেষ্টাগুলো একত্রে আমাদের সশন্ত্র বাহিনিকে ভবিষ্যতের তীব্র সংঘাতের জন্য প্রস্তুত করে তুলবে, যে সংঘাত আমাদের নিকট- মিত্র স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে, যা আমরা আশা করি আমাদের কখনই লড়তে হবে না, তবে পরাজিত করার ব্যাপারে আমাদের অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।
দ্বিতীয়ত, অংশীদারিত্ব শক্তিশালীকরনের শিরোনামে আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক মিত্র ও অংশীদারের ক্রমবর্ধমান নেটওয়ার্ক জোরালো করে চলেছি – এটি এমন এক কৌশলগত সুবিধা, আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের নেই ।
গত হেমন্তে আমরা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি নবায়ন করেছি ওই অঞ্চলে আরো ১৫ বছররে জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সম্মুখ উপস্থিতি ও সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে।
ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে আমরা সামুদ্রিক নিরাপত্তায় একত্রে অংশীদারিত্ব অব্যাহত রেখেছি এবং তাদেরকে সর্বোৎকৃষ্ট সামরিক প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছি।
এবং ফিলিপাইনের ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ-মোকাবেলা থেকে শুরু করে সামুদ্রিক নিরাপত্তা পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিষয়ে আমরা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।
এর বাইরে আমরা স্ট্রাইকার সাঁজোয়া যান সহ-ক্রয়ের মাধ্যমে থাইল্যান্ডের সামরিক আধুনিকায়নকে সহায়তা করছি এবং আওতাধীন সামুদ্রিক এলাকা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে মালয়েশিয়া ও ব্রুনেইয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করছি। এ বছর আরো আগে আমরা চার দশকে দ্বিতীয়বারের মতো ভিয়েতনামে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারিয়ার সফর পরিচালনা করেছি।
উদীয়মান আঞ্চলিক অংশীদারদের সঙ্গে এইসব কৌশলগত সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি আমরা এই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী অঙ্গীকার জোরালো করার কাজ অব্যাহত রেখেছি। এর মধ্যে আছে উত্তর কোরিয়ার একটি চূড়ান্ত, পরিপূর্ণভাবে যাচাইকৃত বি-পারমাণবিকায়ন এবং কোরীয় উপদ্বীপে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কাজ করা।
এর মধ্যে আরো আছে মহাকাশ, সাইবার, ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ও অগ্রসর প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জাপানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব এবং সেইসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা সক্ষমতার সহ-উন্নয়ন, গোয়েন্দা-নজরদারি, করপোরেশন এবং কর্মপন্থার নিবিড় সামঞ্জস্য।
এছাড়া নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের জোরালো অংশীদারিত্ব এগিয়ে নেওয়া অব্যাহত রেখেছি এবং একটি গণতান্ত্রিক তাইওয়ানের ব্যাপারে অঙ্গীকারাবদ্ধ আছি।
আরো বললে, আমরা তিমুর-লেস্তে এবং মঙ্গোলিয়া ও সেই সঙ্গে পাপুয়া নিউ গিনি, ফিজি এবং তোঙ্গাসহ প্রশান্তমহাসাগরীয় দ্বীপদেশসমুহের সঙ্গে জোরালো সম্পর্ক চর্চ্চা অব্যাহত রেখেছি।
এই গ্রীষ্মে আমি এই অঞ্চল জুড়ে আমার প্রায় এক ডজন সমকক্ষের সঙ্গে আলাপ করেছি এবং সশরীরে সাক্ষাৎ না হওয়া পর্যন্ত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছি। বস্তুত, এই গতকালই আমি কথা বলেছি নিউ জিল্যান্ড ও কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সঙ্গে।
সবশেষে আমি আলাদাভাবে তুলে ধরতে চাই ভারতের সঙ্গে আমাদের বর্ধিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতার কথা, একবিংশ শতাব্দীতে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা সম্পর্কগুলোর একটি।
আমরা গত নভেম্বরে প্রথমবারের মতো আমাদের যৌথ সামরিক মহড়া পরিচালনা করেছি, এবং আজ যখন আমরা কথা বলছি, ইউএসএস নিমিৎস ভারত মহাসাগরে তখন ভারতীয় নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়া পরিচালনা করছে, যা একটি মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিকের সমর্থনে আরো শক্তিশালী নৌ সহযোগিতার ব্যাপারে আমাদের অভিন্ন অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ। আমরা আমাদের প্রতিরক্ষা বিক্রয় বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছি এবং এ বিষয়ে আরো অগ্রগতির জন্য এ বছর একটি জোরালো দুই-যোগ-দুই মন্ত্রিপর্যায়ের সংলাপ হওয়ার কথা।
তৃতীয় এবং সর্বশেষ যেটা, এ অঞ্চলের পরস্পর-যুক্ততা এগিয়ে নিয়ে আমরা ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোকে তাদের নিজেদের আন্তঃআঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্পর্ক এবং সমমনা অংশীদারদের মধ্যে পরস্পর-যুক্ততা আরো বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করছি।
দৃষ্টান্তস্বরূপ, গত কয়েক বছর জাপান সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করতে ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশকে সামুদ্রিক জলযান দিয়েছে। জুনে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জামগত সহযোগিতা চুক্তি চূড়ান্ত করেছে। গত বছর দক্ষিণ কোরিয়া “দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোটে” তাদের উন্নয়ন সহায়তা ২০২২ সালের মধ্যে দ্বিগুণ করার অঙ্গীকার করে।
আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের তিন স্তম্ভের সবকটিকে সহায়তার জন্য প্রশাসন এমন একটি প্যাসিফিক প্রশমন উদ্যোগ প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আশাবাদী, যে উদ্যোগ আমাদের বিনিয়োগকে অগ্রাধিকার দেবে, একটি বিশ্বাসযোগ্য ডেটারেন্ট জারি রাখবে এবং এ অঞ্চলে একটি দীর্ঘমেয়াদী সর্বাত্মক-সরকার অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে।
ইন্দো-প্যাসিফিক জুড়ে আমাদের প্রচেষ্টা আমাদেরকে চলমান সংকট, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারি মোকাবেলায় প্রস্তুত করেছে। আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারদের সহায়তার জন্য করোনাভাইরাস ত্রাণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ৩২৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে, এর মধ্যে আছে আসিয়ান দেশগুলোর জন্যে ৮০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা।
এর পাশাপাশি ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স টেস্ট কিট, ভেন্টিলটর এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামসহ অত্যন্ত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রশিক্ষণ ও সরবরাহ দিয়েছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ, ফিলিপাইনের হাসপাতালে শয্যা সামর্থ্য বাড়াতে আমরা সে দেশে এক হাজারের বেশি বিছানা সরবরাহ করেছি এবং আমাদের আর্মড ফোর্সেস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সার্ভিসেস বেশ কয়েকটি ইন্দো-প্যাসিফিক দেশে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে।
আমাদের অংশীদারেরা একইভাবে সাড়া দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করেছে ২.৫ মিলিয়ন মাস্ক, মালয়েশিয়া আমাদেরকে ১ মিলিয়নের বেশি গ্লাভ দিয়েছে এবং ভিয়েতনামের কারখানাগুলো আমাদেরকে সরবরাহ করেছে প্রায় ৫ মিলিয়ন পিপিই উপকরণ – যা আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্কের পরিপূরক চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ।
বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির বিধ্বংসী প্রভাব নিয়মতান্ত্রিক এমন এক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তাকে জোরালো করেছে, যা স্বচ্ছতা, অকপটতা, সততা এবং অন্যান্য অভিন্ন মূল্যবোধে প্রোথিত। বিশ্বায়নের এই যুগে ভাইরাসজনিত মহামারীর ক্ষেত্রে যোগাযোগ ও সহযোগিতাই হলো প্রতিষেধক, অপতথ্য এবং প্রতারনা নয়।
এ কারণে আমি উদ্বিগ্ন যে, এই সংকটময় মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র এবং আমাদের অংশীদারেরা যখন একে অপরকে সহায়তার দিকে মনোনিবেশ করেছি, তখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টি পরিকল্পিত নিয়ম-ভঙ্গ, বলপ্রয়োগ ও অন্যান্য অপকর্ম অব্যাহত রেখেছে।
আমার কাছে যেটা সবচেয়ে উদ্বেগজনক, তা হলো পিপলস লিবারেশন আর্মি পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরে তাদের আগ্রাসী আচরণ অব্যাহত রেখেছে, যার মধ্যে আছে ভিয়েতনামের একটি মাছ ধরার নৌকা ডুবিয়ে দেওয়া, মালয়েশিয়ার তেল-গ্যাস উন্নয়নকে হেনস্তা করা, চীনা মাছ ধরার নৌবহরকে পাহারা দিয়ে ইন্দোনেশিয়ার দাবিকৃত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া এবং দখলকৃত এলাকার সামরিকায়ন আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে চীনের অঙ্গীকার সরাসরি লংঘন করে।
