২০২১-২০২২ হুবার্ট এইচ. হামফ্রে ফেলোশিপ ঘোষণা

২০১৮-২০১৯ হামফ্রে ফেলোগণ গ্লোবাল লিডারশিপ ফোরাম চলাকালে ইউএস ক্যাপিটালের সামনে।

ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স সেকশন আনন্দের সাথে জানাচ্ছে যে, ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের জন্য হুবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রামের বার্ষিক প্রতিযোগিতায় আবেদনপত্র গ্রহণ করা শুরু হয়েছে। অদ্বিতীয় এই ফেলোশিপ এক বছর মেয়াদী এবং সরকারি, বেসরকারি ও এনজিও সংস্থায় কর্মরত পেশাজীবীদের জন্য উম্মুক্ত।

হুবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রাম যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ ফুলব্রাইট কর্মসূচি। এই কর্মসূচির মাধ্যমে কর্মজীবনের মাঝ পর্যায়ে থাকা দৃষ্টান্তমূলক নেতৃত্ব দেয়া তরুণ পেশাজীবীদের এক বছরের ডিগ্রীবিহীন গ্রাজুয়েট-স্তরের অধ্যায়ন, নেতৃত্বের উন্নয়ন ও কাজের সাথে সম্পর্কিত পেশাগত অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য আমেরিকাতে আনা হয়। তারা সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করার মধ্য দিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ পান। হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রামে অংশ নেয়া ভবিষ্যতের নীতি-নির্ধারক ও নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ, সংস্কৃতি ও পেশাদারিত্বের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সাথে পরিচিত হন। প্রোগ্রামটি আমেরিকানদের সাথে বিদেশী পেশাজীবীদের একটি স্থায়ী ও ফলপ্রসূ সম্পর্ক গড়ে তোলার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। হামফ্রে প্রোগ্রামটি প্রয়াত সিনেটর ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হুবার্ট এইচ. হামফ্রের স্মৃতি ও কৃতিত্বের প্রতি সম্মান জানাতে ১৯৭৮ সালে শুরু করা হয়েছে।

এই ফেলোশিপের জন্য পাবলিক সার্ভিস বা জনসেবায় অঙ্গীকারাবদ্ধ সরকারি বা বেসরকারি খাতে কর্মরত প্রার্থীদের প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে বাছাই করা হয়।

নির্বাচিত বিষয়/খাত:

টেকসই উন্নয়ন

ক। কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন
খ। অর্থনৈতিক উন্নয়ন / ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং
গ। প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিবেশ ও জলবায়ু নীতি
ঘ। নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা

গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান তৈরি (গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ)
ক। যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা
খ। আইন ও মানবাধিকার
গ। পাবলিক পলিসি বিশ্লেষণ এবং জন প্রশাসন
ঘ। মানব পাচার নীতি ও প্রতিরোধ
ঙ। প্রযুক্তি নীতি ও ব্যবস্থাপনা

শিক্ষা
ক। শিক্ষা প্রশাসন, পরিকল্পনা ও নীতি
খ। বিদেশী ভাষা হিসাবে ইংরেজি শেখানো

জনস্বাস্থ্য
ক। জনস্বাস্থ্য নীতি ও ব্যবস্থাপনা

খ। ছোঁয়াচে ও সংক্রামক রোগ

হুবার্ট এইচ হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রামে আবেদন করার জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই নিম্নলিখিত মানদণ্ডগুলো পূরণ করতে হবে:

১. বাংলাদেশী নাগরিক এবং আবেদন করা ও আবেদনপত্র বাছাই প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশে থাকতে হবে।

২. দ্বৈত নাগরিক (বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র) হওয়া যাবে না কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়া যাবে না।

৩. আবেদনকারীকে অবশ্যই কর্মজীবনের মাঝ পর্যায়ে থাকা দৃষ্টান্তমূলক নেতৃত্ব দেয়া তরুণ পেশাজীবী হতে হবে, যার পেশাগত জীবনে অগ্রগতির সম্ভাবনা আছে।

৪. সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন এমন কেউ হতে পারবেন না।

৫. আবেদনকারীকে পূর্ণকালীন শিক্ষার্থী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমপক্ষে চার বছরের ডিগ্রি প্রোগ্রাম শেষ করার সনদ থাকতে হবে।

৬. বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি শেষ করার পর সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ন্যূনতম পাঁচ বছরের পূর্ণকালীন কাজ করার পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে (২০২১ সালের আগস্টের আগে) এবং কাজ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের নীতিগত দিকগুলোতে আগ্রহ থাকতে হবে।

৭. ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা না থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কিংবা একাডেমিক গবেষক এই প্রোগ্রামের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না (ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচিত হবে যদি কেউ মাদকের অপব্যবহার বিষয়ক শিক্ষা, প্রতিরোধ ও চিকিত্‌সা নিয়ে কাজ করেন কিংবা বিদেশী ভাষা হিসেবে ইংরেজি শেখান)

