কপ২৬ চলাকালীন সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ু সহনশীলতাবিষয়ক প্রকল্প দেখতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও তার সঙ্গে স্থানীয় অধিবাসীদের অভিযোজন সম্পর্কে জানতে কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন’স দ্বীপ সফর করেছেন রাষ্ট্রদূত মিলার।
ঢাকা, নভেম্বর ৯, ২০২১ – স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে যখন কপ২৬ চলমান, তখন রাষ্ট্রদূত মিলার কক্সবাজারে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জলবায়ু সহনশীলতা প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেছেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মূল্যায়ন ও তার সঙ্গে স্থানীয় অধিবাসীদের অভিযোজন প্রচেষ্টা সম্পর্কে জানতে সেন্ট মার্টিন’স দ্বীপ সফরে গিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত মিলার বলেছেন, “জলবায়ু সংকট মোকাবিলার সুনির্দিষ্ট এই দশকের শুরুতে গ্লাসগোর কপ২৬ গুরুত্বপূর্ণ একটি মুহূর্ত।” তিনি আরও বলেন, “জলবায়ু সংকট চলে এসেছে। এই চ্যালেঞ্জ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে দেওয়ার মতো নয়। আমাদেরকে এখনই এর মোকাবিলা করতে হবে।”
দ্বীপটিতে তীব্র উপকূলীয় ভাঙন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, স্থানীয় মৎস্য চাষের ওপর এর প্রভাব, প্রবাল কলোনির ক্ষয়সাধন এবং ম্যানগ্রোভ পুনরুদ্ধার ও উপকূলীয় তটরেখা রক্ষার স্থানীয় প্রচেষ্টা সম্পর্কে আরও জেনেছেন রাষ্ট্রদূত মিলার।
বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বে কক্সবাজার ও টেকনাফ এলাকায় বেশ কিছু জলবায়ু সহনশীলতা প্রকল্প রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। যেমন, এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে স্থানীয় অধিবাসীদের রক্ষায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনকে ১৪০টিরও বেশি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র সংস্কার করে দিয়েছে, যাদের একটি সেন্ট মার্টিন’স দ্বীপে। ২০০১ সাল থেকে, বাংলাদেশে ৭০০ টিরও বেশি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছে ইউএসএআইডি, যা নিরাপদ আশ্রয়স্থল এবং স্কুল উভয় কাজেই ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও, ইউএসএআইডির সহায়তা বন্যা-পূর্বাভাস এবং প্রাথমিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে যাতে স্থানীয় অধিবাসীরা জীবন বাঁচানোর জন্য আশ্রয়স্থলে সরে যেতে পর্যাপ্ত সময় পান।

রাষ্ট্রদূত মিলারের সঙ্গে যোগ দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট এর সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম,বিএন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (আমেরিকা) সৈয়দ শাহ সাদ আন্দালিব, ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুয়ের এবং অস্ট্রেলিয়ান ফার্স্ট সেক্রেটারি – ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন, কেট স্যাংস্টার।
যৌথভাবে বন ও জলাভূমি ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ফরেস্ট সার্ভিস এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করে ইউএসএআইডি, যার মধ্যে টেকনাফ বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্যও রয়েছে। এভাবে গোটা দেশজুড়ে ১৮ লাখ একরের বেশি জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করছে সংস্থাটি। টেকনাফের বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি ও বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রকল্পগুলোকেও সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
সেন্ট মার্টিন’স সফরের আগে ইউএসএআইডির জলবায়ু সহনশীলতাবিষয়ক প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করেন রাষ্ট্রদূত মিলার, যেখানে মাটির লবণাক্ততার সঙ্গে অভিযোজনের জন্য নতুন কৌশল অবলম্বন, কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে জৈব পদ্ধতি ব্যবহার এবং বিদ্যমান প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার পাশাপাশি নতুন বৃক্ষরোপণে সেখানকার কৃষকদের সাহায্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ।