বাংলাদেশে অবস্থানরত আমেরিকার প্রিয় নাগরিক বন্ধুগণ,
এখন দুর্যোগকাল চলছে। বাংলাদেশ ও আমেরিকা’সহ সারা বিশ্বের দেশগুলো কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় একযোগে কাজ করছে। আমরা সবাই একত্রে এই লড়াইয়ে আছি। ইতিহাস ও বিজ্ঞানের শিক্ষা নিয়ে বাস্তবানুগ ও ইতিবাচকভাবে সহানুভূতি ও ধৈর্য্ সহকারে একে অপরের সহযোগিতার মাধ্যমেই আমরা একসাথে বিজয় অর্জন করবো।
বাংলাদেশে অবস্থানরত আমেরিকার নাগরিকদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ আমার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এই ভাইরাস মোকাবেলায় সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এবং ইউএসএআইডি’সহ আপনার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস দল বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, সারা দেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছে।
আপনার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস দল এখানে আপনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। আমাদের দেয়া সেবাগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে আমি আপনাদেরকে আমেরিকার সিটিজেন সার্ভিস ওয়েবসাইট এবং travel.state.gov ওয়েবসাইট দেখার অনুরোধ করবো।
গত ১৯ মার্চ ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট কোভিড-১৯-এর প্রাদুর্ভাব বিষয়ে বিশ্বব্যাপী একটি লেভেল ৪ ট্র্যাভেল অ্যাডভাইসরি জারির মাধ্যমে আমেরিকার নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আমি বুঝতে পারছি যে, আপনাদের অনেকের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়া একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। আপনার নতুন পাসপোর্টের প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে আমাদের কনস্যুলার সেকশনে আসুন। সাক্ষাতের জন্য সময় নির্দিষ্ট করতে আপনি আমেরিকার সিটিজেন সার্ভিস ওয়েবসাইট দেখুন। আপনি দূতাবাসে আসার এক ঘণ্টার মধ্যে আমাদের কনস্যুলার কর্মকর্তাগণ আপনার জন্য জরুরী পাসপোর্ট প্রস্তুত করে দিতে পারেন।
আমাদের কাছে যথাযথ সহায়ক বৈধ নথিপত্র থাকলে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের নবজাতক নাগরিকদের জন্য আমরা কনস্যুলার রেকর্ড অব বার্থ অ্যাব্রোড এবং জরুরী পাসপোর্ট প্রদান করতে পারি। এই সেবা প্রয়োজন হলে আপনি আমাদের সাথে কথা বলুন যাতে আগাম ভিত্তিতে আমরা আপনাকে আবশ্যকীয় নথিপত্র প্রস্তুত করতে সহায়তা করতে পারি।
আপনারা জানেন যে, বিমান সংস্থাগুলো ঢাকায় তাদের আগমনকারী ও বহির্গামী বিমান চলাচল দ্রুতহারে কমিয়ে দিচ্ছে এবং বাংলাদেশ সরকার এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ থেকে বিমান আগমন স্থগিত করেছে। শীঘ্রই বিমান সংস্থাগুলো অনির্দিষ্ট কালের জন্য তাদের বিমান চলাচল বন্ধ করে দিতে পারে। বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার চিন্তা থাকলে আমি আপনাকে যথাসম্ভব দ্রুত যাওয়ার জোর তাগিদ দেবো। বিমান ভ্রমণ সংরক্ষণের জন্য আপনি সরাসরি আপনার বিমান সংস্থার সাথে যোগাযোগ করুন। যুক্তরাষ্ট্রে আপনার পরিবারের সদস্যদের সাথেও যোগাযোগ রাখুন যাতে তারা আপনার বর্তমান অবস্থান জানতে পারে এবং নিশ্চিত করুন যে, বর্তমানে আপনার সাথে যোগাযোগের তথ্যাদি সম্পর্কে তাঁরা অবগত আছেন।
আমাদের কর্মীগণ সার্বক্ষণিকভাবে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন এবং ওয়েবসাইটে হালনাগাদ তথ্যাদি প্রকাশ করছেন। আমরা আপনাকে STEP (স্মার্ট ট্রাভেলার এনরোলমেন্ট প্রোগ্রাম)-এ নিবন্ধন করার জন্য অনুরোধ করবো। STEP-এর মাধ্যমে আপনি আমেরিকার নাগরিকদের জন্য প্রদত্ত হালনাগাদ তথ্যাদি, ভ্রমণ নির্দেশনা ও নোটিশগুলো পাবেন। আমাদের ফেসবুক পেইজ (https://www.facebook.com/bangladesh.usembassy) অনুসরণ করুন। এখানে আমরা কোভিড-১৯ বিষয়ে সর্বশেষ তথ্যাদি বিশেষত বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিষয়ক হালনাগাদ নির্দেশনাগুলো প্রকাশ করে থাকি। নতুন কোন তথ্য আসার সাথে সাথে আমরা নিয়মিতভাবে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কোভিড-১৯ বিষয়ক ওয়েব পেইজ হালনাগাদ করি।
বাংলাদেশ সরকার ঘোষণা করেছে যে, বাংলাদেশে আগত সকল ভ্রমণকারীকে বিমানবন্দরে উচ্চতর স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে আসতে হবে। আগত প্রত্যেক ভ্রমণকারীকে অভিবাসন কর্মকর্তাদের নিকট এই মর্মে সনদপত্র প্রদান করতে হবে যে, আগত ভ্রমণকারীর কোভিড-১৯-এর কোন লক্ষণ নেই। এই চিকিৎসা পত্র বা সনদপত্র পাবার কর্মপদ্ধতি জানতে আপনি যে দেশ থেকে আসছেন সেই দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে যান। বাংলাদেশে আগত সকল ভ্রমণকারীর জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৪ দিনের স্বেচ্ছা-সঙ্গনিরোধের আবশ্যিকতা ঘোষণা করেছে।
রবিবার, ২২ মার্চ বেলা ৩:৩০ টায় আমার সাথে ভার্চুয়াল টাউন হল সভায় যোগ দিন। এই সভায় আমি বর্তমান তথ্যাদি তুলে ধরবো এবং আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দেবো। DhakaACS@state.gov ঠিকানায় আগাম ভিত্তিতে আপনাদের প্রশ্ন পাঠানোর অনুরোধ জানাচ্ছি। ভার্চুয়াল টাউন হলে অংশগ্রহণের নির্দেশনা টাউন হল শুরুর এক ঘণ্টা আগে আমেরিকান সিটিজেন সার্ভিস ওয়েবসাইটে দেয়া হবে।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোৎকৃষ্ট প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এই অনিশ্চিত সময়ে আপনার ও আপনার পরিবারগুলোর সহায়তায় প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাদেশে আমাদের রয়েছে দারুণ সহযোগিতাপূর্ণ আমেরিকার জনগোষ্ঠী যারা বিগত বছরগুলোতে অনেক চড়াই-উৎরাই পার হয়ে এসেছেন। আসুন আমরা আবার একে অপরের দিকে নজর দিই- আরো শক্তিশালী ও দয়ালু হই।
একান্তভাবে,
আর্ল আর. মিলার
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত