ইউএস চেম্বার অফ কমার্স যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল চালু করেছে

মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল ২০২১

ওয়াশিংটন, ডি.সি. — আজ, ইউএস চেম্বার অফ কমার্স যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল চালু করেছে, যা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বকে আরো শক্তিশালী করতে অ্যাডভোকেসি করা এবং পক্ষগুলোর বাণিজ্যে যুক্ত হওয়ার উপর জোর দেবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনকালে নবগঠিত এই কাউন্সিল উভয় দেশের পারস্পরিকভাবে লাভজনক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে উভয় দেশের সরকারকে সম্পৃক্ত করা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি করার ক্ষেত্রে আমেরিকান ব্যবসায়ীদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।

কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মহামান্য শেখ হাসিনার উদ্বোধনী বক্তব্যের পাশাপাশি বিশেষ বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানী ও পরিবেশ বিষয়ক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা অ্যাম্বাসেডর মার্সিয়া বার্নিকাট, প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইসলাম।

“আমাদের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী অংশীদার হিসেবে সবসময় আমাদের পাশে রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরো সম্প্রসারণের লক্ষ্যে উভয় দেশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নীতি সহায়তা দেয়া জরুরি। আমরা বৈদেশিক বিনিয়োগের সুবিধার্থে আমাদের অবকাঠামোগত, আইনী ও আর্থিক খাত অব্যাহতভাবে উন্নত করে চলেছি,” উল্লেখ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মহামান্য শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দ্রুত সম্প্রসারণশীল আভ্যন্তরীণ বাজার এবং প্রায় ৪০০ কোটি মানুষের বিশাল আঞ্চলিক বাজারের সাথে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সংযোগ বাংলাদেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায় ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্যে পরিণত করেছে। আমি আশা করি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আমাদের দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।”

ইউএস চেম্বার অফ কমার্স দীর্ঘকাল ধরে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ককে সহায়তা করে আসছে। এ প্রসঙ্গে ইউএস চেম্বার অফ কমার্সের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ের প্রধান মাইরন ব্রিলিয়ান্ট বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার এবং গত এক দশক ধরে আমরা এক্ষেত্রে আকর্ষণীয় প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করছি যা থেকে আমাদের মধ্যে এই আস্থা তৈরি হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হবে। আমাদের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ককে আরো গভীর করার প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে ইউএস চেম্বার অফ কমার্সের প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন। আমরা বিশ্বাস করি যে, কাউন্সিল উভয় দেশের ব্যবসায়ী ও সরকারি নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রধান সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে।”

এই কাউন্সিলের নেতৃত্ব দেবেন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি ও ইউএস চেম্বার অফ কমার্সের দক্ষিণ এশিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নিশা বিসওয়াল এবং তার সঙ্গে থাকবেন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের পরিচালক সিদ্ধান্ত মেহরা। “বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মহামান্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাপক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব রয়েছে,” উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অধীনে দক্ষিণ ও মধ্য এশীয় বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অফ স্টেট হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী বিসওয়াল বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আমাদের দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে জোরদার করতে, স্বচ্ছতা বাড়াতে, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বাজার-ভিত্তিক সংস্কারের জন্য কাজ করবে যাতে করে আমরা আগামী দশকগুলোতে বাংলাদেশের জনগণের জন্য অব্যাহত সমৃদ্ধি ও সুযোগ তৈরি নিশ্চিত করতে পারি।”

কাউন্সিল সদ্য গঠিত যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের পরিচালনা পরিষদ দ্বারা পরিচালিত হবে। “ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে বোঝা ও বাংলাদেশের অংশীদার হওয়ার জন্য একটি নিবেদিত (বিশেষায়িত) প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজনীয়তার নিরিখেই যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে,” বলে মন্তব্য করেন শেভরনের বিজনেস ডেভলপমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে আর. প্রাইওর, যিনি সদ্য

গঠিত এই বিজনেস কাউন্সিলের পরিচালনা পরিষদের উদ্বোধনী চেয়ারপারসন (প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন)। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করে জে আর. প্রাইওর এই সংগঠনের ভবিষ্যত কর্মকান্ড সম্পর্কে বলেন, “একটি টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে এর অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করা এবং এর মাধ্যমে একটি ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করা যা বাংলাদেশী নারীদের ক্ষমতায়ন করবে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের বিকাশে সক্ষম করে তুলবে এবং স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান ও জ্বালানীতে উন্নততর প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের কমিউনিটিকে শক্তিশালী করবে।”