এইসব করতে গিয়ে সিসিপি আসিয়ান দেশগুলোকে হুমকি দিয়েছে আনুমানিক ২.৬ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য উপকূলীয় তেল ও গ্যাস রেভিন্যু থেকে বঞ্চিত করার, লাখ লাখ মানুষের জীবিকার আশ্রয় মৎস্য শিকার এলাকায় প্রবেশে বাধার কথা বলাই বাহুল্য। পিএলএ জাপান-নিয়ন্ত্রিত শিকোকু দ্বীপের চারপাশের সমুদ্রে অনুপ্রেবেশের সংখ্যা এবং স্থিতিকাল দুটোই বাড়িয়েছে এবং উত্তর কোরিয়ার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লংঘন পিআরসি অব্যাহতভাবে উপেক্ষা করে যাচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে বিপদজনক এবং অবৈধ পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি অনুসরণের আন্তর্জাতিক পরিণামের হাত থেকে রক্ষা করে যাচ্ছে পিয়ংইয়ংকে। অতিসম্প্রতি হংকংয়ের জনগণকে উচ্চমাত্রার স্বায়ত্বশাসন দেওয়ার ব্যাপারে তার অঙ্গীকার লংঘন করে বেইজিং জাতীয় নিরাপত্তা আইন এগিয়ে নিয়েছে, চীনের পক্ষ থেকে ১৯৮৪ সালের চীনা-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণাকে নীতি বিষয়ক বিবৃতি বলা হয়েছে, চুক্তি নয়।
এছাড়া তাইওয়ান-নিয়ন্ত্রিত পাত্রাস দ্বীপ দখলের অনুকরণে পিএলএ-এর বড় পরিসরের মহড়া এমন এক অস্থিতিশীলতা তৈরির কর্মকাণ্ড যা ভুল হিসাবের ঝুঁকি তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাড়িয়ে দেয়।
বাজে আচরণের এই তালিকার পাশাপাশি আছে আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের প্রতি সিসিপির নির্লজ্জ অবজ্ঞার একটি প্যাটার্ন – বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অধীনে বাধ্যবাধকতা মানার ব্যর্থতা থেকে শুরু করে ১৯৮২ সালের সমুদ্র কনভেনশনের অধীনে অন্যান্য দেশের অধিকারের প্রতি নিয়মিত অবজ্ঞা প্রদর্শন।
এছাড়া, দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত অঞ্চলে চীনের অবৈধভাবে ভূমি পুনরুদ্ধার ও সামরিক মহড়া ২০০২ সালে দক্ষিণ চীন সাগরের পক্ষগুলোর আচরণ সংক্রান্ত ঘোষণায় উল্লিখিত অঙ্গীকারের প্রতি সুস্পষ্টভাবে সঙ্গতিহীন।
সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই, সিসিপি এ ধরনের আচরণ করে আসছে বহু বছর ধরে, তবে এখন এটির সত্যিকার অভিপ্রায় সবার চোখের সামনে ফুটে উঠেছে। আমরা চীনের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন আন্তর্জাতিক আইনকানুন ও আদর্শগুলো মেনে চলেন, চীন ও চীনা জনগণ বহু বছর যেগুলোর অনেক সুবিধা ভোগ করেছেন। আর সিসিপি তার আচরণ পরিবর্তন করবে আশা করার পাশাপাশি আমাদেরকেও বিকল্পের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।
একত্রে আমাদের মুক্ত ও অবাধ ব্যবস্থা ধরে রাখতে হবে, যা কোটি মানুষের শান্তি ও সমৃদ্ধি সুরক্ষিত করেছে এবং এর অন্তর্নিহিত মূলনীতিগুলো রক্ষা করতে হবে: যেমন, আকার নির্বিশেষে সকল দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, বিরোধের শান্তিপূর্ণ মীমাংসা, আন্তর্জাতিক আইন ও আদর্শের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং মুক্ত, অবাধ ও পরিপূরক বাণিজ্যের প্রসার। এগুলো আমেরিকান মূল্যবোধ নয়, এগুলো সার্বজনীন এবং এগুলো রক্ষায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এই লক্ষ্যে দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে আমাদের নীতি পরিষ্কার করতে যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা প্রচার করেছে। এতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে, সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত দাবির ব্যাপারে আমাদের স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, আমাদের পক্ষপাত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অংশীদারদের সার্বভৌম অধিকারের প্রতি এবং পিআরসির অতিরঞ্জিত ও বেআইনি সমুদ্রসীমার দাবি প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে, এই দাবি তুলে ক্ষুদ্রতর দেশগুলোকে তাদের নিজেদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উপকূলীয় সম্পদে অভিগম্যতায় বলপূর্বক বাধা দেওয়া হয়েছে।
এই নীতি একটি মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিককে সুরক্ষা করে, যেখানে এ অঞ্চলের সকল বৈচিত্রপূর্ণ জাতি বসবাস করতে পারে এবং শান্তিতে সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারে। এই নীতি স্পষ্ট করে জানায়, আন্তর্জাতিক সমুদ্রকে সংরক্ষিত এলাকা বানানো বা নিজের সামুদ্রিক সাম্রাজ্যে পরিণত করার কোনো অধিকার পিআরসির নেই।
আমাদের কর্মকাণ্ড আমাদের নীতিকে সমর্থন করে। ২০১৯ সালে আমরা দক্ষিণ চীন সাগরে সর্বোচ্চ সংখ্যক স্বাধীন নৌচালনা অভিযান, এফওএনওপিএস, পরিচালনা করি। এফওএনওপিএস কর্মসূচির ৪০ বছরের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ। এ বছরও আমরা এই অগ্রগতি ধরে রাখবো।
অধিকন্তু এ বছর আরো আগের দিকে দুটি ক্ষেত্রে দুটি ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ দক্ষিণ চীন সাগরে একত্রে মহড়া পরিচালনা করে, ২০১২ সালের পর যা এই প্রথম; এটা এক জোরালো সংকেত যে, আন্তর্জাতিক আইন যেখানেই অনুমতি দেবে, আমরা সেখানেই বিমান ওড়াবো, জাহাজ চালাবো এবং কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবো।
স্পষ্ট করে বুঝিয়ে বলি, চীন একটি বহুস্তর ইতিহাসের দেশ, এক সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং চমৎকার মানুষজনের দেশ। আমরা সংঘাত চাই না, আমরা চীনের সঙ্গে একটি গঠনমূলক, ফলাফল-ভিত্তিক সম্পর্ক চাই এবং আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্কের মধ্যে যোগাযোগের পথ খুলতে ও ঝুঁকি হ্রাস করতে চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে পিআরসিতে আমার সমকক্ষের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি এবং আমি আশাবাদী অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে সহযোগিতা বৃদ্ধি, সংকটে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং আমাদের সকলের অভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় মুক্তভাবে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার ব্যাপারে আমাদের অভিপ্রায় জোরালো করতে এ বছর শেষ হওয়ার আগেই পিআরসিতে সেক্রেটারি হিসেবে আমি আমার প্রথম সফর করবো।
শেষ কথা বলি, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সকলের অভিন্ন সম্পদে কোনো একক দেশ আধিপত্য করতে পারে না, করা উচিৎ না এবং সকলের জন্য একটি সমৃদ্ধশালী ও নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিকের সমর্থনে আমরা আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে কাজ করা অব্যাহত রাখবো।
আমরা স্বচ্ছতা, উন্মুক্ততা এবং অন্যান্য অভিন্ন মূল্যবোধের ওপর নির্মিত বিশ্ব ব্যবস্থার গুণাবলী এবং স্থিতিস্থাপকতা প্রদর্শন করবো। আমরা আমাদের প্রস্তুতি বাড়াবো এবং আমাদের অংশীদারদেরও তা করতে বলবো। আমরা আমাদের তুলনাহীন জোট নেটওয়ার্ক আরো শক্তিশালী ও বিস্তৃত করবো। ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো।
ধন্যবাদ এবং আমি আমাদের আলোচনা প্রত্যাশা করছি।
ড. জন চিপম্যান: জনাব সেক্রেটারি, আপনাকে সত্যি অনেক ধন্যবাদ। কয়েকটি আগ্রহী হাত তোলা হচ্ছে, যিনি কথা বলতে চান, আমি চাইবো তিনি এখন আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। আমি ইতিমধ্যে সাত অথবা আট জনকে দেখতে পাচ্ছি। ভাবনার কিছু নেই, আমি যতোজনকে সম্ভব যুক্ত করার চেষ্টা করবো।
আমি যা করতে চাইবো, জনাব সেক্রেটারি, তা হলো শুরুতে তিনটি প্রশ্ন নেবো, এরপর আমি তাদের বলবো, তারা কে এবং তাদেরকে ক্রম অনুযায়ী কথা বলতে দেবো। আমি তাদের প্রত্যেককে বলবো, যদি সম্ভব হয়, প্রশ্নটি এক মিনিটের নিচে রাখতে।
যে তিন জনকে আমি প্রথম ডাকবো, তারা হলেন টাইমস অব ইন্ডিয়া থেকে ইন্দ্রানি বাগচি, এরপর (জুনমিন লি?) কোরিয়া থেকে এবং তারপর নয়নিমা বসু, প্রিন্ট লাইন মিডিয়া থেকে, এটিও ভারতে।
কাজেই ইন্দ্রানি বাগচি, আপনার পালা।
প্রশ্ন: ধন্যবাদ, জন।
সেক্রেটারি, আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করতে চাই—যেহেতু আপনি ভারতের কথা বলেছেন, আমি জিজ্ঞেস করতে চাই লাদাখে ভারত ও চীনের সৈন্যদের মধ্যে সাম্প্রতিক যে অচলাবস্থা, সে ব্যাপারে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী। এবং বর্তমানে যে সংকট তৈরি হচ্ছে, তার আলোকে আপনি কোন ধরনের সহযোগিতা (শ্রবণ-অযোগ্য) ভারতের সঙ্গে?
এবং আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: ধন্যবাদ, ইন্দ্রানি।
এবং এবার আসি (জুনমিন লি?) কোরিয়া থেকে। (জুনমিন?), আপনাকে নিজেকে আনমিউট করতে হবে।
প্রশ্ন: ধন্যবাদ।
আপনাকে ধন্যবাদ, জনাব সেক্রেটারি।
আপনার কাছে আমার প্রশ্ন হলো, সাম্প্রতিক বেশ কিছু গণমাধ্যম প্রতিবেদন নিয়ে, যেখানে বলা হয়েছে কোরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর সম্ভাব্য প্রত্যাহারের কথা, যদি না দক্ষিণ কোরিয়া হোস্ট দেশকে সমর্থনের বিনিময়ে আরো বেশি কিছু দেয়।
এইসব গণমাধ্যম প্রতিবেদনে কি কোনো সত্যতা আছে? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আদেশের অধীনে পেন্টাগন কি যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য হ্রাস অথবা প্রত্যাহারের কথা ভাবছে?
