এই অনলাইন মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ের প্রায় ৪,০০০ ডাক্তার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি (BSMMU)-এর মেডিসিন বিষয়ের জাতীয় অধ্যাপক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগ্যান’র ইন্টারনাল মেডিসিন রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম এবং সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ ইকুইটি’র বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শিখতে ও পরামর্শ নিতে পারবেন।
ঢাকা, ১৮ অক্টোবর ২০২০– আজ বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার ও বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) ভারপ্রাপ্ত মিশন ডিরেক্টর জন এলেলো একটি ই-মেন্টরিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। কার্যক্রমটি কোভিড-১৯ আক্রান্তের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশী ডাক্তারদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবহারিক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেখা ও তাঁদের সাথে অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হবে।
কোভিড-১৯ ভাইরাসের নজিরবিহীন সংক্রমণ ক্ষমতার কারণে সৃষ্ট মহামারী পরিস্থিতিতে কোভিড-১৯ হাসপাতাল বা অন্যান্য সাধারণ হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের জন্য সশরীর উপস্থিতিতে প্রদত্ত বিদ্যমান সকল ধরনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তের যথাযথ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে এবং ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে অব্যাহতভাবে ডাক্তারদের সক্ষমতা বৃদ্ধি আবশ্যক।
বাংলাদেশের সরকারী ও ব্যক্তিমালিকানাধীন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর ডাক্তারদের কোভিড-১৯ আক্রান্তের ব্যবস্থাপনা বিষয়ে শিক্ষাদানের লক্ষ্যে ইউএসএআইডি তাদের মা ও নবজাতকদের জন্য সেবা জোরদারকরণ প্রকল্প, মামনি’র মাধ্যমে ইউনিভার্সিটি অফ নিউ মেক্সিকো’র আওতাভুক্ত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ই-মেন্টরিং প্রকল্প ECHO (এক্সটেনশন ফর কমিউনিটি হেলথকেয়ার আউটকাম)-এর সাথে অংশীদারিত্ব স্থাপন করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, “বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে কোভিড-১৯ আক্রান্তের ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সক্ষমতা জোরদারকরণে যুক্তরাষ্ট্র এই উদ্ভাবনী ই-মেন্টরিং কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে বলে আমি গর্বিত। আমি বিশ্বাস করি, এর সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের ডাক্তারগণ আরো কার্যকরভাবে কোভিড-১৯ আক্রান্তদের ব্যবস্থাপনা এবং রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবেন।”
এ কার্যক্রমে পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি (BSMMU)। অন্যদিকে পরামর্শগ্রহিতা হাসপাতাল হিসাবে প্রায় ৪০টি সরকারী ও ব্যক্তিমালিকানাধীন হাসপাতালকে নির্বাচন করা হয়েছে। পরামর্শগ্রহিতা হাসপাতালগুলোর প্রায় ১,০০০ ডাক্তার পরামর্শদাতা হাসপাতালের মেডিসিন বিষয়ের জাতীয় অধ্যাপকদের কাছে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের তথ্য ও চিকিৎসা ফলাফল তুলে ধরবে এবং জ্ঞান আদান-প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাঁদের কাছ থেকে শিখবেন। এর বাইরে আরো ৩,০০০ ডাক্তার এসব পারস্পরিক কথোপকথনমূলক শিক্ষা অধিবেশনে সংযুক্ত হওয়ার মাধ্যমে পরোক্ষভাবে উপকৃত হবেন। পরবর্তী পর্যায়ে ই-মেন্টরিং কার্যক্রমের আওতায় ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগ্যান’র ইন্টারনাল মেডিসিন বিষয়ক আবাসিক কার্যক্রম এবং বাংলাদেশের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ ইকুইটি’র অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে শিক্ষা ও জ্ঞান আদান-প্রদানমূলক অধিবেশনের সুযোগ তৈরি হবে। এই অধিবেশনগুলোও বাংলাদেশের সকল ডাক্তারের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলার প্রস্তুতি ও কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে তহবিল সংস্থানে প্রথম পর্যায়ের দাতা সংস্থাগুলোর অন্যতম হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের সবগুলো প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৫৬.৫ মিলিয়ন ডলারের বেশী অর্থ সহায়তা প্রদান করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ইউএসএআইডি থেকে উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা হিসাবে প্রদত্ত প্রায় ৩৮ মিলিয়ন ডলার। এই তহবিল বাংলাদেশের পরীক্ষাগার ও পরীক্ষাগারের কর্মীদের সক্ষমতা জোরদারকরণ, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবা উন্নতকরণ, সংক্রমণের বিস্তার হ্রাস ও নিয়ন্ত্রণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং রোগ সম্পর্কিত গুজব ও ভুল-ধারণা দূরীকরণে সহায়ক হচ্ছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে ৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশী উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করেছে। খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা উন্নতকরণ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও চর্চা উৎসাহিতকরণ, পরিবেশ সুরক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সহিষ্ণুতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নে ২০১৯ সালে ইউএসএআইডি এককভাবে ২০০ মিলিয়ন ডলারের অধিক অর্থ প্রদান করেছে।