পরিবেশ সংরক্ষণে পরিষ্কার অভিযান! যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া কর্মসূচির ১৪০ অংশগ্রহণকারী যোগ দিলেন স্থানীয় পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে।

পরিবেশ সংরক্ষণে পরিষ্কার অভিযান! যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া কর্মসূচির ১৪০ অংশগ্রহণকারী যোগ দিলেন স্থানীয় পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে।

কাঠমাণ্ডুতে বাগমতি নদীর তীর থেকে আবর্জনা সরাতে সহায়তা করছে অ্যাকসেস কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা । অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের অ্যাকসেস কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ছয়টি দেশের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষক এবং কাঠমাণ্ডুর নাগরিক সংগঠনগুলোর ৬০০ স্বেচ্ছাসেবক। এটি ছিল ‘বাগমতি পরিস্কার অভিযানের টানা ৩৪০তম সপ্তাহ।

 

ঢাকা ২২ ডিসেম্বর, ২০১৯: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত ইংরেজি ভাষা শিক্ষা  প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া ছয়টি দেশের ১৪০ জনের বেশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষক এবং কাঠমাণ্ডুর নাগরিক সংগঠনগুলোর ৬০০ স্বেচ্ছাসেবক গত ১৯ নভেম্বর অংশ নেন বাগমতি নদীর তীর পরিচ্ছন্নতা অভিযানে। নদীর তীর পরিস্কারের এ কর্মসূচিটি ৩৪০তম সপ্তাহে পড়েছে।  চীনে নিযুক্ত নেপালি রাষ্ট্রদূত লীলামনি পওডেল এবং নেপালের নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ‘বাগমতি পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি’ এ উদ্যোগে নেতৃত্ব দিচ্ছে যার লক্ষ্য, নদীর বাস্তুসংস্থান সুষ্ঠু রাখতে সহায়তা করা।

 

পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা উৎসাহের সঙ্গে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে কাজে নেমে পড়েন। বাগমতি নদীর তীর থেকে কয়েকহাজার কিলোগ্রাম আবর্জনা সংগ্রহ করেন তারা। অনুষ্ঠানের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের প্রশংসা করা হয়। স্থানীয় ঘটনা হলেও, বৈশ্বিক তাৎপর্য রয়েছে এমন একটি ইস্যুতে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে অবদান রাখায় ,তাদের ধন্যবাদ জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া এ অংশগ্রহণকারীরা একটি বৃহত্তর কর্মসূচির অংশ হিসেবে নেপালে এসেছিলেন। ওই কর্মসূচির আওতায় আরও ছিল স্থানীয়দের প্রয়োজনভিত্তিক প্রকল্প তৈরি ও বাস্তবায়ন, মিডিয়া সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এমন একটি কমিউনিটি গড়ে তোলা যারা বিভিন্ন শ্রেণীকক্ষ ও নানা দেশে ছড়িয়ে থাকা অ্যালামনাইদের ইন্টারনটের মাধ্যমে সংযুক্ত করবে।

‘বাগমতি পরিস্কার’ কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া ভারতীয় একজন অংশগ্রহণকারী বলেন,“এটি আমাকে একজোট হয়ে কাজ করার গুরুত্ব শিখিয়েছে। এটি আরও শিখিয়েছে চিরকালের সেরা শিক্ষাটাই “ তুমি বিশ্বে যে পরিবর্তন দেখতে চাও তাতে নিজেও অংশ নাও।”

 

অ্যাকসেস কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা কাঠমুণ্ডুর বাগমতী নদীর আশেপাশে এলাকার আবর্জনা পরিষ্কার করছেন

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা এসেছিলেন বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা থেকে। তারা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মসূচি ইংলিশ অ্যাকসেস মাইক্রোস্কলারশিপ প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত। নেপালে সাতদিনের এ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পৃষ্ঠপোষণাধীন বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা থেকে সেরা করণীয় বিষয়গুলো পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা এবং কার্যকর কমিউনিটি সার্ভিস কর্মসূচি গড়ে তোলার ব্যাপারেও নির্দেশনা দেন। কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা নিজ নিজে দেশে ফিরে যাওয়ার পর নেপালে গড়ে ওঠা ভার্চুয়াল নেটওয়ার্কটির মাধ্যমে নিজেদের কার্যক্রম শেয়ার করা অব্যাহত রেখে তাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে পারবে।

কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া পাকিস্তানি একজন অংশগ্রহণকারী বলেন,“ আমি নিজে একা এ ধরনের কিছু কাজ করে আসছিলাম। তবে ঠিক এভাবে না, অন্যদের সঙ্গে মিলে না। কিন্তু এখানে আমরা অভিন্ন ধরনের কমিউনিটি থেকে আসা একটি বৈচিত্রপূর্ণ গ্র“প। আমরা  #এডুকেশনফরঅল (লেখাপড়া সবার জন্য )কর্মসূচিতে কাজ করতে সবাই একত্রিত হয়েছি।”

আরেকজন অংশগ্রহণকারীর মন্তব্য: “আন্তঃসাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিনিময়ের এক উন্মুক্ত ও নিরাপদ পরিসর যুগিয়েছে এ সম্মেলনটি।”

ইংলিশ অ্যাকসেস মাইক্রোস্কলারশিপ প্রোগ্রামের আওতায় আর্থিকভাবে অনগ্রসর গোষ্ঠীর মেধাবী তরুণদের ইংরেজি ভাষার বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এতে তরুণদের জন্য দুবছর ধরে স্কুলের পর ক্লাস নেওয়া ও নিবিড় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এটি তরুণদের ভবিষ্যতের পড়াশোনা ও চাকরির জন্য প্রস্তুত করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রচেষ্টার অংশ। ২০০৪ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে ইংলিশ অ্যাকসেস মাইক্রোস্কলারশিপ প্রোগ্রামে ৮৫টির বেশি দেশের এক লাখ ২৫ হাজারের মতো শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে যারা দেশের চারটি স্থানে এ প্রশিক্ষণ পেয়েছে।