ঢাকা, বাংলাদেশ
২৪ মার্চ, ২০২১
বক্তৃতার লিখিত বিবরণ:
আসসালামু আলাইকুম
প্রতিমন্ত্রী খালিদ, সচিব আরেফীন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের বন্ধুরা, সম্মানিত অতিথিবৃন্দ।
যুক্তরাষ্ট্ররে জনগণরে পক্ষে আমি আপনাদরে ৫০তম স্বাধীনতা র্বাষকিী ও জাতরি পতিা বঙ্গবন্ধু শখে মুজবিুর রহমানরে জন্ম শতর্বষে বাংলাদশেরে জনগণকে অভনিন্দন জানাই। যুক্তরাষ্ট্র এই আনন্দ উদযাপনে আপনাদরে সাথী।
আমি কােভডি১৯ মহামারি দ্বারা সরাসরি ক্ষতগ্রিস্ত সকল বাংলাদশেীর প্রতি আমার গভীর সমবদেনা জানাই। আমরা যাদরেকে হারযি়ছেি তাদরে কথা স্মরণ করছি ও গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং তাদরে পরবিার ও প্রয়িজনদরে কল্যাণে শুভ কামনা ও একাত্মতা জানাই।
লালবাগ কল্লোয় ঐতহিাসকি হাম্মাম খানা পুনরুদ্ধার, সংরক্ষণ ও নথভিুক্তকরণরে লক্ষ্যে রাষ্ট্রদূতরে তহবলিরে মাধ্যমে সংস্কৃতি সংরক্ষণ প্রকল্প এর উদ্বােধনী অনুষ্ঠানে যােগদান করতে পারা আমার জন্য সম্মানরে।
আমি বাংলাদশেরে সুর্বণ জয়ন্তী উদযাপনে এরচযে়ে ভালাে কছিুর কথা ভাবতে পারছি না।
এই ভূমির সমৃদ্ধ ইতিহাস ও বাংলাদেশী জনগণের অসাধারণ কৃতিত্ব উদযাপন ও সম্মান প্রদর্শনে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এ এক চমৎকার পথ এবং বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে।
আমার প্রথম লালবাগ কেল্লা পরিদর্শনের কথা মনে আছে। এবং জনসাধারণের জন্য চমৎকার এই স্থান এর মহিমা ও সৌন্দর্য্য এবং বাংলাদেশীদের কাছেএর সামাজিক মূল্য আমাকে মুগ্ধ করেছিল। পুরো প্রাঙ্গনজুড়ে সকল বয়সী মানুষ দল বেধে সমবেত হয়েছিল এবং পরিবারগুলো পিকনিক করছিল। কোলাহলমুখর ব্যস্ত পুরনো ঢাকার বুকে এ যেন এক নিরবধি শান্তির উৎস।
এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, এটি বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় আকর্ষণীয় স্থানগুলোর একটি এবং জাতীয় গর্বের স্থান।
মাননীয় মন্ত্রী, আমি সারা বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছি, প্রতিটি বিভাগে অন্তত একবার গিয়েছি, আমার সুযোগ হয়েছে আনন্দের সাথে বহু স্থাপত্য ও প্রাকৃতিক সম্পদ ঘুরে দেখার, আঞ্চলিক গান শোনার এবং স্থানীয় খাবারের স্বাদ গ্রহণের। এমন দৃশ্যাবলীর রূপ, রস, গন্ধ ও স্বাদ বাংলাদেশের সংস্কৃতির সীমাহীন বৈচিত্র্যের প্রতি আমার অনুরাগ তৈরি করেছে।
পঞ্চাশ বছর আগে, সকল প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে, বাংলাদেশ বিংশ শতাব্দির বিশাল ব্যক্তিত্ব শেখ মুজিবুর রহামানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অনন্য ভাষাতাত্ত্বিক পরিচয় এবং সাংস্কৃতিক পরিচয় সংরক্ষণ ও সম্মান রক্ষার্থে স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করেছিল।
যেমনটা যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর টেড কেনেডি ১৯৭২ সালে ঢাকা সফরে এসে বলেছিলেন, “বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রাম আমাদের অতীতের সর্বশ্রেষ্ঠ (গর্বের) স্মৃতিকে জাগিয়ে তোলে।”
বাংলাদেশের অগ্রগতি অসাধারণ এবং এটি উল্লেখ্যযোগ্য যে, গত পাঁচ দশক ধরে আমাদের দুই দেশ আমাদেরঅর্থনীতি ও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে সবকিছুতে একসাথে কাজ করছে যার মধ্যে কোভিড-১৯ ও অন্যান্য রোগ মোকাবেলা করা, শিক্ষার বিস্তারে কাজ করা এবং জাতির অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ করার মতো বিষয়গুলোও রয়েছে।
আমি আত্মবিশ্বাসী যে, হাম্মাম খানার ভিত্তি ও দেয়াল পুনরুদ্ধারের কাজ যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের সম্পর্কের মতোই দৃঢ় ও দীর্ঘস্থায়ী হবে।