কেননা, আমার দৃষ্টিতে, এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে আমাদের জোটের জন্য, যৌথ প্রতিরক্ষা ও প্রশমনের জন্য, এবং এর ফলে কেবল আমাদের শত্রুরাই লাভবান হবে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: এবং এই দফায় সর্বশেষ, নয়নিমা বসু। এগিয়ে যান, নয়নিমা।
তারপর আমি এ মুহূর্তে, যদি পারি, আরো একজনের কাছে যাবো (রয় মেটকাফ?) অস্ট্রেলিয়া থেকে।
প্রশ্ন: ও, হ্যালো। এটি (রয় মেটকাফ?) অস্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি কলেজ থেকে।
সেক্রেটারি, আপনার বক্তৃতা, আমার অনুমান, একটা পর্যায়ে অনুপ্রেরণাদায়ক, তবে যে বড় প্রশ্নটি থেকে যায়, তা হলো, যুক্তরাষ্ট্রকে কতোটা উৎকৃষ্ট সম্পদ-সম্পন্ন মনে করেন আপনি, বিশেষ করে ভারত মহাসাগরে, ইন্দো-প্যাসিফিকের ইন্দো অংশটিতে, যাতে যুক্তরাষ্ট্র তার শক্তি প্রয়োগ করে প্রশমন করতে পারে এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে পারে।
ড. চিপম্যান: অনেক ধন্যবাদ।
জনাব সেক্রেটারি, আপনার কাছে ফিরে যাচ্ছি।
সেক্রেটারি এসপার: আচ্ছা, ধন্যবাদ, জন।
এবং আপনাদের ধন্যবাদ প্রশ্নগুলোর জন্যে। যে ক্রমে এগুলো করা হয়েছে, আমি সেই ক্রমেই জবাব দেবো।
প্রথমত, ভারত ও চীনের পরিস্থিতির প্রসঙ্গে, আমরা অবশ্যই অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে এটা এবং লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল বরাবর কী ঘটছে, তা পরিবীক্ষণ করছি। আমরা খুবই খুশি যে, আমরা দেখতে পাচ্ছি, দুই পক্ষই উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করছে এবং আমরা অব্যাহতভাবে – – (অডিও নেই)।
ড. চিপম্যান: আমার মনে হচ্ছে, আমরা গত ৩০ সেকেন্ডের মতো সেক্রেটারির ভয়েস হারিয়ে ফেলেছি।
সেক্রেটারি এসপার: আমি দুঃখিত।
ড. চিপম্যান: আমরা আবার ফিরে পেয়েছি। হ্যাঁ।
সেক্রেটারি এসপার: যে কথা বলতে যাচ্ছিলাম, সেখানে আবার ফিরে যাবো, দেখুন, আমরা করছি – – আমরা করেছি – – আমি কোরীয় উপদ্বীপ থেকে কোনো সৈন্য প্রত্যাহারের নির্দেশ দেইনি। আমি বলব, যদিও, আমি যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, আমি পরিষ্কার বুঝেছিলাম, আমি জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। এর একটি অবিচ্ছেদ্য অর্থ হলো, সকল ভৌগলিক কমব্যাট্যান্ট কমান্ডে নজর দেওয়া এবং নিশ্চিত করা যে সেখানে আমরা সর্বোচ্চ শক্তি ধারণ এবং অবস্থান – অবস্থান গ্রহণ করেছি, সেই সঙ্গে কেবল এনডিএস পূরন করাই নয়, নিশ্চিত করা যে, যেসব আঞ্চলিক মিশনকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি, সেগুলো সেখানে আছে। কাজেই আমাদের বাহিনীর সর্বোচ্চ শক্তি ধারণ নিশ্চিত করতে আমরা প্রত্যেক কমান্ড এবং প্রত্যেক সংঘাত-ক্ষেত্রে কিছু সমন্বয়সাধনের কথা বিবেচনা করা অব্যাহত রাখবো। আমরা কিছু অতিরিক্ত ধারণার দিকে যাচ্ছি – – নতুন ধারণা, যেমন গতিশীল বাহিনী নিয়োগ। এবং আমি অব্যাহত রাখব – – আরও আবর্তনমূলক বাহিনী চাওয়া – – সংঘাত-ক্ষেত্রে বাহিনী মোতায়েন, কারণ এটা আমাদের, যুক্তরাষ্ট্রকে, বিশ্বজুড়ে চ্যালেঞ্জে সাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে বৃহত্তর কৌশলগত স্থিতিস্থাপকতা দেয়। এবং এরপর ভারত মহাসাগর সংক্রান্ত শেষ বিষয় প্রসঙ্গে, আবারও, আমি যেসব ভৌগলিক কমব্যাট্যান্ট কমান্ড পর্যালোচনা করতে চাই, তার একটি অংশ হলো, কিছু জিনিস করার উপায়: শুধু কোনো নির্দিষ্ট সংঘাত-ক্ষেত্রে আমাদের বাহিনীর সর্বোচ্চ শক্তি ধারণ নয়, বরং বাহিনীকে মুক্ত করে দেওয়া, যাতে যুক্তরাষ্ট্রে পুনঃমোতায়েন করা যায়, এইসব গতিশীল বাহিনী নিয়োগ পরিচালনার স্বার্থে অথবা প্রস্তুতি নেওয়া যায় – – (অডিও ফাঁক)
ড. চিপম্যান: আমার মনে হয় আমরা আবারও সেক্রেটারির ভয়েস হারিয়ে ফেলেছি।
সেক্রেটারি এসপার: আমার মনে হয়, আমরা আপনাকে আবারও এক সেকেন্ডের জন্যে হারিয়ে ফেলেছিলাম।
তবে আমি এইমাত্র বলছিলাম, আমার মনে হয় সাম্প্রতিক মহড়া, ভারতীয় নৌবাহিনী এবং ইউএসএস নিমিৎসের মধ্যে যা চলছে, প্রমাণ করছে আমাদের দু দেশের মধ্যে ক্রমমর্ধমান সহযোগিতা এবং আমাদের সামর্থ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সামর্থ্য, এ অঞ্চলে শক্তি প্রদর্শন করার এবং আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে সেটি টিকিয়ে রাখার।
ড. চিপম্যান: দারুণ, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমার মনে হয়, আমি এখন তিন অথবা চারটি নেব। পরেরটি হবেন বেথানি অ্যালেন-এবরাহিমিয়ান, যিনি আমার মনে হয় এক্সিওস চালু করেছেন। এটি চীনে একটি ভালো নিউজলেটার।
আপনাকে ফ্লোর দেওয়া হলো, বেথানি।
প্রশ্ন: দারুন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
সেক্রেটারি, আমি দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে আপনাকে প্রশ্ন করতে চাই। আপনি উল্লেখ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র অতীতের চেয়ে বেশি এফওএনওপি পরিচালনা করছে। চীন যেসব এলাকা দাবি করেছে, সেইসব এলাকায় আবার পা রাখতে চেষ্টা করতে যুক্তরাষ্ট্র আর কী কী করতে পারে?
তাদের এখন দক্ষিণ চীন সাগরে যথেষ্ঠ প্রশমন সামর্থ্য তৈরি করেছে, যদি একটি আঞ্চলিক – সেখানে একটি আঞ্চলিক সংঘাত যদি বাধে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যুক্ত হওয়া আরো কঠিন হয়ে যাবে। চীনের এইসব কর্মকাণ্ডের পরিণাম নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কী, কেবল এফওএনওপি পরিচালনার চেয়ে বেশি কিছুর ব্যাপারে?
ড. চিপম্যান: সমসাময়িক আন্তর্জাতিক রাজনীতির অন্যতম কৌতুহলোদ্দীপক বিষয় হলো, মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে পূর্ব এশিয়ার সংযোগ বাড়ছে, যাদের নিরাপত্তা, অর্থনেতিক ও রাজনৈতিক যোগাযোগ গুরুত্ববহ। কাজেই পরবর্তী যাকে কথা বলার জন্য আমি আহ্বান জানাবো, তিনি হলেন শেখ মুবারক আল-সাবাহ, কুয়েত থেকে।
প্রশ্ন: হ্যাঁ। আমার প্রশ্ন হলো, আমরা কি মনে করি, আরব উপসাগরের মতো ইন্দো-প্যাসিফিকে আমরা একটি নতুন সমুদ্র নিরাপত্তা কাঠামো দেখতে পাবো?
ড. চিপম্যান: অনেক ধন্যবাদ, মুবারক।
আমি আরো দুটি নেব। এবং জাপান থেকে, (তাকাতসুগো সাতো?) (সাতো-সান?) শুরু করুন, (সাতো?)। আপনার নিজেকে আনমিউট করে নিতে পারতে হবে।
যদি না পারেন, আমি চলে যাবো অ্যাশলে টাউনশেন্ডের কাছে।
প্রশ্ন: ধন্যবাদ ড. চিপম্যান।
সেক্রেটারি, আপনার বক্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলগত তিনটি স্তম্ভের মধ্যে দুটি স্তম্ভ নেটওয়ার্কিংয়ের ওপর জোর দিয়ে অংশীদারাত্ব এবং জোট নির্মাণ সংক্রান্ত। আমি এইসব স্তম্ভের স্বল্পমেয়াদী লক্ষ্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের ব্যাপারে আপনার বক্তব্য জানতে চাইবো।
এখানে, সিডনিতে ইউএস স্টাডিজ সেন্টারে, আমরা ইন্দো-প্যাসিফিকে আমেরিকান কৌশলগত সামর্থ্য নিয়ে কাজ করছি এবং একটি প্যাসিফিক প্রশমন উদ্যোগের পক্ষে যুক্তি দেখাচ্ছি, কারণ অংশত এর জন্যে দরকার হবে প্রশমনের বহুপাক্ষিকীকরন এবং এ অঞ্চলে ক্ষমতার ভারসাম্যের বহুপাক্ষিকীকরন। আপনিও কি তা আগাম দেখতে পান, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের শেষ লক্ষ্য জোট ও অংশীদারিত্বের ওপর মনোযোগ বৃদ্ধি?
ড. চিপম্যান: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
এবার আমি চাইবো আরেকটি (ক্যাথেরিন হিলের) কাছ থেকে, প্লিজ, যিনি ফিন্যানশিয়াল টাইমস থেকে। (ক্যাথেরিন?)?
