বিভাগ ও কার্যালয়সমূহ

সাধারণ তথ্য

নিচে বাংলাদেশস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের বিভিন্ন বিভাগ ও কার্যালয়ের তালিকা দেওয়া হলো:

ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের দি আমেরিকান সেন্টার/পাবলিক অ্যাফেয়ার্স বিভাগের (সাবেক ইউএসআইএস) লক্ষ্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক সমঝোতা বৃদ্ধি করা এবং বাংলাদেশিদেরকে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বিনামূল্যে ও অবাধে তথ্য পাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, বক্তৃতা অনুষ্ঠান বা অন্য কোনো উপলক্ষে বারিধারায় আমাদের এখানে আসুন। এছাড়া এখানে রয়েছে বই ঘেঁটে দেখা, টোফেলের জন্য পড়াশোনা বা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা নিয়ে ব্যক্তিগত কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ। আপনি কি ঢাকার বাইরে থাকেন? চট্টগ্রাম, যশোর, খুলনা ও সিলেটে রয়েছে ‘আমেরিকান কর্নার’। সেখানে কী কী মিলবে তা দেখতে একবার ঘুরে আসুন না!

প্রেস সেকশন

প্রেস সেকশন মিডিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের যোগাযোগের কাজটি সমন্বয় করে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি বিষয়ে জনসাধারণের তথ্য জানার ক্ষেত্রে প্রধান যোগসূত্র এই প্রেস সেকশন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি, সংবাদ সম্মেলন, বক্তৃতা অনুষ্ঠান ও সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ সেকশনটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গী তুলে ধরে। এছাড়া প্রেস সেকশন বাংলাদেশি মিডিয়া ও জনগণের মতামত নিয়ে প্রতিবেদন করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের বাংলাদেশের জনমত সম্পর্কে ওয়াকেবহাল রাখে।

দি আর্চার কে ব্লাড আমেরিকান সেন্টার লাইব্রেরি

আর্চার কে ব্লাড আমেরিকান সেন্টার লাইব্রেরি থেকে বই ধার নেওয়া যায়। এছাড়া সাধারণ মানুষের জন্য এটি একটি রিসোর্স সেন্টার। এখানে বইপত্র, সাময়িকী ও সংবাদপত্র পড়ার পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এখানকার ইনফরমেশন রিসোর্স সেন্টার (আইআরসি) তথ্য জানতে আগ্রহী সাধারণ মানুষের জন্য চমৎকার একটি রিসোর্স। আইআরসি’র গবেষণাকর্মীরা গবেষণার কৌশল বিষয়ে বেশ দক্ষ এবং তারা স্কলার ও গবেষকদের সহযোগিতা করতে সক্ষম। আমেরিকান সেন্টারের সংবাদ সম্মেলন, বক্তৃতা বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন হয়ে থাকে এখানে।

এর বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, যশোর, খুলনা ও সিলেটে পাঁচটি ‘আমেরিকান কর্নার’ রয়েছে। ‘আমেরিকান কর্নার’-এ যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন রিসোর্স আছে। কর্নারগুলোতে ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানও আয়োজন করে থাকে।

কালচারাল অ্যাফেয়ার্স সেকশন

দূতাবাসের কালচারাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে আয়োজিত সব শিক্ষামূলক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের ব্যবস্থাপনা করে। এসব কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্র ও বিভিন্ন দেশের বেসরকারি নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্যক্তিগত, পেশাগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ককে এগিয়ে নেয়। এছাড়া বিদেশিদের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস, সমাজ, শিল্পকলা ও সংস্কৃতির বৈচিত্রকে তুলে ধরে।

এডুকেশন ইউএসএ

ছাত্র উপদেষ্টা বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের পরামর্শ ও তথ্য দিয়ে সহায়তা করে। এর রিসোর্স লাইব্রেরিতে রয়েছে শত শত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাটালগ ও ভিডিও। এছাড়া রয়েছে টোফেল, স্যাট ১ ও ২, জিআরই ও জিম্যাট বিষয়ক গাইড। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই, ভর্তির আবেদন, প্রমিত টেস্ট ও আর্থিক সহায়তা বিষয়ে প্রতি ধাপের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ দেন। এছাড়া এ বিভাগ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে রওয়ানা হওয়ার আগে ওরিয়েন্টেশনের আয়োজনও করে।