সংস্কৃতি সংরক্ষণের জন্য রাষ্ট্রদূতের তহবিল (অ্যাম্বাসেডরস ফান্ড ফর কালচারাল প্রিজারভেশন) বিদেশে সাংস্কৃতিক উদ্যোগকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগগুলোর একটি। সেই ২০০১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের ১৩০টি দেশে ১০০০ এরও বেশি সংরক্ষণ প্রকল্পকে সহায়তা করেছে। গত ২০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের মূল্যবান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য ১১টি এএফসিপি প্রকল্পকে সহায়তা করছে।
এখান থেকে বেশি দূরে নয় স্থাপত্যশৈলীর টেকসই সংরক্ষণ কীভাবে বাণিজ্যিক উন্নয়নের পরিপূরক হতে পারে তা দেখাতে — আমরা পুরনো ঢাকার প্রাচীণতম ঐতিহ্যবাহী এলাকা শাখারি বাজারে ১৭ শতকের একটি ভবন স্থানীয় এনজিও আরবান স্টাডি গ্রুপের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করেছি। রাজশাহীতে বরেন্দ্র গবেষণা যাদুঘরের পাথর ও কাঠের তৈরি প্রাচীণ ভাস্কর্যগুলোর সংগ্রহ জনসাধারণের কাছে প্রদর্শনের জন্য উম্মুক্ত করার কাজটি সহজ করার জন্য আমরা তাদেরকে সহায়তা করেছি। এছাড়াও আমরা বাউল গান ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, জামদানি বুনন পদ্ধতি, এবং ২,০০০ বছরের পুরনো ধাতব ঢালাই করার কৌশল বিষয়ক নথিপত্র তৈরি ও সংরক্ষণে সহায়তা করেছি। প্রতিটি প্রকল্প বাংলাদেশের অনন্য বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির আকর্ষণীয় দিকগুলো তুলে ধরে।
লালবাগ কেল্লা কমপ্লেক্সের হাম্মাম খানার পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাংলাদেশের মানুষের অপূরণীয় জন্মগত সাংস্কৃতিক অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশী জনগণের সাথে আমেরিকার অংশীদারিত্বের আরও একটি সাক্ষ্য।
বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রাক্কালে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও মূল্যবোধের মধ্যে প্রোথিত আমাদের বন্ধুত্বকে আরো জোরদার করার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর নেই। বাংলাদেশের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়তে সহযোগিতা করার জন্য এরচেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না। এবং যে ত্যাগ ও একনিষ্ঠতা নিয়ে স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের উভয় দেশের জনগণ লড়াই করেছে তার উত্তরাধিকার গড়ে তোলার জন্য এরচেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না।
বাংলাদেশের কখনোই আমেরিকার চেয়ে বেশি শক্তিশালী ও স্থায়ী অংশীদার ছিলো না। এবং আমেরিকা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করছে।
অনেক উদাহরণের মধ্যে কিছু হল আমরা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছি বিজ্ঞানে কর্মজীবন গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশী নারী ও মেয়েদের উত্সাহিত করতে; বাংলাদেশী শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়ন করার জন্য বৃত্তি ও এক্সচেঞ্জ কর্মসূচির মাধ্যমে সুযোগ দিতে; সর্বোচ্চ মানের পণ্য ও সেবায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে আমাদের দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণকে সহায়তা করা; কিংবা বাংলাদেশীদের জীবন-রক্ষাকারী স্বাস্থ্য সহায়তায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে।
শুভ জন্মদিন, বাংলাদেশ। আমেরিকা আপনাদের সঙ্গে উদযাপন ও আনন্দ প্রকাশ করছে। আমরা বাংলাদেশী জনগণের অসাধারণ পথচলাকে অভিবাদন জানাই। আমরা বাংলাদেশের সকল নাগরিককে আমাদের পক্ষ থেকে সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা জানাই, যা আপনাদের জাতি গঠনের ত্যাগ ও গণতান্ত্রিক নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
যেমনটা আমার প্রিয় কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা “ক্লোজড পাথ” থেকে ধার করে বলতে চাই প্রতিটি আশাপূর্ণ দিনে হৃদয় থেকে “নব নব সুর বের হয়ে আসতে” দাও, দেখবে আগামী পঞ্চাশ বছর ও তারও পরে “বিষ্ময় নিয়ে একটি নতুন রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ঘটবে”।
অনেক ধন্যবাদ।