প্রশ্ন: ধন্যবাদ, জন।
সেক্রেটারি, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে আরেকটি প্রশ্ন। সম্প্রতি যখন আমরা এই মাসে আরো আগের দিকে, যৌথ ক্যারিয়ার অভিযান দেখলাম, দক্ষিণ চীন সাগরে যা প্রথম – কিছু চীনা সরকারি গণমাধ্যম মন্তব্য করেছে অথবা জোর দিয়েছে যে, ওখানে চলাচলরত যে কোনো যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারিয়ার সেখানে থাকায় পিএলএ খুশি, তারা চীনের এটুএডি সামর্থ্যের ইঙ্গিত করছিল। আপনি কি এটা ব্যাখ্যা করতে পারেন, চীনের ক্রমবর্ধমান সার্ফেস হুমকির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের বিবেচনা কী – – যুক্তরাষ্ট্রের সার্ফেস সামর্থ্য? ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: সম্ভবত আমি আরেকটি নেবো, কেবল আরও একটুখানি ভৌগলিক বৈচিত্র্যের জন্যে। (কোয়াফাম?), প্লিজ? (কোয়াফাম?)? এই যে আপনি।
(আন্তঃকথোপকথন)
প্রশ্ন: হ্যাঁ, আমি আপনাকে প্রশ্ন করতে চাই – – আপনি জানেন, দক্ষিণ চীন সাগরের সামরিকায়ন বিষয়ে। সেইসব দ্বীপে সমরসজজ্জা বন্ধ করতে, যেগুলো চীন (নিয়ে নিয়েছে?), যুক্তরাষ্ট্র নির্দিষ্টভাবে কী করতে যাচ্ছে?
ধন্যবাদ, জনাব সেক্রেটারি।
ড. চিপম্যান: আপনার পালা, জনাব সেক্রেটারি।
সেক্রেটারি এসপার: ঠিক আছে, প্রশ্নগুলোর জন্য ধন্যবাদ। আমরা – – পাঁচটি প্রশ্ন আমি লিখে রেখেছি, কোনো কোনোটা – – একই প্রশ্ন, কাজেই আমি যতোটা পারি, গ্রহণ করার চেষ্টা করবো।
আপনারা জানেন, প্রথমত, আমরা যা করি – – আমার মনে হয়, প্রশ্নটা ছিল আমরা দক্ষিণ চীন সাগরে কী করছি, দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যের ক্ষেত্রে এর অর্থ কী।
আমি যা বলেছি, তার বড় অংশই হলো দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য। আমরা দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের জবরদখলমূলক আচরণ প্রশমন করতে চাই। এখন, আমরা জানি, এটা বছরের পর বছর ধরে চলছে। চীনের হুমকি-ধামকি, বলপ্রয়োগ, তাদর অন্যদের বাধ্য করা, বিশেষ করে ক্ষুদ্র দেশগুলোকে। এমন যেন, আপনি যতো ক্ষুদ্র দেশ, ততই আপনার হাত মুচড়ে দেওয়া হচ্ছে। কাজেই আমরা জবরদস্তিমূলক আচরণ প্রশমনের কাজ অব্যাহত রাখতে চাইবো।
দ্বিতীয়ত, আমরা নৌচালনা ও আকাশপথে উড্ডয়নের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাই। আপনারা জানেন, বিশ্বের বাণিজ্যের ৮০ শতাংশ প্রবাহিত হয় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল দিয়ে, এবং বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগর দিয়ে। কাজেই আমরা নিশ্চিত করতে চাই, আমরা মুক্ত ও অবাধ প্রশান্ত মহাসাগর রক্ষা করতে চাই, নাহলে, যতি এই ব্যবসা-বাণিজ্য বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, কিংবা প্রভাব পড়ে, এর ফলে – – এর প্রভাব পড়বে মানুষের সমৃদ্ধিতে, তাদের জীবীকায় এবং আমাদের অর্থনীতিতে কার্যকর রাখার সামর্থ্যের ওপর, কাজেই নৌচালনার স্বাধীনতা রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এরপর, তৃতীয়ত, দক্ষিণে আমরা আমাদের অংশীদারিত্ব জোরালো করতে চাই – – এই অঞ্চলে, যাতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো তাদের নিজ সমুদ্রসীমা জারি ও রক্ষা করতে পারে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, চীন অন্যদের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করবে এবং আইনের শাসন ও আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি অনুসরণ করবে। আমরা এটা করা অব্যাহত রাখতে চাই মহড়ার মাধ্যমে, আমরা অব্যাহত রাখবো – – আন্তর্জাতিক আইনের গুরুত্বের কথা বলা, যা আমরা সম্প্রতি করেছি – – সমুদ্র বিরোধ সংক্রান্ত আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নতুন করে ঢেলে সাজানোর মাধ্যমে। আপনারা জানেন, আমি – – গত বছর, আমি আসিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নিয়েছিলাম, যেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে এবং বৈঠকের ফাঁকে আমাদের মধ্যে ভালো আলোচনা হয়েছে। সকল আসিয়ান দেশের বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে, চীনের বাজে আচরণে তারা সবাই খুব উদ্বিগ্ন, আমরা দেখেছি, কোভিড-১৯ আঘাত হানার পর গত ছয় মাসে এটা আরো বেড়েছে। কোভিড-১৯ নিয়ে চীনের আচরণ আরেক বিস্তৃত আলোচনা, আপনারা তা মানবেন।
আর যে একটা জিনিস আমরা করছি, তা হলো আমাদের নীতি। আমরা আরআইএমপিএসি-এর মতো মহড়া বা এরকম কিছু করা অব্যাহত রাখবো।
আপনারা জানেন, এর সঙ্গে সম্পর্কিত, কেউ একজন ক্যারিয়ার অপারেশন সংক্রান্ত একটি বিষয় তুলেছেন। আমি জানি না, এই ফাঁকা বুলি, যে, আমেরিকান ক্যারিয়ার সেখানে আছে – – পিএলএ-এর আনন্দের জন্যে বা এ জাতীয় কিছু – এটা দিয়ে চীনারা কী বুঝিয়েছে। দেখুন, আমেরিকান বিমানবাহী ক্যারিয়ার দক্ষিণ চীন সাগরে, ইন্দো-প্যাসিফিকে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে এবং আমরা সেখানে অব্যাহতভাবে থাকবো এবং কেউ আমাদের সেখানে থাকা বন্ধ করতে পারবে না।
আন্তর্জাতিক আইন আমাদের যেখানে অনুমতি দেবে, আমরা সেখানেই নৌচালনা করবো, উড়োজাহাজ ওড়াবো এবং অপারেট করবো। এবং আমরা সেটা করি, আবার বলছি, আন্তর্জাতিক আইন ও অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করতে, আমাদের মিত্র ও অংশীদারদের সার্বভৌমত্বকে সহায়তা করতে এবং তাদেরকে এই আশ্বাস দিতে যে, আমরা এগুলো সুরক্ষা করবো।
কেউ একজন ইন্দো-প্যাসিফিকে একটি নতুন সামুদ্রিক নিরাপত্তা কাঠামো সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন, সে সম্পর্কে বলি। আমরা এ নিয়ে কথা বলিনি। তবু বলি, আমরা – – আমরা একটা বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি বটে, আমাদের এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিকভাবে নৌপরিচালনা, অথবা বহুপাক্ষিক এফওএনওপিএস-এর স্বাধীনতার দৃষ্টিকোণ থেকে বৃদ্ধি। আমি আরআইএমপিএসি-এর উল্লেখ করেছি। আমরা দেখেছি, আরো নতুন নতুন দেশ আরআইএমপিএসি-তে যোগ দিচ্ছে। আমরা বলছি, দ্বিপাক্ষিক মহড়া হচ্ছে। আর আমি কেবল সাধারণভাবে দেখছি, বিভিন্ন দেশের মধ্যে অনেক – – অনেক বেশি সহযোগিতা, যদি আপনারা তা মানেন। আর আমার মনে হয়, এরপর বহুপাক্ষিকতা সংক্রান্ত শেষ প্রশ্নটা থাকে।
আপনারা জানেন, আমার অভিজ্ঞতা বলছে — ৯০এর দশক থেকে ইন্দো-প্যাসিফিকে কাজ করছি – যে, ইউরোপের সঙ্গে অমিল এখানে যে, বহুপাক্ষিক হওয়ার বদলে এটির বেশিরভাগই খুব দ্বিপাক্ষিক। তবে আমি বলবো, গত কয়েক মাসে আমি বহুপাক্ষিকতার প্রবণতা অনেক বাড়তে দেখেছি।
আমরা মনে করি, দৃষ্টান্তস্বরূপ, গত কয়েক মাসে, আমাদের মধ্যে – আপনারা জানেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্য চার দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের মধ্যে একটি ভার্চুয়াল “ফাইভ আই” বৈঠক হয়েছে, যা খুবই সফল। আমি মনে করি, অংশীদার ও মিত্রেরা, আমরা সবাই আরো নিয়মিত এরককম বৈঠক অব্যাহত রাখার ব্যাপারে একমত হয়েছি। আমাদের মধ্যে আরো অনেকগুলো বহুপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে – যেমন, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। কাজেই আমরা দেখছি, করোনাভাইরাস আমাদের বহুপাক্ষিকতার দিকে ঠেলছে এবং আমি মনে করি এটা এমন একটা ভালো জিনিস, যা আমাদের সবার অব্যাহত রাখা উচিৎ।
আমি আপনাদের আবারও বলি, গত কয়েক মাসে আমি আমার সমকক্ষদের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা আলোচনা করেছি। আগে যেমনটা উল্লেখ করেছি, এই গতরাতে আমি কথা বলেছি কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে, নিউ জিল্যান্ডের প্রতিরক্ষমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে গতকাল, এবং আমি আমার অনেক, অনেক সমকক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি – ভারতীয়, জাপানি, ব্রুনেই প্রমুখ।
কাজেই, আমি সত্যি সত্যি দেখছি, ইন্দো-প্যাসিফিক ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। আমি মনে করি, এখানে বহুপাক্ষিকতা আরও বাড়বে। এটা হবে একটা নেটওয়ার্কের মধ্যে আমাদের একত্র করা সংক্রান্ত আমার লক্ষ্য – যে নেটওয়ার্কে দেশগুলো আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে, কূটনৈতিকভাবে সলাপরামর্শ করবে এবং সুরক্ষিত করবে আন্তর্জাতিক নিয়ম-ভিত্তিক ব্যবস্থাকে, এই অঞ্চলের, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলোর, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আসিয়ান দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব এবং সেইসব সকল বিষয়, বেশ কিছুক্ষণ ধরে আমরা যেগুলোর কথা এখানে আলাপ করছি।
ড. চিপম্যান: দারুণ। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমি চার জনের আরেকটি গ্রুপ নেবো। তাদেরকে আমি আগাম সতর্ক করে দিতে চাই, যাতে আমি তাদেরকে কথা বলতে বলামাত্র তারা তাদেরকে আনমিউট করতে পারে। তাহলে এই হলো ক্রম – (লিন্ডসে হিলসম?) প্রথমে, এরপর (এরিক লি?), এরপর (সোফিয়া ম্যাকব্রাইড?), তারপর মেইয়া নওয়েন্স। তবে (লিন্ডসে হিলসম?) প্রথম।
প্রশ্ন: (লিন্ডসে হিলসম?) বলছি, চ্যানেল ফোর নিউজ থেকে।
সেক্রেটারি, কয়েকটি প্রশ্নের ভিত্তিতে বলছি- – আপনাকে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে, সেখানে তাইওয়ানে, আমার মনে হয়, একটি সত্যিকার ভীতি কাজ করছে, আপনি জানেন, চূড়ান্ত বিষয়টির, চীনের বহিরাক্রমণ। আপনি প্রশমন নিয়ে যা যা বলেছেন, আমরা তার সবকিছুই অনুধাবন করতে পেরেছি। তবে, আপনি জানেন, যদি, ধরুন, এটাকে যদি একটি সম্ভাবনা হিসেবে ভাবা যায়, পরবর্তী – – পরবর্তী কয়েক বছরে, আমেরিকা তখনকার পরিস্থিতিতে কী করবে? উত্তেজনা হ্রাসের কী উপায় আছে? যে সন্ধিচুক্তি আপনাদের দায়ে ফেলেছে, সেটার কী হবে?
