ঢাকা, অক্টোবর ২৪, ২০২২ — বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস আমেরিকা-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীর মাইলফলক উদযাপন উপলক্ষ্যে চলমান বছরব্যাপী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এডওয়ার্ড এম. কেনেডি, জুনিয়র এর ঐতিহাসিক বাংলাদেশ সফরের ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়াত সিনেটর এডওয়ার্ড এম. কেনেডির পুত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডির ভাতিজা। এডওয়ার্ড এম. কেনেডি, জুনিয়র পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ২৯ অক্টোবর ২০২২ ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন এবং ৫ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত বাংলাদেশ সফর করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের স্পিকারস প্রোগ্রামের পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মি. এডওয়ার্ড এম. কেনেডি, জুনিয়র বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের একজন অকুন্ঠ ও বলিষ্ঠ সমর্থক তার বাবা সিনেটর এওয়ার্ড এম. কেনেডির স্মরণে বক্তৃতা করবেন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তার বাবার রোপিত বটগাছটি পরিদর্শন করবেন। একজন আইনজীবী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অন্যতম অধিবক্তা বা এডভোকেট হিসেবে তিনি এডওয়ার্ড এম. কেনেডি সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড দ্য আর্টস-এ প্রতিবন্ধীদের অধিকার বিষয়ের উপরও বক্তৃতা দেবেন।
বাংলাদেশে সপ্তাহব্যাপী সফরের এই সময়ে কেনেডি পরিবার বাংলাদেশের সংস্কৃতির বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থান পরিদর্শনের পাশাপাশি এই দেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থায়নে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন-সহ বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করবেন। তার সফরসঙ্গী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন: ড. ক্যাথরিন “কিকি” কেনেডি (স্ত্রী), ড. কিলি কেনেডি (কন্যা), টেডি কেনেডি (পুত্র), গ্রেস কেনেডি অ্যালেন (ভাতিজি) এবং ম্যাক্স অ্যালেন (ভাতিজা)।
এডওয়ার্ড এম. কেনেডি, জুনিয়র সম্পর্কে আরো জানতে অনুগ্রহপূর্বক নিচে দেয়া তার জীবনী পড়ুন :

এডওয়ার্ড এম. কেনেডি, (টেড) জুনিয়র ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার একজন নেতৃস্থানীয় রেগুলেটরি অ্যাটর্নি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি স্বাস্থ্যসেবার ক্লায়েন্টদের ফেডারেল ও স্টেট আইন, নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও ব্যয় করা অর্থ ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে মূল পরিবর্তনগুলোর কারণে সম্ভাব্য ব্যবসায়িক প্রভাবগুলো শনাক্ত করা, বুঝতে পারা ও পরিচালনা করতে সহায়তা করেন। এছাড়াও তিনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও নিবেদিতভাবে কাজ করেন।
টেড স্বাস্থ্যসেবা খাতের অনেক শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব করেন যারা স্বাস্থ্যসেবাদান ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনছে। তার ক্লায়েন্টদের মধ্যে এমন প্রতিষ্ঠানও রয়েছে যারা ‘আমেরিকানস উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিস অ্যাক্ট (এডিএ)’ সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা এবং অনুশীলনগুলোকে আধুনিকীকরণের উপায় খুঁজছে যাতে করে তারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানে আরো বেশি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে পারে, প্রতিবন্ধীদের মার্কেটপ্লেসে যুক্ত হতে পারে এবং প্রতিষ্ঠানকে আরও বৈচিত্র্যময় এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক করা সম্ভব হয়।
টেড একজন ক্যান্সার সারভাইভর এবং শৈশবে হাঁড়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় তার একটি পা কেঁটে ফেলতে হয়েছে। তিনি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুযোগ-সুবিধা প্রসারের আন্দোলনে একজন সদা সক্রিয় নেতা হিসেবে কাজ করছেন। টেড ২০১৭ সালের জুন মাস থেকে সামাজিক সংস্কার ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিবেদিত দেশের অন্যতম প্রধান নাগরিক অধিকার ও পাবলিক পলিসি সংগঠন আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ পিপল উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিজ (এএপিডি)-এর বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একজন দায়িত্বশীল উপদেষ্টা হিসেবে টেড নিয়োগকারীদের সেরা অনুশীলন ও এডিএ-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিষয়াদি সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এএপিডি-র অন্যতম একটি কার্যক্রম হলো ডিজঅ্যাবিলিটি ইকুয়ালিটি ইনডেক্স (ডিইআই), যা এখন আমেরিকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিবন্ধী সমতা ও অন্তর্ভুক্তির অবস্থা পরিমাপের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় বেঞ্চমার্কিং টুল হিসেবে গণ্য করা হয়। ডিইআই ব্যবহার করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান, বাসস্থান নীতি এবং সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল কর্পোরেট অনুশীলনের উপর স্কোর বা নাম্বার দেয়া হয় এবং অগ্রগতি দেখা হয়।
টেড ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কানেকটিকাট জেনারেল অ্যাসেম্বিলিতে স্টেট সিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একজন আইন প্রণেতা হিসেবে তার চার বছরের মেয়াদে তিনি ৭০টিরও বেশি নতুন আইন প্রণয়ন করেছেন এবং সেগুলো সফলভাবে পাস করিয়েছেন। এই সময়ে তিনি সিনেটের পরিবেশ কমিটির চেয়ারম্যান, জনস্বাস্থ্য কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং ডেমোক্রেটিক ককাসের ডেপুটি মেজরিটি লিডার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তার প্রণীত ও তার নেতৃত্বে যে আইনগুলো পাস হয়েছে সেগুলো পরিবেশগত সুরক্ষা, প্রতিবন্ধীদের অধিকার, বাড়িতে ও এলাকা বা সম্প্রদায়ভিত্তিক সেবাযত্ন, স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে ‘ভ্যালু-বেইজড পারচেজিং’, স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের নেটওয়ার্ক সংস্কার ও সেবামূল্যের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, মানসিক স্বাস্থ্য সমতা বাস্তবায়ন ও মাদকাসক্ত ব্যক্তির চিকিত্সা লাভ সংক্রান্ত।
টেড বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা নীতি ও প্রতিবন্ধী আইন নিয়ে বক্তৃতা দেন এবং তিনি ফরেন রিলেশনস কাউন্সিলের একজন সদস্য। তার লেখা দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, ইউএসএ টুডে, নিউজউইক, দ্য বোস্টন গ্লোব, হার্টফোর্ড কোরান্টসহ অন্যান্য অসংখ্য প্রকাশনায় প্রকাশিত হয়েছে।