প্রেস স্টেটমেন্ট
এন্টনি জে. ব্লিঙ্কেন, সেক্রেটারি অফ স্টেট
২২ আগস্ট, ২০২২
পাঁচ বছর আগে, বার্মার সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে একটি নৃশংস অভিযান শুরু করেছিল – গ্রামগুলি ধ্বংস করে, ধর্ষণ, নির্যাতন এবং বৃহৎ আকারের সহিংসতা ঘটিয়েছিল যা হাজার হাজার রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী এবং শিশুকে হত্যা করেছিল। ৭৪০,০০০ এরও বেশি রোহিঙ্গা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এই বছরের মার্চ মাসে, আমি যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে বক্তৃতা করেছিলাম যেটি প্রমান করে যে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বার্মিজ সেনাবাহিনীর নৃশংসতা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং গণহত্যা সংঘটনের পর্যায়ে পড়ে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে, একই সামরিক বাহিনী বার্মার গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতকে নিভিয়ে দেওয়ার নির্মম প্রচেষ্টায় বার্মার জনগণকে দমন, নির্যাতন এবং হত্যা করে যাচ্ছে। গণতন্ত্রপন্থী এবং বিরোধী নেতাদের শাসকগোষ্ঠীর সাম্প্রতিক মৃত্যুদণ্ড বার্মিজ জনগণের জীবনের প্রতি সেনাবাহিনীর চরম অবহেলার সর্বশেষ উদাহরণ মাত্র। এর সহিংসতার বৃদ্ধি ক্রমবর্ধমান মানবিক পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলছে, বিশেষ করে রোহিঙ্গা সহ জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য, যারা দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে রয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা এবং বার্মার সকল জনগণের জন্য ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতার অগ্রগতির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে সংহতি প্রকাশ করছে। আমরা সমর্থন করে যাচ্ছি মিয়ানমারের জন্য স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়াকে, জেনোসাইড কনভেনশনের অধীনে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বার্মার বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলাটিকে, এবং বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন বিশ্বাসযোগ্য আদালতকে যাদের বার্মিজ সামরিক বাহিনীর নৃশংস অপরাধ সংশ্লিষ্ট মামলা বিচারের এখতিয়ার রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য তার ম্যান্ডেটের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সামরিক বাহিনীর কর্মকাণ্ডের জন্য ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতার প্রসারে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পদক্ষেপকে সমর্থন করে। একইভাবে আমরা বার্মার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সুপারিশকে সমর্থন করব।
২০১৭ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার পথ খুঁজে এসেছে এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে যে বর্তমান সামরিক শাসন ক্ষমতায় থাকা পর্যন্ত মাতৃভূমি বার্মায় তাদের বড় আকারের প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। রোহিঙ্গা সংকটের মানবিক প্রতিক্রিয়ার প্রধান একক দাতা হিসেবে আমরা বার্মা, বাংলাদেশ এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য জায়গায় সংকটে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১৭০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা প্রদান করেছি। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকার এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য রোহিঙ্গা-আশ্রয়দানকারী সরকারের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছে। একটি আন্তর্জাতিক, সমন্বিত মানবিক প্রতিক্রিয়ার অপরিহার্য উপাদান হিসাবে, আমরা বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পুনর্বাসন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার জন্য কাজ করছি, যাতে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের জীবন পুনর্গঠন করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের এবং বার্মার জনগণকে তাদের স্বাধীনতা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের সাধনায় ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার অগ্রগতি, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি এবং বার্মার সকল ব্যক্তির মানবাধিকার ও মানবিক মর্যাদা রক্ষা করার মাধ্যমে তার সমর্থন অব্যাহত রাখবে।