দূতাবাসের ব্যবস্থাপনা দলে রয়েছে জেনারেল সার্ভিস, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, মানবসম্পদ, তথ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য ইউনিট, কমিউনিটি লিয়াজোঁ অফিস ও ফ্যাসিলিটিজ মেইনটেন্যান্স। দূতাবাসের সব কর্মী যাতে একটি সুন্দর ব্যবস্থাপনাধীন, নিরাপদ, দক্ষ, স্বাস্থ্যকর ও আরামদায়ক পরিবেশে অবস্থান ও কাজ করতে পারে তা নিশ্চিত করাই হচ্ছে ব্যবস্থাপনা বিভাগের লক্ষ্য।

এ বিভাগের সেবার মধ্যে রয়েছে:

  • হাউজিংয়ের ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ
  • মোটর পুল পরিচালনা
  • সাপ্লাই অ্যাকুইজিশন
  • দূতাবাসের সরকারি ভ্রমণ ব্যবস্থাপনা
  • বাজেট পর্যবেক্ষণ করা
  • যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা রক্ষণাবেক্ষণ
  • মেইলরুম অপারেশনস
  • ফ্যাসিলিটিজ মেইনটেন্যান্স

পলিটিক্যাল অ্যান্ড ইকনমিক অ্যাফেয়ার্স বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থকে প্রভাবিত করে এমন বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ও প্রবণতা বিষয়ে পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ, প্রতিবেদন তৈরি ও পরামর্শ দেওয়ার কাজ করে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত রাজনৈতিক বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে বাংলাদেশের ভূমিকা,মানবাধিকার, শরণার্থী ও মানবপাচার, রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম (বিশেষ করে নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে) এবং দক্ষিণ এশীয় ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক।

এ বিভাগটি দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের যাবতীয় ইস্যু ও কর্মসূচির ব্যবস্থাপনায়ও যুক্ত। এটি মুক্ত বাণিজ্য ও মুক্ত বাজারের জন্য অনুকূল নীতিমালাকে এগিয়ে নিতে কাজ করে এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত আমেরিকান বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর হয়ে প্রচার চালায়। এ বিষয়ে এর প্রধান আগ্রহের ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে: আর্থিক ব্যবস্থা ও ব্যাংকিং, অর্থনৈতিক সংস্কার, মাল্টি-ফাইবার অ্যারেঞ্জমেন্ট উত্তর বাজার উন্নয়ন, মেধাসম্পদ অধিকার ও নিয়ন্ত্রণমূলক কাঠামো।

কনস্যুলার সেকশন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জরুরি ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে পাসপোর্ট ইস্যু করা এবং বাংলাদেশি ও এ দেশে থাকা অন্যান্য বিদেশিদের বিভিন্ন ধরনের ভিসা সেবা দেওয়া।

নন-ইমিগ্রেশন ভিসা (এনআইভি): কনস্যুলার সেকশন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য পর্যটন ভিসা, ব্যবসা ভিসা, শিক্ষার্থী ভিসা ও অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিটসহ বিভিন্ন ধরনের অস্থায়ী ভিসার আবেদনপত্র গ্রহণ ও এর ব্যবস্থাপনা করে।

ইমিগ্রেশন ভিসা (আইভি): কনস্যুলার বিভাগ/সেকশন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন গ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তিদের আবেদনগুলো বিবেচনা করে। এ বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়া বাংলাদেশের বাসিন্দাদের কাছ থেকে তাদের নিকট আত্মীয়দের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হওয়ার আবেদন গ্রহণ করে।