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের কর্পোরেট বাণিজ্যের নেতৃবৃন্দের মধ্যে যারা বক্তব্য রাখেন তারা হলেন: উবারের সিইও দারা খোসরোশাহী, মেটলাইফ-এর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সিএফও জন এফ. ম্যাককালিয়ন, ওয়ালমার্ট ইন্টারন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ও সিইও জুডিথ ম্যাককেনা, এক্সিলারেট এনার্জি প্রেসিডেন্ট ও সিইও স্টিভেন কোবস, বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও কামাল কাদির, জিই-এর দক্ষিণ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট মহেশ পালাশিকার, ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম, ভিসা-র গ্লোবাল গভর্নমেন্ট এনগেজমেন্ট সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাম্বাসেডর ডেমিট্রিওস ম্যারান্টিস, মেটলাইফ-এর স্ট্র্যাটিজিক গ্রোথ মার্কেটস—এশিয়ার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এলিনা বিউটারোভা এবং শপআপ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আফিফ জুবায়ের জামান।

কাউন্সিলের কাজে যুক্ত হওয়ার জন্য অনুগ্রহপূর্বক সিদ্ধান্ত মেহরার সাথে এই মেইলে যোগাযোগ করুন: smehra@uschamber.com যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল এবং ইউএস চেম্বার অফ কমার্স সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল হলো ব্যবসা-বাণিজ্যের পক্ষে অ্যাডভোকেসি করার একটি প্ল্যাটফর্ম, যা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ককে জোরদার করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কাউন্সিলের সদস্যদের পক্ষে সংস্থাটি নীতিগত স্বচ্ছতা ও ব্যবসায়িক সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কাউন্সিল বাংলাদেশের নীতি এবং শিল্প-সুনির্দিষ্ট উন্নয়ন বিষয়ে সর্বশেষ আদ্যোপান্ত তথ্য সরবরাহ করবে, যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করবে এবং প্রধান বাণিজ্যিক অগ্রাধিকার বিষয়ে অ্যাডভোকেসি করবে। এছাড়াও কাউন্সিল কৌশলগত পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি বাজারে-প্রবেশ, ব্যবসায় থেকে ব্যবসায় এবং ব্যবসায় থেকে সরকারি সুযোগগুলোতে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল এর পরিচালনা পরিষদে অন্যান্যের মধ্যে নিম্নলিখিত ব্যক্তিবর্গ অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন:

জে আর. প্রাইওর, ভাইস প্রেসিডেন্ট, বিজনেস ডেভেলপমেন্ট, শেভরন এবং উদ্বোধনী চেয়ারপারসন (প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন)

এলিনা বিউটারোভা, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, স্ট্র্যাটিজিক গ্রোথ মার্কেটস—এশিয়া, মেটলাইফ

রাফায়েল ফ্র্যাঙ্কেল, পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর, এশিয়া-প্যাসিফিক ইমার্জিং কান্ট্রিজ, ফেসবুক

স্টিভেন কোবস, প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এক্সিলারেট এনার্জি

অ্যাম্বাসেডর ডেমিট্রিওস ম্যারান্টিস, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, গ্লোবাল গভর্নমেন্ট এনগেজমেন্ট, ভিসা

মহেশ পালাশিকার, প্রেসিডেন্ট, জেনারেল ইলেকট্রিক-দক্ষিণ এশিয়া

কেভিন রোপকে, প্রধান-দক্ষিণ এশিয়া, ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল

ইউএস চেম্বার অফ কমার্স বিশ্বের বৃহত্তম ব্যবসায়িক সংগঠন, যা অর্থনীতির প্রতিটি খাতের সকল আকারের কোম্পানির প্রতিনিধিত্ব করে। এই সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে আমেরিকাব্যাপী ক্ষুদ্র ব্যবসা ও স্থানীয় চেম্বার অফ কমার্স থেকে শুরু করে আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় শিল্প সমিতি ও বৃহত্‌ করপোরেশনগুলো সবই রয়েছে। তারা সকলেই একটি বিষয়কে গুরুত্ব দেয়: তারা ইউএস চেম্বার অফ কমার্সকে তাদের

কণ্ঠস্বর (তাদের হয়ে কথা বলার সংগঠন) হিসেবে গণ্য করে, যা কেবল ওয়াশিংটনে নয়, বরং বিশ্বব্যাপী আইন প্রণয়ন ও ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলোতে তাদের কণ্ঠস্বর (তাদের হয়ে কথা বলে) হিসেবে কাজ করে।

ইউএস চেম্বার অফ কমার্সের আন্তর্জাতিক বিভাগে (ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স ডিভিশন) ৮০ জনের বেশি আঞ্চলিক বাণিজ্য ও নীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমন প্রতিটি আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ে কাজ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার অফ কমার্স ২০টি দ্বিপাক্ষিক ব্যবসায়িক কাউন্সিল, প্রতিরক্ষা, টেকসই উন্নয়ন ও স্বাস্থ্যসেবাসহ অন্যান্য খাতগুলোতে ক্রস-কাটিং (সামগ্রিকভাবে) উদ্যোগ গ্রহণ, আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্সের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ও স্থানীয় অ্যাসোসিয়েশনগুলোর সাথে অংশীদারিত্ব তৈরি করার মাধ্যমে প্রবৃদ্ধিমুখী বাণিজ্য ও বিনিয়োগের লক্ষ্যে কাজ করে।