যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ, ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত যক্ষ্মা (টিবি) হাসপাতালকে এক ছাদের নিচে সকল ধরনের যক্ষ্মা পরীক্ষা, নির্ণয় ও চিকিত্সা করার সর্বাধুনিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করেছে।
ঢাকা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১ — আজ, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর. মিলার, মাননীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি-র ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর র্যান্ডি আলীর সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ান-স্টপ যক্ষ্মা (টিবি) সেবা কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন।
ইউএসএআইডি-র সহায়তায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট যক্ষ্মা (টিবি) হাসপাতালকে সর্বাধুনিক পরীক্ষা করার ব্যবস্থা ও ল্যাবরেটরি যন্ত্রপাতি দ্বারা সজ্জিত করে দেশে যক্ষ্মা চিকিত্সার প্রধান কেন্দ্রে রূপান্তরিত করেছে। এছাড়াও ইউএসএআইডি-র অ্যালায়েন্স ফর কমব্যাটিং টিবি (যক্ষ্মা মোকাবেলায় জোট) প্রকল্পের অধীনে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের যক্ষ্মা রোগ পরীক্ষা ও নির্ণয় করা — বিশেষ করে বহু-ওষুধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মা পরীক্ষা ও নির্ণয় এবং সব ধরনের যক্ষ্মা রোগীদের নিরাপদ ও কার্যকর চিকিত্সা প্রদানের উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
ফলে, যক্ষ্মা রোগীদের চিকিত্সা নিতে অন্য কোথাও যাওয়ার আর প্রয়োজন হবে না এবং নির্ণীত রোগের ভিত্তিতে তাদেরকে দ্রুততার সঙ্গে ও আগের চেয়ে সহজে নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী চিকিত্সা প্রদান করা যাবে — যা যক্ষ্মা রোগকে সফলভাবে পরাস্ত করার সম্ভাবনা বাড়াবে। ইউএসএআইডি-র সহায়তায় জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশজুড়ে এমন আরো চারটি ওয়ান-স্টপ যক্ষ্মা (টিবি) সেবা কেন্দ্র চালু করবে।
“আমরা এই চমত্কার ওয়ান-স্টপ যক্ষ্মা সেবা কেন্দ্র চালু করার মাধ্যমে এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইরত অনেক মানুষের জীবন রক্ষায় সাহায্য করতে পেরে আনন্দিত। নিজেদের ও পরিবারের সদস্যদের জন্য স্বাস্থ্যকর ও আরো বেশি সমৃদ্ধ জীবনের জন্য দেশজুড়ে সংগ্রামরত মানুষদের সাহায্য করা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের অভিন্ন লক্ষ্যের অংশ,” রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন।
ইউএসএআইডি-র ডেপুটি মিশন ডিরেক্টর র্যান্ডি আলী বলেন, “বহু-ওষুধ-প্রতিরোধী যক্ষ্মাসহ সব ধরনের যক্ষ্মা (টিবি) পরীক্ষা, নির্ণয় ও চিকিত্সা সেবায় প্রবেশগম্যতা বাড়ানোর ফলে বাংলাদেশে যক্ষ্মার নতুন সংক্রমণ প্রতিরোধ করার পাশাপাশি সময়মতো চিকিত্সার মাধ্যমে আরো অনেক মানুষকে সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করবে।”
গত দশ বছরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে ১০০ মিলিয়ন আমেরিকান ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে এবং যক্ষ্মা রোগ শনাক্ত করা ও চিকিত্সার হার বাড়ানোর জন্য এবং যক্ষ্মা রোগীদের তাত্ক্ষণিকভাবে চিকিত্সার আওতায় আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৭২টি ‘জিন-এক্সপার্ট র্যাপিড টিবি টেস্টিং’ যন্ত্র অনুদান দিয়েছে।
ইউএসএআইডি পরিচিতি: ইউএসএআইডি-র মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের কোভিড-১৯ মোকাবেলা প্রচেষ্টাকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকার একাধিক সংস্থার মাধ্যমে আরো ৯৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২০২০ সালে ইউএসএআইডি খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নতি, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও চর্চা বৃদ্ধি, পরিবেশের সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অভিঘাতসহনশীলতা বৃদ্ধি কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে করতে ২০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি সহায়তা দিয়েছে।
###