আমেরিকান সিটিজেন্স সার্ভিসেস (এসিএস): কনস্যুলার সেকশন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের পাসপোর্ট নবায়ন, বাংলাদেশে বসবাসরত বা সফররত আমেরিকানদের নিবন্ধন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বাংলাদেশে জন্ম, নেওয়া শিশুদের জন্মের তথ্য নিবন্ধন, ভোটার নিবন্ধন, আয়কর ফর্ম, নোটারি সার্ভিস ও জরুরি সেবা দিয়ে থাকে। এ বিভাগ দূতাবাসের ‘ওয়ার্ডেন সিস্টেম’এরও ব্যবস্থাপনা করে থাকে।

ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষের স্পেশাল এজেন্টদের বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের মিশনগুলোতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা কর্মকর্তার (আরএসও) দায়িত্ব দিয়ে নিয়োগ করা হয়। তারা মিশনপ্রধানকে সব নিরাপত্তাগত বিষয়ে পরামর্শ দেন ও মিশনের নিরাপত্তা কর্মসূচির সকল বিষয়ে সমন্বয় করেন। কাজের জায়গায় এবং বাসস্থানে আমাদের কর্মীদের সন্ত্রাসবাদী, অপরাধী ও কারিগরি ধরনের হামলা থেকে রক্ষার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি ও বাস্তবায়ন করেন তারা। এই আরএসওরা তাদের কাজে ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি কর্তৃপক্ষের অন্যান্য কর্মী, মেরিন সিকিউরিটি গার্ড, ইউএস নেভি সিবি, স্থানীয় ও যাচাইকৃত আমেরিকান প্রহরী, স্থানীয় তদন্তকারী, নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকৌশল কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সরকারের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের সহায়তা পেয়ে থাকেন। এছাড়া আরএসও বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের নিরাপত্তা ব্রিফিং ও অন্যান্য পেশাদার নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শ দিয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর বিভিন্ন উদ্যোগ ও তদন্তের ক্ষেত্রে বিদেশি পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য আরএসও প্রধান লিয়াজোঁ হিসেবে কাজ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা (ইউএসএআইডি) হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণকে উন্নয়ন সহায়তা দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রধান সংস্থা। ১৯৭১ সাল থেকে ইউএসএআইডি বাংলাদেশকে উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে ৫শ কোটি ডলারের বেশি অর্থ দিয়েছে। এর অর্ধেকের বেশি অর্থ দেওয়া হয়েছে খাদ্য সহায়তা হিসেবে। ইউএসএআইডি’র সহায়তার বদৌলতে বাংলাদেশ তার জনগণের জীবনমানের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্যরকম অগ্রগতি করেছে। বিশেষ করে খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি, পল্লী অঞ্চলে বিদ্যুতায়ন ও স্বাস্থ্য খাতে।

ইউএসএআইডি/বাংলাদেশ বর্তমানে তিনটি কৌশলগত ক্ষেত্রে বছরে ১০ কোটি ডলারের মতো ব্যয় করে থাকে।

  • অধিকতর কার্যকর গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়া
  • অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ সম্প্রসারিত করা
  • বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান বৃদ্ধি করতে মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগ করা

ইউএসএআইডি স্থানীয় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগায় এবং দেশি ও বিদেশি এনজিও এবং ব্যক্তিমালিকানাধীনসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করে। এছাড়া এটি বাংলাদেশ সরকার এবং অন্য দাতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে।

ইউএসএআইডি’র বর্তমান কর্মসূচিগুলোর লক্ষ্য স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, খাদ্য নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, আয়বৃদ্ধিমূলক কাজ, ক্ষুদ্র ব্যবসা ও কৃষিভিত্তিক ব্যবসা গড়ে তোলা, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা, পল্লী বিদ্যুতায়ন ও জ্বালানি খাতের সংস্কার, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এবং শিক্ষাখাতসহ বিভিন্ন খাতের প্রয়োজনগুলো মেটানো।

বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও রপ্তানির বিষয়ে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী এবং যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য ও সেবা ক্রয়ে আগ্রহী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী উভয়ের জন্য ইউএস ট্রেড সেন্টার-এ (ইউএসটিসি) বিভিন্ন ধরনের সেবার ব্যবস্থা রয়েছে।