ড. চিপম্যান: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
এরপর (এরিক লি?)
প্রশ্ন: ধন্যবাদ, জনাব সেক্রেটারি।
আমার প্রশ্ন বেশ ভালোভাবেই আগের প্রশ্নকে অনুসরণ করে। আমার প্রশ্ন তাইওয়ান নিয়ে।
ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সঙ্গে একটি জোরালো সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং টিআরএ বিশ্বস্তভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা এই দ্বিতীয় পর্বটি দেখেছি – – টিআরএ-এর অঙ্গীকার সমুচ্চ রেখে রেকর্ড সংখ্যাক অস্ত্র বিক্রি এবং এফওএনওপিএস, তবে আমার প্রশ্নটি বেশি করে ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল সংক্রান্ত।
যেমন, ডিপার্টমেন্ট কিভাবে তাইওয়ানকে এই কৌশলের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করবে? এবং যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ান নিরাপত্তা সম্পর্কের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো কী? এবং শেষ অংশে – – জনাব সেক্রেটারি, তাইওয়ানের সার্বিক প্রতিরক্ষা ধারণা সম্পর্কে আপনার অবস্থান কী?
আপনাকে ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
এবার পরবর্তী – (সোফি ম্যাকব্রাইড?)
প্রশ্ন: হাই দেয়ার। (হিউ বোলিন?) বলছি (সোফিয়া ম্যাকব্রাইড?) এর জায়গায়।
যুক্তরাজ্যের রাশিয়া প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্য জানে না, রাশিয়া ব্রেক্সিট গণভোটে বা অন্যান্য নির্বাচনে হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে কিনা, কারণ গুপ্তচর সংস্থাগুলোকে কখনও তদন্ত করতে বলা হয়নি। যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে বিক্ষিপ্ত মনোযোগের অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিবেদনের ফলাফলের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি আপনার পরামর্শ কী হবে, প্রথমত, রাশিয়ার হস্তক্ষেপকে কতোটা গুরুতরভাবে নিতে হবে, এবং, দ্বিতীয়ত, কিভাবে সামাল দিতে হবে? এটা প্রতিহত করতে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র আরো সহযোগিতা কি দরকার? এই হুমকির ব্যাপারে অজ্ঞতার মাধ্যমে যুক্তরাজ্য কী ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে?
ড. চিপম্যান: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ঠিক আছে, এরপর মেইয়া নওয়েন্স। আমি নিশ্চিত এটা মেইয়া নওয়েন্স, যেহেতু তিনি অন্য কারো নেমপ্লেট ব্যবহার করছেন না। মেইয়া, শুরু করুন।
প্রশ্ন: ধন্যবাদ, জন।
এবং আপনাকে ধন্যবাদ, জনাব সেক্রেটারি।
জনাব সেক্রেটারি, আপনি উল্লেখ করেছেন, ফাইভ-জি একটি খোলনলচে বদলে দেওয়া প্রযুক্তি এবং আপনি বিশদভাবে বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অংশীদারিত্ব এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদার ও মিত্র দেশের সামরিক বাহিনীগুলোর একত্রে কাজ করার সক্ষমতার ওপর যুক্তরাষ্ট্র কতোটা গুরুত্ব আরোপ করে।
ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোয় হুয়াওয়ে এবং অন্যান্য বিস্তৃত চীনা ডিজিটাল প্রযুক্তির সমন্বয় এইসব দেশের সঙ্গে প্রযুক্তি সমন্বয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্বের ওপর কিভাবে পরিবর্তন বা প্রভাব ফেলবে?
ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: এটা সত্যি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। এখানে বলে রাখি, যুক্তরাজ্যে যেটাকে বলা হয় একটি দলীয় রাজনৈতিক সম্প্রচার, যা নিয়ে আইআইএসএস তথাকথিত ডিজিটাল সিল্ক রোডের ব্যাপারে অনেক কাজ করছে।
এবং মেইয়া নওয়েন্স, যিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করেন, আমাদের টিমের সঙ্গে ৯০০ এর বেশি অনন্য ডেটা পয়েন্ট একত্র করেছেন। এবং আমরা আশা করবো, এটা শিগগিরই সবার প্রাপ্য করা হবে, যাতে ডিজিটাল সিল্ক রোড কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সাক্ষ্য-ভিত্তিক বিশ্লেষণ নিশ্চিত করা যায়।
তবে সেক্রেটারি পাঁচটি প্রশ্নের জবাব দেওয়ার আগে আমি আরও একজনকে আহ্বান জানাবো। ইনি আমাদের তরুণ নেতৃত্বের একজন, ব্লেক হেরজিংগার, প্লিজ। ব্লেক, শুরু করুন।
প্রশ্ন: ধন্যবাদ, জন।
এবং ধন্যবাদ, জনাব সেক্রেটারি।
তাহলে, গত কয়েক বছরে একটা প্রকাশ্য আলোচনা চলছে যে, একটি একান্তে জানিয়ে দেওয়া নিষেধ-রেখা ২০১৬ সালের দিকে স্কারবরো শোল পুনর্দখল করা থেকে চীনকে বিরত করেছিল। তবে আমি জানতে চাই, আপনি আলোচনা করবেন কিনা, ২০২০ সালে আমাদের নিষেধ-রেখাটি কোথায়?
ড. চিপম্যান: আপনার পালা জনাব সেক্রেটারি।
সেক্রেটারি এসপার: আচ্ছা, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমি- একপ্রকার কোনো নির্দিষ্ট ক্রম না মেনে, আমি শেষ প্রশ্নটার জবাব দিচ্ছি সবার আগে। ঘটনা যাই হোক না কেন, নিষেধ-রেখা নিয়ে আলোচনা কোনো উৎকৃষ্ট চর্চ্চা নয়। আমি শুধু আপনাকে এটুকু বলতে পারি যে, আমি আগে যেসব কথা বলেছি, আমাদের অভিন্ন মূল্যবোধ প্রসঙ্গে; আন্তর্জাতিক নিয়ম ও আদর্শ সুরক্ষা বিষয়ে; ইন্দো-প্যাসিফিকে আমাদের অঙ্গীকার পূরন বিষয়ে, সেটা চুক্তিতে বাঁধা অঙ্গীকার হোক অথবা হোক অন্যদের কাছে আমাদের করা রাজনৈতিক অঙ্গীকার – সেসব বিষয় আমরা খুব জোরালোভাবে বিশ্বাস করি। কাজেই এটাই হলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং আমরা তা পূরনে চেষ্টা অব্যাহত রাখব।
আমার অনুমান, এটা থেকে ভালোভাবে তাইওয়ানের আলাপে চলে যাওয়া যায়, কেননা সেটাই ছিল প্রথম প্রশ্নগুলোর একটি। দেখুন, ওই অঞ্চলে পিএলএ-এর কর্মকাণ্ড অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে এবং এগুলো ভুল বোঝাবুঝির ঝুঁকি ব্যাপকভাবে বাড়িয়ে দেয়। এটাও বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমি মনে করি না, চীনের প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে কাউকে, বিশেষ করে তাইওয়ানকে আশ্বস্ত করা যায়, কেননা আমরা তাদেরকে সেগুলো বারবার ভাঙ্গতে দেখেছি। ’৯৭ সালে হস্তান্তরের সময় আমি হংকং-এ ছিলাম এবং আমার স্পষ্ট মনে পড়ে, চীন বুনিয়াদি আইন অটুট রাখার অঙ্গীকার করেছিল, তারা এক দেশ, দুই ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। আমার মনে হয় না, তাইওয়ানে এই মুহূর্তে কেউ বিশ্বাস করে যে, এক দেশ, দুই ব্যবস্থার ওয়াদা রক্ষা করার ব্যাপারে চীনের কোনো অভিপ্রায় আছে। কাজেই এটাই হলো সমস্যা।
দেখুন, আমাদের সমস্যা – তাইওয়ানের ব্যাপারে আমরা কী করবো, তা নিয়ে ১৯৭৯ সালে করা তাইওয়ান রিলেশন্স অ্যাক্টের পর থেকে আমাদের তাইওয়ান নীতি অপরিবর্তিত আছে। আর এরপর ১৯৮২ সালে, প্রেসিডেন্ট রিগান অস্ত্র চুক্তির শর্ত সংক্রান্ত নীতি প্রতিষ্ঠা করেন – – তাইওয়ানে অস্ত্র বিক্রি পুরোপুরি পিআরসির হুমকির ওপর নির্ভরশীল।
কাজেই আমরা দেখেছি, পিআরসি আরো আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। আমরা তাদেরকে সামরিক শক্তি সমাবেশ করতে দেখেছি। আমরা তাদেরকে গোয়ার্তুমি করতে দেখেছি। তাইওয়ানের দিকে তারা হাজার না হোক, শত শত ক্ষেপনাস্ত্র তাক করে রেখেছে। এবং – এবং আমরা প্রেসিডেন্ট শি এবং তার দলকে দেখেছি, এটিকে সত্যি এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে।
কাজেই আমরা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি ওয়াদাবদ্ধ। তাইওয়ানের ব্যাপারে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরন করবো, যা, আপনারা বলতে পারেন, একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল অঞ্চলের স্বার্থের বিবেচনায়।