৮. ২০২১ সালের আগস্টের আগে সাত বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে এক শিক্ষাবর্ষ বা তার বেশি সময়ের জন্য পড়ালেখা করার অভিজ্ঞতা থাকতে পারবে না।

৯. ২০২১ সালের আগস্টের আগে পাঁচ বছর মধ্যে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কোন অভিজ্ঞতা থাকতে পারবে না।

১০. ইংরেজি লেখা ও কথা বলা, উভয় ক্ষেত্রেই দক্ষ হতে হবে। এবং টোফেল স্কোর কমপক্ষে ৫২৫ (পেপার-বেইজড) কিংবা ৭১ (ইন্টারনেট-বেইজড) হতে হবে। প্রার্থীদের যাদের টোফেল স্কোরের বৈধতার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে তাদরেকে অবশ্যই বাছাই প্রক্রিয়া শেষে টোফেল পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। আমেরিকান সেন্টার কেবলমাত্র নির্বাচিত প্রার্থীদের জন্য টোফেল পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে। অত্যন্ত প্রতিশ্রুতিশীল প্রার্থীরা যদি টোফেলে কম স্কোর পান, সেক্ষেত্রে তাদেরকে লং-টার্ম ইংলিশ (এলটিই) প্রশিক্ষণের জন্য মনোনীত করা হতে পারে।

১১. আবেদনকারীকে অবশ্যই হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রামের জন্য নির্ধারিত প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা, প্রতিশ্রুতি ও দক্ষতা দেখানোর পাশাপাাশি একথাও জানাতে হবে যে, তিনি কীভাবে এই প্রোগ্রাম থেকে উপকৃত হতে পারবেন যা তিনি আগে কখনো হননি এবং হামফ্রে প্রোগ্রামে অংশ নেয়া ছাড়া এমন অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তার নেই।

১২. আবেদনকারীকে অবশ্যই সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে। সফল প্রার্থীদের মেডিকেল পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করা হবে।

১৩. হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশে ফিরে আসতে হবে।

ফেলোশিপ প্রোগ্রামের জন্য একটি অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। যে কারণে আগ্রহী আবেদনকারীকে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আর এজন্য তাকে যে ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে: https://apply.iie.org/huberthhumphrey. হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রাম নিয়ে যারা আরো বিস্তারিত জানতে চান, তারা দেখুন: https://www.humphreyfellowship.org/.

হুবার্ট এইচ. হামফ্রে ফেলোশিপ প্রোগ্রাম এর আবেদনপত্র ব্যবহারের অনুমতি পেতে (অ্যাক্সেস পেতে) একজন আবেদনকারীকে অবশ্যই প্রথমে একটি আইআইই (IIE) অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। আবেদনকারী একবার অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর হামফ্রে ফেলোশিপের আবেদন তৈরির জন্য যতোবার দরকার হবে এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ওয়েবসাইটে লগইন করতে পারবেন। তিনি আবেদনপত্রের যতোটুকু পূরণ করবেন, সেটা সেইভ করে লগ আউট করতে পারবেন। আবার লগ ইন করে বাকি আবেদনপত্র পূরণ করতে পারবেন। তবে একবার আবেদনপত্র জমা দেয়া হয়ে গেলে সেটা আর সম্পাদনা করা যাবে না। যেকারণে আবেদনকারীকে আবেদনপত্র পূরণের সকল নির্দেশনা মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে এবং নির্দেশনা অনুযায়ী সতর্কতার সাথে আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। তথ্য ও রচনামূলক প্রশ্নের দেয়ার সময় শব্দের সীমার দিকে খেয়াল রেখে যতোটা সম্ভব পূর্ণাঙ্গ উত্তর দেয়ার চেষ্টা করতে হবে।

আবেদনপত্রের যাবতীয় কাজ শেষ করার পর এবং আবেদনপত্র জমা দেয়ার আগে আবেদনকারী আরেকবার সবকিছু পড়ে নিশ্চিত হবেন যে, তিনি সঠিকভাবে আবেদনপত্র পূরণ করেছেন, সকল প্রশ্নের উত্তর লিখেছেন এবং যে সকল কাগজপত্র আবেদনের সাথে সংযুক্ত করতে বলা হয়েছে সেগুলো যথাযথভাবে সংযুক্ত করেছেন। একবার আবেদনপত্র জমা দেয়ার পর আবেদনকারী তার জমা দেয়া সব কাগজপত্র অনলাইনে দেখতে পারবেন ঠিকই, কিন্তু তিনি সেগুলো আর সম্পাদনা করতে পারবেন না।

পূর্ণাঙ্গ আবেদনপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৮ জুলাই, ২০২০।

আরও তথ্যের প্রয়োজনে ই-মেইলে যোগাযোগ করুন: মিজ. সৈয়দা কাশফি চৌধুরী, প্রফেশনাল এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম ম্যানেজার; ইমেইল: ChowdhuryKS@state.gov.