ইউএসটিসি’র সেবাসমূহকে তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়: বাজারের সঙ্গে যোগাযোগ ও পর্যালোচনা, প্রচার এবং বাণিজ্যকে এগিয়ে নেওয়া। ব্যবসায়ী মহলের উপযুক্ত প্রার্থীদের জন্য কিছু সেবা বিনামূল্যের। তবে খরচ তোলার জন্য কিছু সেবার জন্য ফি নেওয়া হয়ে থাকে।

লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের বিদেশে ছয়টি কার্যালয় রয়েছে যেগুলো সংশ্লিষ্ট অঞ্চল থেকে লাইব্রেরি ও গবেষণা সামগ্রী সংগ্রহ, শ্রেণিভুক্ত, সংরক্ষণ ও বিতরণের কাজ করে থাকে। শুধুমাত্র লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের সংগ্রহ হিসেবে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা ও গবেষণা সংক্রান্ত পাঠাগার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও এটি করা হয়। লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের বিদেশের এই কার্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হচ্ছে নয়াদিল্লি কার্যালয়। এটি ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ, ভুটান, বার্মা, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা থেকে প্রকাশনা সংগ্রহ করে। এসব দেশের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের সাব অফিস রয়েছে। ঢাকা অফিসের প্রধান হচ্ছেন লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের একজন প্রতিনিধি। তিনি পাঠাগারের একজন কারিগরি কর্মীর সহায়তায় বাংলাদেশের বিচিত্র ধরনের প্রকাশনা বাছাই ও সংগ্রহ করেন। তারা এ প্রকাশনাগুলো নয়াদিল্লি পাঠিয়ে দেন। সেখানে এগুলো শ্রেণিভুক্ত ও বাঁধাই (অথবা মাইক্রোফিলম্ড) করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়।

লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ বিভিন্ন ধরনের চলতি প্রকাশনা সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন এবং তা সংগ্রহ করেন। এ ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় সরকারি প্রকাশনার ওপর। এর মধ্যে থাকে গেজেট, আইন প্রণয়ন সংক্রান্ত বিতর্ক ও আইন এবং আদালতের রায়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ আইনগত দলিলপত্র।

এ অঞ্চলের জন্য বিজ্ঞানের গুরুত্বের কথা বিবেচনায় রেখে লাইব্রেরি অব কংগ্রেস বাংলাদেশের বেশ কিছুসংখ্যক বিজ্ঞান ও কারিগরি বিষয়ক মনোগ্রাফ,সাময়িকী, কারিগরি প্রতিবেদন ও সম্মেলনের বিবরণী ইত্যাদি সংগ্রহ করে থাকে। প্রধান প্রধান  দৈনিক সংবাদপত্র, সংবাদ বিষয়ক সাপ্তাহিক পত্রিকা, গবেষণা জার্নাল এবং সাহিত্য, লাইফস্টাইল ও অন্যান্য জনপ্রিয় বিষয়ের ওপর সাময়িকী এবং শিল্পকলা, সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিষয়ের ওপর গবেষণা মনোগ্রাফও সংগ্রহ করা হয়। প্রথাগত বই ও সাময়িকীর পাশাপাশি এখন ক্রমশই বেশি করে চাওয়া হচ্ছে ননপ্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমের উপকরণ। এর মধ্যে রয়েছে মানচিত্রও। ঢাকায় লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের উপস্থিতি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভকে স্থানীয় চলমান ঘটনাবলী বিষয়ক একটি সমৃদ্ধ সংগ্রহ গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। এতে করে এ দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয়সহ বিভিন্ন ধরনের আন্দোলনে যুক্ত সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নথিবদ্ধ করা সম্ভব হচ্ছে।

২০০০ সালে ছিল লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের দ্বিশতবার্ষিকী। এই ক্ষণটি উদযাপন করতে এর নয়াদিল্লি কার্যালয় ‘সাউথ এশিয়ান লিটারারি রেকর্ডিংস প্রজেক্ট’ হাতে নেয়। গত কয়েকবছরে এ অফিসটি এ অঞ্চলের একশজনের বেশি বিশিষ্ট লেখকের কণ্ঠে তাদের নিজেদের রচনাপাঠ রেকর্ড করেছে। ঢাকা অফিস এ প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশের চারজন বিশিষ্ট লেখক ও কবির পাঠ রেকর্ড করেছে। এ রেকর্ডিংগুলো শোনা যাবে এই ঠিকানায়: http://www.loc.gov/acq/ovop/delhi/salrp

লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের এই সাংস্কৃতিক বিনিময় বিভিন্ন দেশ ও জনগণের মধ্যে পরস্পরের সম্পর্কে জ্ঞান ও জানাশোনা বাড়াতে সহায়তা করবে। বাংলাদেশের জন্মলাভের সময় থেকেই লাইব্রেরি অব কংগ্রেস এ দেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে কংগ্রেস তথা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে সব ধরনের ফরম্যাটে তথ্য যোগানো নিশ্চিত করতে যোগ্য কর্মীদের নিয়োগ দিয়েছে। লাইব্রেরি অব কংগ্রেসে বাংলাদেশ বা অন্য যে কোনো দেশের কোনো বই, সাময়িকী বা অডিও-ভিসুয়াল সামগ্রী আছে কিনা তা খুঁজে দেখতে এর অনলাইন ক্যাটালগ ঘেঁটে দেখুন এই ওয়েব ঠিকানায়: http://catalog.loc.gov/

যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস, জিএসও সেন্টার
বারিধারা, ঢাকা -১২১২ পিএবিএক্স: ৮৮৫৫৫০০-২২ এক্স. ২৪৯৮, ২৪৯৯
ফ্যাক্স: ৯৮৮৭৪২৮
ইমেইল: locdhaka@citech-bd.com

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার দপ্তরের ওভারসিজ প্রসিকিউটরিয়াল ডেভলেপমেন্ট অ্যাসিসট্যান্স অ্যান্ড ট্রেইনিং প্রোগ্রামের (ওপিডিএটি) আওতায় বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসগুলোতে সহকারী ইউএস অ্যাটর্নি নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা সংশ্লিষ্ট দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে প্রয়োজন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কাজ করেন।

রেসিডেন্ট লিগ্যাল অ্যাডভাইজার (আরএলএ) হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রতিনিধি অপরাধ, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সহায়তার লক্ষ্যে একটি কার্যকর মানি লন্ডারিং বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করেন। আরএলএ তদন্তকারী ও কৌসুলিদের জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তৈরি ও পরিচালনা এবং দূতাবাস অনুরোধ করলে আইনি পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তার অন্যান্য দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে মানবপাচার,মানবাধিকার এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন ইত্যাদি বিষয়ে ঘটনাপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা এবং এসব ক্ষেত্রে কারিগরি সহায়তা যোগানো।

রপ্তানির সুযোগ ও বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচারের ফরেইন এগ্রিকালচারাল সার্ভিস (এফএএস) যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিকে বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত করে থাকে।
১৭১টি দেশে কর্মপরিধি-বিশিষ্ট  ৯৩টি দপ্তর আছে এফএএস-এর। বাংলাদেশের ঢাকার দপ্তরটি এর অন্যতম। এইসব অফিসে আছে কৃষি অ্যাটাশে এবং স্থানীয়ভাবে নিযুক্ত কৃষি বিশেষজ্ঞ, যারা বিশ্ব জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষির চোখ, কান ও কন্ঠের মত কাজ করে। এফএএস কর্মীরা সমস্যা চিহ্নিত করেন, বাস্তব সমাধান দেন এবং সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষির সুযোগ এগিয়ে নেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিকে সহায়তা করতে কাজ করেন।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচারের এফএএস মিশন:
       ১) বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা দূর করতে নীতি তৈরি ও প্রয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে কৃষি বাণিজ্য উদার করে থাকে;
       ২) বাণিজ্য সহায়ক উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি রপ্তানি সম্প্রসারিত করে;
       ৩) প্রাসঙ্গিক দক্ষতা ও বিশ্লেষণ সরবরাহ করার মাধ্যমে বৈশ্বিক কৃষি বাজারকে ওয়াকিবহাল রাখে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তপ্রণেতাদের পরামর্শ দিয়ে থাকে।
 এফএএস-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হলো: www.fas.usda.gov
এফএএস ঢাকার টেলিফোন: ৮৮০-২-৫৫৬৬-২৮৫১ (কৃষি বিশেষজ্ঞ) অথবা ৫৫৬৬-২৮৫২ (প্রশাসন সহকারী)
এফএএস ঢাকা ফ্যাক্স: ৮৮০-২-৫৫৬৬-২৯০১
এফএএস ঢাকা ইমেইল: Ag.Dhaka@fas.usda.gov  

