বাংলাদেশের ৪৯তম স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রদূত মিলারের বিশেষ বার্তা

প্রিয় বন্ধুগণ,

আমি আর্ল মিলার, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। আমি বাংলাদেশের জনগণকে দেশের স্বাধীনতার ৪৯তম বার্ষিকীতে অভিবাদন জানাই। যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের পক্ষ থেকে আমি আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি যখন আপনারা ২০২১ সালের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রাক্কালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করেছেন।

বিধ্বংসী এক যুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম নেয়া স্বাধীন দেশ হিসাবে বাংলাদেশ বিগত ৪৯ বছরে ঈর্ষণীয় উন্নয়ন ধারায় অগ্রসর হয়ে এখন বিকাশমান কৃষি, অর্থনৈতিক ও শিল্পোন্নয়নের কেন্দ্রভূমি হয়ে উঠেছে। এই রূপান্তরকালে অন্যতম প্রধান অংশীদার ছিলো যুক্তরাষ্ট্র এবং আমি গর্বিত যে, আমাদের অর্থনীতি আমাদের উভয় দেশের মানুষের সমৃদ্ধি এনেছে। দশ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর আশ্রয়দাতা হিসাবে অব্যাহত উদারতার জন্যও আমি বাংলাদেশের প্রশংসা করি। শীর্ষ আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা হিসাবে এই সংকট মোকাবেলায় আমরা অব্যাহতভাবে আপনাদের পাশে থাকবো।

আমরা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্জনের দিকে তাকিয়ে আছি এবং আগামী বছরগুলোতে আমরা আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশীরা বিশ্বকে সাহস, শৃঙ্খলা ও আত্মত্যাগের মহিমা শিখিয়েছে। এখন পুরো বিশ্ব যখন করোনাভাইরাস, কোভিড-১৯ নামে এক নতুন হুমকির মুখোমুখি, তখন আমাদের সবাইকে এদেশের অনুসরণে সেই একই গুণাবলী নিয়ে এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং নিজেদের সুরক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।

এ বিষয়ে কয়েকটি সহজ ধাপ রয়েছে যেগুলো আমাদের দূতাবাসের কর্মীরাও প্রতিদিন অনুসরণ করছে, যেমন:

  • যে কোন সময় বাইরে থেকে এসে, খাওয়া বা খাবার তৈরির আগে, এবং হাঁচি বা কাশি দেবার পরে’সহ ঘনঘন সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে দু’হাত ধুয়ে নিন;
  • হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় টিস্যু দিয়ে বা কনুইয়ের ভেতরে নাক-মুখ ঢেকে নিন এবং অবিলম্বে সেটা ফেলে দিন।
  • শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখুন এবং উন্মুক্ত পৃষ্ঠতলগুলো স্পর্শ করা থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকুন, কারণ আমরা জানি না কে বা কোন জিনিসটি সংক্রমিত, এবং
  • আপনি বা আপনার পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হলে, বিশেষত আপনি বা আপনার পরিবারের সদস্যদের কারো জ্বর, কাশি বা শ্বাসকষ্ট হলে বাড়িতে থাকুন।
  • আপনার এই ভাইরাস না থাকলেও আপনি এমন কিছু অসুস্থতা ছড়াতে পারেন যা একজন নাজুক ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো দুর্বল করে দিতে পারে এবং তাকে কোভিড-১৯ সংক্রমণে আরো ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে।

৪৯ বছর আগে একবার যেমন হয়েছিলো, তেমনি আবারও বাংলাদেশ এক নতুন পরীক্ষার সম্মুখীন। আসলে আমরা সবাই এই পরীক্ষায় অবতীর্ণ। আমরা সবাই এই যুদ্ধে একসাথে সামিল হয়েছি।

আমরা একসাথে এই সংকট কাটিয়ে উঠবো।

এই সংকট পার করে আবার আমরা পেছন ফিরে তাকাবো- হয়তো এখন থেকে ৪৯ বছর আগে- তখন আমরা বলবো, যখন পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হয়, তখন আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করি।