ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদের ধারাবাহিক বিতরণ পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে কোভিড-১৯ চিকিৎসা কেন্দ্রে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় এর মাধ্যমে বিতরণ করেছে ।
ঢাকা. ২৮ মে ২০২০- বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এবং যুক্তরাষ্ট্র মিলিটারির ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের প্রতিনিধিবৃন্দ বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলা কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক সহায়তার অংশ হিসাবে কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের বিভাগীয় মেডিক্যাল অফিসার জনাব ইবনে সফি আব্দুল আহাদের নিকট ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) হস্তান্তর করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে পিপিই বিতরণ পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ এটি। গত ১১ মে বিতরণের প্রথম ধাপে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিকট পিপিই ও চিকিৎসা সরঞ্জাম হস্তান্তর করা হয়। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরকার কোভিড-১৯’এর বিস্তার মোকাবেলার প্রস্তুতি ও কার্যক্রম গ্রহণে বাংলাদেশ সরকারের চলমান উদ্যোগগুলোর আওতায় দ্রুত রোগনির্ণয় উন্নত করা, জ্ঞান বৃদ্ধি, রোগ সম্পর্কিত গুজব ও ভুল ধারণা দূরীকরণ এবং বীরত্বপূর্ণ সম্মুখসারীর কর্মীদের সহায়তা প্রদানে ২৫.৭ মিলিয়ন ডলারের বেশী সহায়তা প্রদান করেছে।
ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস কর্তৃক আজকে প্রদত্ত সরঞ্জামাদির মধ্যে রয়েছে ৭০০ কেএন৯৫ সার্জিক্যাল মাস্ক, ৫০০ ২০০মিলি বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ৫০০ জোড়া সার্জিক্যাল গ্লাভস, ৩০০ বিপজ্জনক পদার্থ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়াল (HAZMAT) স্যুট, ৫০টি মুখমণ্ডল সুরক্ষার শিল্ড, ৫০ পাউন্ড ব্লিচ পাউডার, ১০টি ইনফ্রারেড থার্মোমিটার, ৬টি জীবানুনাশক স্প্রেয়ার, এবং তিনটি রোগী দেখার মনিটর/পালস অক্সিমিটার মেশিন- যার সবই বাংলাদেশী বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে স্থানীয়ভাবে ক্রয় করা হয়েছে। কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত কোভিড-১৯ চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী হাসপাতাল যারা বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোভিড-১৯ মোকাবেলা কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা দিচ্ছে। এই পিপিইগুলো পাবার ফলে হাসপাতালের কর্মীরা কোভিড-১৯’এর বিস্তার রোধপূর্বক রোগীদের সেবা প্রদানকালে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে।
ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বিভিন্ন কার্যক্রমের আওতায় চিকিৎসা বিষয়ক ঘাটতি চিহ্নিত করে সেগুলো পূরণে বাংলাদেশ সরকারের সাথে নিবিড় সহযোগিতার ভিত্তিতে অব্যাহতভাবে কাজ করছে। এরই অংশ হলো ঘোষিত কোভিড-১৯ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র এবং প্রাথমিক সেবাদানকারীদের জন্য পিপিই ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে বিতরণ পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে আজকে বিতরণকৃত পিপিইগুলো স্থানীয়ভাবে প্রস্তুত। অনেক উদ্যোগের অন্যতম এই বিতরণ বাংলাদেশী জনগণের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অব্যাহত অঙ্গীকার এবং আমাদের দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শক্তিশালী অংশীদারিত্বের প্রকাশ।
কোভিড-১৯’এর প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সারা বিশ্বে জরুরী স্বাস্থ্যসেবা খাতে এবং মানবিক, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহায়তা হিসাবে বিশেষত সরকার, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারী সংস্থাগুলোকে এই মহামারী মোকাবেলায় ৯০০ মিলিয়ন ডলারের অধিক অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিগত ২০ বছরের বেশী সময় ধরে বা্ংলাদেশকে দেয়া ১ বিলিয়ন ডলারের অধিক স্বাস্থ্য সহায়তার ধারাবাহিকতায় অতিরিক্ত ২৫.৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা সারা দেশে রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ কার্যক্রমে ব্যয় হবে। এই অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য মানসম্পন্ন জীবনরক্ষাকারী স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত হয়েছে।
স্থানীয় জনগণের মধ্যে কোভিড-১৯’এর বিস্তার রোধপূর্বক রোগীদের চিকিৎসা প্রদানে কর্মরত কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মীদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় এই ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) দিতে পেরে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস গর্বিত বোধ করছে। এই হাসপাতালের সম্মুখসারীর গুরুত্বপূর্ণ কর্মীরা প্রাথমিক সেবাদানকারীদের সাথে কাজ করছে এবং প্রতিদিন অসাধারণ সেবা প্রদানের মাধ্যমে এই সংকট মোকাবেলা করে যাচ্ছে।