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সুইচবোর্ড: ৮৮০-২-৫৫৬৬-২০০০

প্রতিরক্ষা সহযোগিতা অফিস (ওডিসি) বাংলাদেশের নিরাপত্তা সহযোগিতা (এসএ) কর্মসূচির অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার কাজটি করে। ওডিসি এর সংশ্লিষ্ট দেশের সহযোগী, কূটনৈতিক মিশনের অন্তর্ভুক্ত কান্ট্রি টিম, প্যাসিফিক কমান্ডের কমান্ডার এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে (প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহায়তা সংস্থা ও সামরিক দপ্তর) সহযোগিতার ভিত্তিতে এই তত্ত্বাবধানের কাজটি করে।

এসএ কর্মসূচির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সংগঠন ও বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সরকারকে বিক্রি, মঞ্জুরি, লিজ বা ধার হিসেবে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। আগ্রাসন প্রতিরোধ করায় বন্ধুরাষ্ট্র ও মিত্রদের সহায়তা করা, অভিন্ন প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালনে অংশ নেওয়া এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এগিয়ে নেওয়াই এর লক্ষ্য।

এসএ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিদেশি রাষ্ট্রের সরকারের কাছে প্রতিরক্ষামূলক অস্ত্র সরবরাহ, বিদেশি শিক্ষার্থীদের ইউএস সার্ভিস স্কুলে প্রশিক্ষণদান এবং অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা সামর্থ্যরে উন্নয়ন বিষয়ক আলোচনার মতো বিভিন্ন ধরনের বিষয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে দেশটির প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত প্রয়োজন পূরণে সহায়তা করার মাধ্যমে তার নিজের নিরাপত্তাগত স্বার্থ পূরণেও ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ ও দক্ষ জোট সহযোগী গড়ে তোলা।

ফরেন মিলিটারি সেলস (এফএমএস), ফরেন মিলিটারি ফাইন্যান্সিং (এফএমএফ) মঞ্জুরি বা ঋণ, ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং (আইএমইটি) ও এনহ্যান্সড ইন্টারন্যাশনাল পিসকিপিং ক্যাপাবিলিটিজ (ইআইপিসি)/গ্লোবাল পিস অপারেশনস ইনিশিয়েটিভ (জিপিওআই) হচ্ছে নিরাপত্তা সহযোগিতার (এসএ) আওতাভুক্ত কয়েকটি প্রধান কর্মসূচি। এর মধ্যে আইএমইটি এবং ইআইপিসি/জিপিওআই কর্মসূচি শুধু মঞ্জুরি সহায়তার ভিত্তিতে চলে। ফরেন মিলিটারি সেলস কর্মসূচি সংশ্লিষ্ট দেশের অর্থ, দাতাদের তহবিল বা এফএমএফ এর মাধ্যমে পরিচালিত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী, ///মিলিটারি সার্ভিসেস এর সেক্রেটারিবৃন্দ,/// জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ চেয়ারম্যান, ইউএস, মিলিটারি সার্ভিসেস এর প্রধান এবং ইউএস প্যাসিফিক কমান্ডের কমান্ডারের পক্ষে সামরিক বিষয়ে যোগাযোগের কাজটি করে থাকেন। প্রতিরক্ষা অ্যাটাশে অফিসের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে সামরিক বাহিনীসমূহের মধ্যে সম্মেলনের পরিকল্পনা ও সমন্বয়, মহড়া আয়োজন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়।