আপনারা জানেন, তাইওয়ান প্রশ্নে আমরা অস্ত্র বিক্রি নিয়ে কথা বলেছি। আমরা অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রাখবো। আমরা নৌচালনার স্বাধীনতা সংক্রান্ত অভিযান জারি রাখবো, আর তাতে তাইওয়ান প্রণালীও অন্তর্ভূক্ত, আমার মনে হয় আমরা গত সপ্তাহের দিকে সাম্প্রতিকতম অপারেশনটি চালিয়েছি। তবে আমি মনে করি, তাইওয়ান নিয়ে পরিস্থিতির অবনতি আসলে ঘটাচ্ছে চীন এবং আরো বৃহত্তরভাবে পুরো অঞ্চলে, যেমনটা কয়েকবার আলোচনা করলাম।
রাশিয়া এবং যুক্তরাজ্য নিয়ে প্রশ্নে, আমি আসলে পুরোটা শুনতে পারিনি। আমার মনে হয়, ওটা ছিল নির্বাচনের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে। আমি শুধু বলবো, দেখুন, এটা খুব পরিষ্কার যে, রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশ, আমার বিশ্বাস, হস্তক্ষেপ যদি নাও হয়, তবু আমেরিকান নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চায়। এবং সে ব্যাপারে আমরা ব্যাপকভাবে কাজ করছি। ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির নেতৃত্বে একটি আন্তঃসংস্থা প্রচেষ্টায় সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স। এবং আমি পুরোপুরি আস্থাশীল আমরা আমাদের নির্বাচনের বিশুদ্ধতা রক্ষা করতে পারবো, কেননা একটি গণতন্ত্রের জন্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তার নির্বাচনের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করা। ২০১৮ সালে আমরা খুব ভালো একটি নির্বাচন পেয়েছিলাম, এবং আমি আস্থাশীল যে, আসন্ন প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেস এবং সিনেট নির্বাচনেও একই জিনিস নিশ্চিত করতে আমরা সম্ভাব্য সব কিছু করছি।
কাজেই, আমাদের যুক্তরাজ্যের বন্ধুদের প্রসঙ্গে – – আপনারা জানেন, তা খুবই সামর্থ্যবান একটি দেশ। আমরা অবশ্যই সহযোগিতা দিতে সর্বদা প্রস্তুত। তবে সেখানকার নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে সফল হওয়ার মতো সামর্থ্য রাশিয়ার আছে বলে আমি মনে করি না। আমরা বিশ্বের অন্যত্র তাদরকে সে চেষ্টা করে সফল হতে দেখেছি।
এরপর শেষ প্রসঙ্গ ফাইভ-জি নিয়ে। দেখুন, ফাইভ-জি বৈপ্লবিক, সেটা শুধু নিরাপত্তা সম্পর্কের কারণে নয়, বরং বলতে পারেন, সমৃদ্ধি ও প্রযুক্তি-কর্তৃত্বের কারণে। এ কারণে আমরা বিশ্বাস করি, চীন সরকার হুয়াওয়েকে সাহায্য দেয়, প্রভাবিত করে এবং সেটার পেছনে সম্পদ ঢালে। হুয়াওয়ে নিয়ে আমাদের এতো বিশাল উদ্বেগ কেন, সে ব্যাপারে আমি ন্যাটো প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে বহুবার বলেছি, এই জোটে চীনা প্রভাব নিয়ে আমাদের উদ্বেগ এবং বিশেষ করে আমাদের সিস্টমগুলোয় হুয়াওয়ের প্রভাব।
এটা আমাদের কাছে স্পষ্ট, আমরা এ ব্যাপারে খুবই স্বচ্ছ দৃষ্টিসম্পন্ন – যে, হুয়াওয়ে অথবা অন্য কোনো চীনা কোম্পানি আমাদের নেটওয়ার্কে ঢুকলে আমরা সেই নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা নিয়ে সন্দিহান হবো এবং সেটা আমাদের মিত্রদের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য লেনদেনে আমাদের সামর্থ্য এবং অপারেশনের পরিকল্পনা এবং এইসব কর্মকাণ্ডের সামর্থ্যের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলবে।
কাজেই – কাজেই হুয়াওয়েকে ঢুকতে দেওয়া হবে একটা অন্তরায়। সেটা ন্যাটোর ক্ষেত্রে খাটে, সেইসঙ্গে খাটে বিশ্বজুড়ে অন্যান্য সন্ধিচুক্তি অংশীদারদের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিকে আমাদের অংশীদার ও মিত্রদের ক্ষেত্রে। সে কারণে হুয়াওয়েকে পরিহার করতে আমরা কিছুদিন ধরে দেশগুলোকে উৎসাহিত করে আসছি।
আমি সন্তুষ্ট যে, দেখতে পাচ্ছি স্রোত সেদিকেই গড়াচ্ছে। আমরা দেখেছি, গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাজ্য হুয়াওয়ে থেকে সরে গেছে, আমরা দেখছি ইউরোপে অন্যান্য দেশগুলো একই কাজ করছে, আমরা দেখছি ইন্দো-প্যাসিফিকের দেশগুলো ইতিমধ্যে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কাজেই আমরা এখানে যুক্তরাষ্ট্রে এগিয়ে যাওয়া অব্যাহত রাখবো, তবে স্রোত যেদিকে যাচ্ছে, আমি সন্তুষ্ট।
ড. চিপম্যান: জনাব সেক্রেটারি, অনেক ধন্যবাদ।
আমরা চার জনের আরেকটি গ্রুপ নেবো, পারলে পাঁচ। প্রথম চারজনকে আমি সতর্ক করে দেবো, আমি তাদের ডাক দেওয়ামাত্র নিজেদের আনমিউট করতে। দিয়ান সেপতিয়ারি, অ্যারন কোনেলি, ইয়োসো ফুরুমোতো এবং রবার্ট ওয়ার্ড। তবে দিয়ান সেপতিয়ারি প্রথমে, যিনি ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা পোস্ট থেকে। দিয়ান?
প্রশ্ন: শুভ সন্ধ্যা। (মিনিস্টার?), আমি (ইন্দোনেশিয়া?) – – (ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা?) বিষয়ে আমি প্রশ্ন করতে চাই। কেননা এ মাসের শুরুর দিকে, ডিফেন্স সিকিউরিটি কোঅপারেশন এজেন্সি আটটি অসপ্রে উড়োজাহাজ বিক্রির সম্ভাবনা ঘোষণা করে, (অশ্রবণযোগ্য) (ইন্দোনেশিয়া, আমরা নই?) পেয়েছে এই চুক্তি থেকে। আমরা এও জানি, মন্ত্রী প্রোবোয়ো রাশিয়া সফর করেছেন রুশ ও চীনা সমকক্ষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে।
আপনি কি আমাদের দিতে পারেন, যেমন কৌশল, তাৎপর্য এই (অশ্রবণযোগ্য) (ইন্দোনেশিয়ার জন্য?) এবং যুক্তরাষ্ট্র।
ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: ধন্যবাদ, দিয়ান।
এবং আমি যাবো অ্যারন কোনেলির কাছে, প্লিজ, যিনি এশিয়ায় আইআইএসএস দপ্তর থেকে এসেছেন, যিনি ইন্দোনেশিয়ার বিষয় ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেন। অ্যারন?
প্রশ্ন: ধন্যবাদ আপনাকে, ড. চিপম্যান।
জনাব সেক্রেটারি, আপনি চার বার অভিন্ন মূল্যবোধের কথা বলেছেন। আমি ভাবছিলাম, আপনাকে আরেকটু চাপ দিতে পারি কিনা, এইসব মূল্যবোধ কী সে সম্পর্কে আরেকটু বিশদ বলবার জন্য। কেননা, যদি আপনি ইন্দো-প্যাসিফিকে, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির মিত্রদের দিকে তাকান, থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ও-চা ২০১৪ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা নিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট দুতার্তে ফিলিপাইনে বিতর্কের পরিসর সীমিত করে দিয়েছেন বলে অভিযুক্ত। এবং যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মিত্রদের অনেকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আমি জানতে চাই, আপনি কিভাবে এইসব প্রশ্নের জবাব দেবেন, এবং এছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিকে যেসব মূল্যবোধ অভিন্ন বলে আপনি বিশ্বাস করেন, সে বিষয়ে আরেকটু বিস্তারিত যদি বলেন।
অনেক ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: এবং রবার্ট ওয়ার্ড, যিনি জাপানে আইআইএসএস-এর প্রধান। রবার্ট?
প্রশ্ন: ধন্যবাদ, জন।
ধন্যবাদ, জনাব সেক্রেটারি, এ অঞ্চল নিয়ে আপনার বিস্তৃত মন্তব্যের জন্যে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাপানের প্রতিরক্ষা নীতি নিয়ে বিতর্কে দ্রুত বদল ঘটেছে। ইন্দো-প্যাসিফিকে জাপানের নিরাপত্তা ভূমিকার গতিপ্রকৃতি আপনি কিভাবে দেখেন?
ধন্যবাদ আপনাকে।
ড. চিপম্যান: এবং জাপান থেকে আরও, ওয়াশিংটনে মাইনিচি প্রতিনিধি ইয়োসো ফুরুমাতো। ইয়োসো?
প্রশ্ন: হ্যাঁ, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমি এশিয়ার দিকে মধ্যম-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সম্ভাবনা বিষয়ে প্রশ্ন করতে চাই, জনাব সেক্রেটারি, আপনার কাছে কি এইসব ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের সময়সূচি আছে? যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে সম্ভাব্য লক্ষ্যস্থলগুলো সম্পর্কে কোনো ধারণা দিতে পারেন?
ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: যেহেতু আপনারা সবাই খুব মুচমুচে সব প্রশ্ন করেছেন, আমার মনে হয়, আমি আরো দুজনকে ঠেলে দেই।
লিন কুয়ক, প্লিজ?
প্রশ্ন: অনেক ধন্যবাদ, জন।
এবং ধন্যবাদ, জনাব সেক্রেটারি।
জনাব সেক্রেটারি, আমি সুনির্দিষ্ট করে দক্ষিণ চীন সাগরে মিশচিফ রিফ সম্পর্কে আপনাকে একটি প্রশ্ন করতে চাই। দেখুন, সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে সেক্রেটারি পম্পেও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ট্রাইব্যুনালের এই আদেশ অথবা এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত যে, মিশচিফ রিফে পিআরসি-এর কোনো আইনসিদ্ধ ভূখণ্ডগত অথবা সামুদ্রিক দাবি নেই, যা ফিলিপাইনের সার্বভৌম অধিকার ও এক্তিয়ারে পড়ে। এখন, অবশ্যই, মিশচিফ রিফ জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকা একটি ভূখন্ড, যা চীনারা একটি কৃত্রিম দ্বীপে রূপান্তরিত করেছে এবং সামরিকায়ন করেছে। ডিওডির কাছে সেক্রেটারি পম্পেওয়ের মন্তব্যের কী তাৎপর্য দাঁড়ায় মিশচিফ রিফে অথবা তার চারপাশে অভিযানের ব্যাপারে? কেননা এফওএনওপি (বা) দক্ষিণ চীন সাগরে সামরিক মহড়া কোনোটাই মিশচিফ রিফে সমরসজ্জা বৃদ্ধির অভিমুখ পাল্টে দিতে বা বন্ধ করতে সহায়ক হয় না।
ড. চিপম্যান: অনেক ধন্যবাদ।
এবার, এ দফার শেষজন, (আঁতোয়ান লেভেসকে?)।
প্রশ্ন: ধন্যবাদ, জন।
ধন্যবাদ, জনাব সেক্রেটারি।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক এবং সংকট স্থিতিশীলতা, তা উপমহাদেশেই (বা ক্রমবর্ধমান?) হোক, বা ভারত মহাসাগরে, এ নিয়ে আপনি কতোটা উদ্বিগ্ন? দুই দেশের মধ্যে বিপুল উত্তেজনা এবং বাগযুদ্ধের পাশাপাশি আনুষ্ঠানিক সংলাপের অভাব বিদ্যমান। এ ব্যাপারে নিজেদের অব্যাহত ভূমিকা কী বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র?
ড. চিপম্যান: আপনার পালা, জনাব সেক্রেটারি।
সেক্রেটারি এসপার: এতো প্রশ্ন, অথচ এতো কম সময়। ঠিক আছে। আমি চেষ্টা করবো যতোটা পারি সবগুলোর জবাব দিতে।
প্রথম প্রশ্নটির বিষয় ভারতের সঙ্গে – আমি দুঃখিত, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা।
আপনারা জানেন, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক। আমি একাই আমার সমকক্ষের সঙ্গে এ বছর কয়েকবার কথা বলেছি, এবং আমি মনে করি, এটা – – আপনারা জানেন, ওনার আমেরিকায় থাকার, বলতে পারেন, পশ্চাৎপট আছে, সামরিক বাহিনীতে তার চাকরির অংশ হিসেবে। কাজেই আমাদের ভালো সম্পর্ক।
আমরা যখন কথা বলেছি, উনি অনুধাবন করেছেন, আমরা ইন্দোনেশিয়ার সার্বভৌমত্ব পুরোপুরি সমর্থন করি। আমরা তাদেরকে এমন এক অংশীদার হিসেবে সমর্থন করি, যারা এ অঞ্চলে চীনের অশুভ আচরণ ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে, বিশেষ করে সেখানে ইন্দোনেশিয়ার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে বিরোধকে ঘিরে।
আমরা সকল মিত্র ও অংশীদারকে আমেরিকার সরঞ্জাম কিনতে উৎসাহিত করি। কেন? কারণ, প্রথম ও সবচেয়ে বড় যেটা, এটা আমাদের মধ্যে ঐক্য তৈরি করে; দ্বিতীয়ত, এটা যে কোনো অঘটনে আমাদের একে অপরের অংশ হিসেবে কাজ করতে সহায়ক হয়; এবং তৃতীয়ত, আমরা মনে করি, যা হাজির আছে, তার মধ্যে এটাই সবচেয়ে ভালো বিকল্প। কাজেই এসব কারণে আমাদের দেশগুলোর মধ্যে অস্ত্র বিক্রি নিয়ে আমরা কথা বলা অব্যাহত রাখি। আমার দৃষ্টিভঙ্গি হলো, আমাদের দেখাসাক্ষাৎ ও আলোচনা জারি থাকা উচিৎ। আমি অনেকবার এটা করেছি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে। আমি আমার মেয়াদে ইন্দোনেশিয়া সফরের ব্যাপারে আশবাদী। কাজেই আমি মনে করি, এ সবগুলো বিষয়ই খুব জরুরি।
অভিন্ন মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্নের ক্ষেত্রে – – দেখুন, আমরা অভিন্ন মূল্যবোধের তালিকা তৈরি করতে পারি। আমার মাথায় তাৎক্ষণিকভাবে যা আসছে, বলছি। যেমন ধরা যাক, গণতন্ত্র – – ঠিক আছে, মুক্ত বাজার, মানবাধিকার – – মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, ব্যক্তির অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা, এগুলো সব – – যেগুলো আমরা জানি, আমাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে সংরক্ষিত আছে, যা আমি এবং অন্যেরা সমর্থন ও রক্ষা করবো বলে শপথ নিয়েছি।
এবং অন্য দেশের উত্থান-পতনের ব্যাপারে বলি, আমি এখানে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতির বাইরে থাকতে চেষ্টা করি, এবং বিদেশেও আমি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়তে চাই না।
তবে ওগুলো আমাদের অভিন্ন মূল্যবোধ, সংক্ষিপ্ত তালিকা। এবং এইগুলো আমরা এগিয়ে নিতে, সমর্থন করতে এবং রক্ষা করতে বহু বহু বছর চেষ্টা করেছি। এবং আমরা মনে করি – – এগুলো দশকের পর দশক আমাদের কাজে লেগেছে, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে।
ইন্দো-প্যাসিফিক সম্পর্কে বলতে গেলে, আমরা কথা বলেছি – – আপনারা জানেন, জাপানের নিরাপত্তা ভূমিকা নিয়ে। আমি দেখি, জাপানের নিরাপত্তা ভূমিকা বাড়ছে। তারা প্রশান্ত মহাসাগরে নিরাপত্তার নোঙর। আমার – – আমাদের জাপানের সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক বিদ্যমান।
আমেরিকান বাহিনীর অনেকে জাপানে অবস্থান করছেন এবং আমরা অবশ্যই এ অঞ্চলে জাপানের আরো সক্রিয় ভূমিকাকে স্বাগতম জানাই। তারা বিশ্বস্ত বন্ধু যাদের দারুণ সামর্থ্য ও ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা আছে।
এবং, আবারও, আমরা – – আমরা কেবল সম্পর্ককে সেখানে বৃদ্ধি পেতে দেখছি। আমি প্রায়শই আমার জাপানি সমকক্ষের সঙ্গে কথা বলি, তারা কী করতে পারে এবং সন্ধিচুক্তির মিত্র হিসেবে আমরা কিভাবে আরো ভালোভাবে একত্রে কাজ করতে পারি, তা নিয়ে।
মিশচিফ রিফকে আমরা দেখি জাতিসংঘের আলোকে।
কনভেনশন অন দ্য ল অব দ্য সি-এর ২০১৬ সালের সালিসি রায় অনুযায়ী, আমরা মনে করি পিআরসির দাবি বেআইনি।
এবং সে কারণে আমরা ওই কৃত্রিম দ্বীপের চারপাশে অথবা ভূখণ্ডগত সমুদ্রে ইইজেডকে স্বীকৃতি দেই না। এবং আবারও, আমরা আমাদের অংশীদার ও মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা অব্যাহত রাখবো এবং এফওএনওপি পরিচালনা কবরো, যাতে চীনের কাছে পরিষ্কার হয় যে, আমরা তাদের দাবি মেনে নেই না।
আমার মনে হয়, শেষ প্রসঙ্গটি ছিল পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে পারমাণবিক সংকট স্থিতিশীলতা নিয়ে। স্পষ্টতই, আপনি যখন পারমাণবিক সক্ষমতা-বিশিষ্ট দুটি দেশের মধ্যে উত্তেজনা দেখেন, আমরা সেটা খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করি।
আমি আমার ভারতীয় ও পাকিস্তানি সমকক্ষের সঙ্গে প্রায় নিয়মিত কথা বলি। এটা এমন একটা বিষয়, যার ব্যাপারে আপনাকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে, কেননা কেউ এ দু দেশের মধ্যে একটি সংঘাত দেখতে চায় না, এবং অবশ্যই এমন সংঘাত দেখতে চায় না, যা বাড়তে পারে।
আমি এখন এমন কোনো আভাস দেখছি না যে, তা ঘটতে পারে। তবে এটা এমন একটা ব্যাপার, যা আমরা নজর রাখছি, শুধু ওই অংশে না, বিশ্বের অন্যত্রও।
ড. চিপম্যান: জনাব সেক্রেটারি, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আমার মনে হয়, চার মিনিটের মধ্যে আমরা শেষ করবো, তবে এটা আমাকে আরো দুটি প্রশ্ন করার সময় দিচ্ছে, আপনি জবাব দেবেন এবং তারপর আমি আপনাকে ধন্যবাদ দেবো যে ৫৯ মিনিট আপনি আমাদের সদয়ভাবে দিয়েছেন, তার জন্যে।
তাহলে যে দুজনকে আমি ডাকবো, তারা হলেন যুক্তরাজ্য থেকে অ্যালান বাউডেন, এরপর ক্যাম্বোডিয়া থেকে শ্যারাডিন পিচ। তাহলে অ্যালান বাউডেন, আপনার পালা।
প্রশ্ন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এবং লন্ডন থেকে শুভ সন্ধ্যা। আমার পক্ষ থেকে দুই পর্বের একটি প্রশ্ন, তবে আমি সংক্ষিপ্ত থাকতে পারবো আশা করি।
আমরা কথা বলেছি (আবশ্যিকভাবে?) (ইন্দো-এশিয়া-প্যাসিফিক) নিয়ে, তবে আমি খুব আগ্রহীও যে আপনি (ইন্দো-প্যাসিফিক?) এবং (ইউরো-আটলান্টিক?) এবং আরো সম্ভবত ন্যাটোর অপারেশনের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভারসাম্যকে কিভাবে দেখেন, এবং এই দুই অঞ্চলের মধ্যে উপস্থিতি এবং অগ্রাধিকারের ভারসাম্যের ব্যাপারে আপনার এক ধরনের (পরিকল্পনা?)।
এরপর এর সঙ্গে সম্পর্কিত, আপনি ওই অতিরিক্ত (ন্যাটো অথবা ইউরো-আটলান্টিক?) অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভূমিকাকে কিভাবে দেখেন এবং ইন্দো-এশিয়া-প্যাসিফিকে (শোনা যায় না) অংশীদারিত্বের ভূমিকাকে কিভাবে দেখেন। আপনি যদি এ ব্যাপারে আরো কিছু বলেন, কৃতজ্ঞ থাকবো।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: ধন্যবাদ।
এবার আমরা ক্যাম্বোডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্ট্র্যাটেজিক অ্যাফেয়ার্সের নির্বাহী পরিচালক শ্যারাডিন পিচকে দিয়ে শেষ করবো।
প্রশ্ন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জনাব সেক্রেটারি।
আমি শেষ প্রশ্নটি করতে পেরে খুশি। আমার প্রশ্ন এ বছর যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যাম্বোডিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি নিয়ে। তবে গত কয়েক বছর ধরে এই সম্পর্ক খুব ভালো যাচ্ছে না।
ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে একটি নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদ আছে, যাতে বলা হয়েছে – – নির্দিষ্টভাবে ক্যাম্বোডিয়া ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক অথবা ক্যাম্বোডিয়া চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে। এবং একটা বড় অভিযোগ হলো (শোনা যায় না) গত কয়েক মাসে থাকতে পারে – – (একটি সন্দেহজনক) সম্পর্ক, চীন ক্যাম্বোডিয়ায় একটি নৌঘাঁটি তৈরি করছে।
আপনার দৃষ্টিকোণ থেকে, জনাব সেক্রেটারি, ক্যাম্বোডিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক জোরালো করতে কী সহায়ক হতে পারে বলে আপনি মনে করেন এবং এই অভিযোগের ব্যাপারে আপনার অবস্থান কী?
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: জনাব সেক্রেটারি?
সেক্রেটারি এসপার: আচ্ছা, এসব প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ।
আমি মনে করি – আপনারা চাইলে, আমি শুরুতে শেষ প্রশ্নে চলে যেতে চাই। যুক্তরাষ্ট্র-ক্যাম্বোডিয়া প্রসঙ্গে, আমি মনে করি এটা – – বৃহত্তর ইস্যুতে কথা বলা যাক। আর সেটা হলো কোনো দেশ চীনের বলয়ের কাছে চলে যেতে থাকলে, সেই দেশকে নিয়ে উদ্বেগ। বিভিন্ন কারণে সেটা হতে দেখেন আপনারা।
দেশগুলোর এটা করার একটা প্রধান কারণ হলো চীন তাদের ওপর জবরদস্তি চালাচ্ছে। তারা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা অথবা কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার হুমকি দিচ্ছে, অথবা অন্য কিছু করছে। আমরা দেখি, চীন বিভিন্ন দেশকে প্রলুব্ধ করছে ঋণ দিয়ে – – এমন ঋণ যা শেষ নাগাদ ঋণ ফাঁদে পর্যবসিত হয়, অথবা নৌঘাঁটি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, যা তাদের বাণিজ্যিকভাবে লাভবান করবে।
তবে এইগুলো হলো – – এ অঞ্চলে নিজের ক্ষমতা ও প্রভাব সম্প্রসারিত করতে চীনের প্রচেষ্টা এবং অবশ্যই এ অঞ্চলের বাইরেও। আপনারা জানেন, এতো জায়গা থাকতে বিদেশে চীনের প্রথম ঘাঁটি হলো জিবুতি। কাজেই আমরা যখন দেখি, কোনো দেশ এ ধরনের জবরদস্তির কাছে নতি স্বীকার করছে, আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠি।
এ কারণে আমি বলেছি, ইন্দো-প্যাসিফিকে আমাদের উচ্চাভিলাষ হলো আমাদের বন্ধু, মিত্র ও অংশীদারদের রক্ষা করা, দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা করা, আন্তর্জাতিক নিয়ম-ভিত্তিক ব্যবস্থা সুরক্ষা করা এবং এইসব জিনিস। এবং চীনকে তার অঙ্গীকার মেনে চলতে আহ্বান জানানো।
কাজেই, আবারও, আমি মনে করি দেশগুলো এই একই ধারণাগুলোকে যতো গ্রহণ করবে, যতো তারা চীনের বিরুদ্ধে শক্তভাবে দাঁড়াতে পারবে – – দাঁড়াতে পারবে সেইসব মূল্যবোধের পক্ষে, যেগুলোর কথা এখানে আলোচনা করা হলো, ততো ভালো। কারণ, আমরা যদি সাবধান না হই, আমরা নিজেদের এমন এক পরিস্থিতিতে দেখবো, যেখানে চীন নেতৃত্ব নিয়ে নিয়েছে এবং আমরা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় উপণীত হবো, কিংবা কমপক্ষে একটি আঞ্চলিক ব্যবস্থায়, যেখানে চীন সবার নেতা এবং চীনের মূল্যবোধের ভিত্তি করে সেটা বানানো। আমি মনে করি না, আমাদের কেউ সেটা চায় – – শেষ পর্যন্ত সেটা হোক দেখতে চায়।
ইন্দো-প্যাসিফিক বনাম ইউরোপ সংক্রান্ত প্রথম প্রশ্নে আসি। আমি এটাকে সেভাবে কোনো প্রতিযোগিতা মনে করি না। আমাদের জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল বলা হয়েছে, আমরা এখন এক বিশাল ক্ষমতার প্রতিযোগিতার যুগে আছি। তার মানে সামনে এগুতে হলে আমাদের উচ্চ-তীব্রতার সংঘাতের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আমরা দেখি দেশগুলো এক ধরনের স্তরীভূত হয়ে আছে। একেবারে উপরের স্তরে চীন, এরপর রাশিয়া।
এ জন্যে আমি এই দুই অঞ্চলকে, এবং নির্দিষ্টভাবে বললে এগুলোর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই কমান্ডকে বিশেষ গুরুত্ব দেই – যথাক্রমে ইন্ডোপ্যাকম এবং ইউরোপিয়ান কমান্ড। তার মানে এই নয় যে, এটা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা নয়, কেননা এটা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাই। আমরা দূর-দূরান্তে চীন ও রাশিয়া উভয়কেই দেখতে পাই, সেটা, আপনারা জানেন, উত্তর মেরু হলেও, যেখানে চীন – – যেখানে রাশিয়ার স্পষ্ট সীমান্ত আছে, চীনের নেই। আপনারা এদেরকে আফ্রিকায় দেখতে পাবেন, দেখতে পাবেন মধ্যপ্রাচ্যে।
কাজেই আমার লক্ষ্য হলো এ দুয়ের মধ্যে ভারসাম্য আনা – দুই অঞ্চলের মধ্যে এবং এটা নিশ্চিত করা যে, আমি যথাযথভাবে এদের অগ্রাধিকার নিরূপণ করছি, তবে বাইরে থাকা অন্যান্য কমান্ডের পরিপ্রেক্ষিতে, এ কারণে আমি ঘনিষ্ঠভাবে দেখছি কিভাবে আমরা সম্পদ সংগ্রহ করি, আমাদের ফোর্সগুলোর বিন্যাস, দীর্ঘমেয়াদী প্রতিযোগিতা, বলতে পারেন, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে এই ক্ষমতার প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত হতে সর্বোচ্চ শক্তিবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে বিশ্বজুড়ে আমরা যা যা করে থাকি, তার সবই।
ড. চিপম্যান: জনাব সেক্রেটারি, ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে এতো বৈচিত্রপূর্ণ একটি অংশগ্রহণে এরকম চমৎকার একটি কথপোকথনকে অনুপ্রাণিত করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ জনাব সেক্রেটারি, প্রতিরক্ষা, কূটনীতি এবং একই সঙ্গে যৌক্তিক বিতর্ক ও কৌশলগত স্বচ্ছতার বিকাশে আইআইএসএস-এর প্রচেষ্টাকে সহযোগিতা করার জন্য, যেখানে আপনি আজ চমৎকারভাবে যুক্ত হয়েছেন।
এবং চূড়ান্তভাবে আমি আশা করছি ৪ থেকে ৬ ডিসেম্বর কিংডম অফ বাহরাইনে আইআইএসএস-এর মানামা সংলাপে আপনাকে আমরা সশরীরে পাবো, যেখানে আমরা এই কলে অংশ নেওয়া সকল অঞ্চলের প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একত্র করতে পারবো।
জনাব সেক্রেটারি, আইআইএসএস-এ আমাদের সকলের পক্ষ থেকে এবং যারা এই কলে ছিলেন, তাদের পক্ষ থেকে আপনার অংশগ্রহণের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সেক্রেটারি এসপার: দারুণ। আপনাকে ধন্যবাদ, জন। আজ আপনার অডিয়েন্সের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। এটার সঞ্চালনার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
অত্যন্ত ভালো করেছেন, একটি ভালো আলোচনা, বিস্তৃত বিষয়ে আলোচনা। আমি আপনাদের সঙ্গে শিগগিরই কখনও ফলো আপ করবো আশা করি। যদি মানামা না হয়, পরের বছর সাংগ্রি-লা। কাজেই আবারও ধন্যবাদ।
ড. চিপম্যান: ধন্যবাদ, জনাব সেক্রেটারি।
–শেষ